খড়িবাড়ি: টাকা বরাদ্দ হওয়ার দশ বছর পরেও স্কুলের ভবন তৈরি না করার অভিযোগ উঠেছে খড়িবাড়ি ব্লকের অন্তর্গত বুড়াগঞ্জ গ্রাম পঞ্চায়েতের বক্তরভিটা সংসদ এলাকায়। বুড়াগঞ্জ বক্তরভিটা জুনিয়র হাইস্কুলের ভবন তৈরির জন্য টাকা বরাদ্দ করা হলেও তার নির্মাণ কাজ আজও শুরু হয়নি। ফলে দীর্ঘ দশ বছর ধরে সরস্বতী মেমোরিয়াল প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ধার করা একটি রুমেই চলছে জুনিয়র হাইস্কুলের পঠনপাঠন। স্কুল সূত্রের খবর, জমিজটের জন্যই ভবনের নির্মাণ করা যায়নি। এর ফলে আশেপাশের কয়েক হাজার বাসিন্দাকে খড়িবাড়ি এবং নকশালবাড়ির স্কুলগুলির দিকে ছুটতে হচ্ছে।
এলাকায় বেশিরভাগ সংখ্যালঘু ও চা বাগানের আদিবাসী সম্প্রদায়ের বসবাস। অনেক ছাত্রছাত্রী হাইস্কুলের অভাবে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গন্ডি পেরিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ছুটোছুটি করতে পারেন না। তারা স্কুল ছেড়ে যুক্ত হয়ে পড়েন বিভিন্ন কাজে। স্থানীয় সূত্রের খবর, যেখানে স্কুলটি রয়েছে সেটা কার্শিয়াং ডিভিশনের অন্তর্গত টুকরিয়া ঝাড় বনবিভাগের জায়গা। ফলে স্কুলের কাজ বন দপ্তর থেকে আটকে রাখা হয়েছে। বন দপ্তরকে বলা সত্বেও স্কুলের জন্য তারা এক ফুট জায়গা ছাড়তে রাজি হয়নি বলে অভিযোগ স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের।
প্রসঙ্গত, ২০১২ সালে রাজ্যের শিক্ষা দপ্তর বক্তরভিটা সংসদ এলাকায় জুনিয়র হাইস্কুলটি চালু করেন। তবে ওই স্কুলের নিজস্ব কোনও ভবন ও পরিকাঠামো না থাকায় পাশেই অবস্থিত সরস্বতী মেমোরিয়াল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটি রুমেই স্কুলের পঠনপাঠন চলছিল। সর্বশিক্ষা মিশন থেকে ২০ লক্ষ টাকা সেই সময় বরাদ্দ করা হয়েছিল। সেই টাকা এখনও স্কুলের অ্যাকাউন্টে পড়ে আছে। স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকা সহ স্থানীয় প্রশাসনের এই নিয়ে কোনও হেলদোল নেই বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। অভিযোগ, ভবনের অভাবে অনেকেই পড়া বাদ দিয়ে কাজে যাচ্ছেন। তাদের পক্ষে দূরে পাঠানো সম্ভব নয়। প্রথমদিকে স্কুলটি দুই ভাগে চলত। সকালের দিকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঠনপাঠন চলত এবং বেলা ১১ টা থেকে চলত জুনিয়র হাইস্কুলের পঠনপাঠন। ২০১৮ সালে দুটি স্কুল একই সময়ে চলার ফলে ক্লাসরুমের অভাব দেখা দেয়। যার ফলে অনেক ছাত্রছাত্রী স্কুলে আসা বাদ দিয়ে দেয়।
হাইস্কুলের টিচার ইন চার্জ তুষেশ্বর বৈঠা বলেন, ‘আমি স্কুলের সম্পর্কে কিছু বলতে পারব না। একটা রুম আছে সেখানে আমরা ক্লাস চালাচ্ছি এতে কারো কোনও আপত্তি নেই।‘ খড়িবাড়ি বাতাসি চক্রের স্কুল সাব ইন্সপেক্টর দিলীপ চন্দ্র বর্মন বলেন, ‘আমরা এই বিষয়ে বহুবার জেলা শাসক এবং ডিএফওকে চিঠি দিয়েছি কিন্তু তারা স্কুলকে জমি দেবে না বলেছে। তাই আমরা ভূমি দপ্তরকে বলেছি ওই এলাকায় জমির ডিমার্কেশন করতে।‘ খড়িবাড়ির বিডিও নিরঞ্জন বর্মন বলেন, ‘আমাকে বিষয়টি জানিয়েছে এসআই। খুব শীঘ্রই আমরা স্কুলের জন্য জমির ব্যবস্থা করব।
আরও পড়ুন : কালবৈশাখীর তাণ্ডবে লন্ডভন্ড বিস্তীর্ণ এলাকা, প্রশাসনের কাছে সাহায্যের আর্জি