মিঠুন ভট্টাচার্য, শিলিগুড়ি: জমি দখল কাণ্ডে শিলিগুড়ির (Siliguri) ডাবগ্রাম-২ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় এবার উলটপুরাণ। এতদিন তৃণমূল কংগ্রেসের (TMC) বিরুদ্ধে যাবতীয় জমি দখল কাণ্ডে অভিযোগ ছিল। এবার পালটা ঘাসফুল শিবিরের তরফে গ্রাম পঞ্চায়েতের শাসক বিজেপির (BJP) বিরুদ্ধে জমি দখলের অভিযোগ তোলা হয়েছে। জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের সদস্য মনীষা রায়ের অভিযোগ, ‘এখানে বিজেপি পঞ্চায়েতের শাসন ক্ষমতায় আসার পর থেকেই দিকে দিকে জমি দুর্নীতির (Land Scam) ঘটনা সামনে আসছে। কোনওরকম দুর্নীতি বরদাস্ত করা হবে না। বেশ কয়েকটি জায়গা চিহ্নিত করা হয়েছে। প্রশাসনিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান বিজেপির মিতালি মালাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর বক্তব্য, ‘ওরা বিরোধিতা করার জন্যই বিরোধিতা করছে। আমি অন্তত কোনওদিন জমি নিয়ে বেআইনি কারবারকে সমর্থন করিনি। এসব বিষয়ে কিছু জানিও না। দুর্নীতি রয়েছে মনে হলে প্রশাসনকে বলে ব্যবস্থা নিক।’
গত কয়েকমাস থেকেই এই গ্রাম পঞ্চায়েতের কয়েকজন বিজেপি জনপ্রতিনিধির বিরুদ্ধে জমি কারবারে যুক্ত থাকার অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে। বিষয়টি নিয়ে বিজেপি শিবিরেও অস্বস্তি রয়েছে বলে দলীয় সূত্রে খবর। ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ি ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি দেবাশিস প্রামাণিক সরাসরি উপপ্রধান সুপেন রায়ের বিরুদ্ধে জমি কারবারে যুক্ত থাকার অভিযোগ করেছেন। তৃণমূলের তরফে ঠাকুরনগর এলাকার গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য অভিনাশ রায় সহ আরও কয়েকজনের বিরুদ্ধেও একই অভিযোগ তোলা হয়েছে। অসুস্থ থাকার কারণে শনিবার উপপ্রধানের বক্তব্য মেলেনি। অভিনাশও অভিযোগ মানতে চাননি। ডাবগ্রাম–ফুলবাড়ির বিজেপি বিধায়ক শিখা চট্টোপাধ্যায়ের মন্তব্য, ‘বিজেপি কখনোই এসব কর্মকাণ্ডকে সমর্থন করে না। তবে বিষয়টির খোঁজ নিয়ে দেখব। দোষ প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে এটুকু বলতে পারি এতদিন যেটা দেখে এসেছি যাবতীয় অপকর্মের সঙ্গে তৃণমূলই জড়িত।’
গত কয়েক মাসে গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার ঠাকুরনগর, পাপিয়াপাড়া, আদর্শপল্লি, ফাঁপড়ি সহ বিভিন্ন এলাকায় জমি দখল ও জমি সংক্রান্ত অবৈধ কারাবার হয়েছে বলে স্থানীয়ভাবে অভিযোগ উঠেছে। এর মধ্যে বেশ কিছু জায়গায় স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বের নাম জড়িয়েছে। বিষয়টি লোকসভা ভোটের আগে পদ্ম শিবিরকে অস্বস্তিতে ফেলতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।