রায়গঞ্জ: লকডাউনের মধ্যেও হারিয়ে যাওয়া মাকে ফিরে পেল তাঁর সন্তানরা। গাজোলের বাসিন্দা রেণুকা প্রামাণিক তিনমাস আগে বিহারের পূর্ণিয়ায় তাঁর আত্মীয়ের বাড়ি থেকে ট্রেনে চেপে বাড়ি ফিরছিলেন। আচমকাই ট্রেনে একদল দুষ্কৃতী যাত্রী সেজে মাদক খাইয়ে বেহুঁশ করে দেয় ওই বৃদ্ধাকে। কালিয়াগঞ্জ স্টেশন থেকে ওই বৃদ্ধাকে উদ্ধার করে রেল পুলিশ। পরে কালিয়াগঞ্জ থানার পুলিশের হাতে হস্তান্তর করে রেল পুলিশ কর্তারা। এরপর তাঁকে কালিয়াগঞ্জ স্টেট জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। অবস্থা ক্রমশ আশঙ্কাজনক হওয়ায় রায়গঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয় তাঁকে।
সেখানেই ওই বৃদ্ধাকে সুস্থ করে তোলেন মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক অভিজিৎ সরকার ও পার্থসারথি দাস। বৃদ্ধা সুস্থ হয়ে উঠলেও তাঁর স্মৃতিশক্তি হারিয়ে ফেলেন। নাম, ঠিকানা কিছুই বলতে পারছিলেন না। ফলে দীর্ঘদিন রায়গঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগে চিকিৎসাধীন অবস্থায় থাকেন। ইতিমধ্যেই পরিবারের লোকেরা গাজোল থানায় ছবি সহ মিসিং ডায়েরি করেন। নিখোঁজ ডায়েরির পরেও হদিস মিলছিল না বৃদ্ধার।
একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্ণধার কৌশিক ভট্টাচার্য ওই বৃদ্ধার ছবি বিভিন্ন থানায় পাঠিয়ে খোঁজখবর নেওয়ার চেষ্টা করেন। শনিবার ওই পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে কৌশিকবাবু। রবিবার বিকেলে মেডিকেল কলেজে এসে ওই বৃদ্ধার ছেলেরা মাকে শনাক্ত করার পাশাপাশি পরিচয়পত্র দেখিয়ে বাড়িতে নিয়ে যান। লকডাউনের মধ্যেও গাজোল থেকে পরিবারের লোকেরা ছুটে এসে তাঁদের মাকে ফিরে পেয়ে খুশি।
তবে এই জন্য প্রচুর হ্যাপা পোহাতে হয়েছিল এদিন মেডিকেল কলেজে আসতে। চরম ভোগান্তির মধ্যেও মাকে ফিরে পাওয়ায় সন্তানরা খুশি। ওই বৃদ্ধার ছেলে সুশান্ত প্রামাণিক বলেন, ‘বিহারের পূর্ণিয়া জেলায় মাসির বাড়িতে ঘুরতে গিয়েছিল মা। সেখান থেকে ট্রেনে করে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিলেও মাকে আমরা ফিরে পায়নি। থানায় নিখোঁজের অভিযোগ দায়ের করি। গতকাল একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার মাধ্যমে জানতে পারি মা রায়গঞ্জ মেডিকেল কলেজের মেডিসিন বিভাগে চিকিৎসাধীন রয়েছে। আমরা তিন ভাই এসে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে মায়ের পরিচয়পত্র দেখিয়ে বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছি।’
স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সদস্য কৌশিকবাবু বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরেই নাম পরিচয়হীনভাবে রায়গঞ্জ মেডিকেল কলেজে চিকিৎসাধীন ছিলেন ওই মহিলা। গতকাল পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ হয়। এদিন বিকেলে আসতে বলা হয়েছিল। তাঁরা এলে যাবতীয় নিয়ম মেনে বৃদ্ধাকে পরিবারের হাতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তুলে দেয়।’
রায়গঞ্জ মেডিকেল কলেজের সহকারী অধ্যক্ষ প্রিয়ঙ্কর রায় বলেন, ‘ওই বৃদ্ধা সুস্থ হয়ে উঠলেও মেডিসিন বিভাগের একটি ঘরে ছিলেন। নাম, ঠিকানা ঠিকঠাক বলতে পারছিলেন না। ফলে অসহায় বৃদ্ধাকে আমরা হাসপাতালেই রেখেছিলাম। বিষয়টি পুলিশ প্রশাসনের নজরে আনা হয়েছিল। এদিন বিকেলে পরিবারের লোকেরা এসে ওই বৃদ্ধাকে বাড়িতে নিয়ে যায়।’
৩০০ বোতল কাফ সিরাপ সহ গ্রেপ্তার ২
কিশনগঞ্জ: পরিত্যক্ত একটি পিকআপ ভ্যান থেকে ৩০০ বোতল কাফ সিরাপ বাজেয়াপ্ত করল কিশনগঞ্জ সদর থানার পুলিশ। শহরের মেহেদীপুর মহল্লার এক...
Read more