কালিয়াগঞ্জে ও রায়গঞ্জ : কোভিড হাসপাতালে ডিউটি নিয়ে বিএমওএইচ-এর সঙ্গে বচসার জেরে গুরুতর অসুস্থ হয়ে মারা গেলেন এক হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক। মৃত চিকিৎসকের নাম নিলয় পাট্টাদার। বাড়ি কালিয়াগঞ্জে। মৃত চিকিৎসক ইটাহারের দুর্লভপুরে চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়োজিত ছিলেন।
মৃত চিকিৎসক পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, গতকাল ইটাহারের বিএমওএইচ নিলয়বাবুকে ডেকে পাঠান। নিলয়বাবু বিএমওএইচ-এর কাছে গেলে তাঁকে কোভিড ১৯ হাসপাতালে ডিউটিতে যেতে বলেন বিএমওএইচ। নিলয়বাবুর শরীর খারাপ থাকায় তিনি ডিউটি যেতে অস্বীকার করেন। এরপরেই দুজনের মধ্যে বচসা শুরু হয়। পরবর্তীতে পুলিশ দিয়ে তাকে জোর করে ডিউটিতে যেতে বাধ্য করান বিএমওএইচ, এমনটাই অভিযোগ মৃত চিকিৎসক পরিবারের। সেখানে তিনি আরও অসুস্থ বোধ করলে তাঁকে ইটাহার স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়।
কালিয়াগঞ্জ থেকে পরিবারের লোকেরা খবর পেয়ে ইটাহার স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ছুটে যান। মৃত চিকিৎসক পরিবারের অভিযোগ, সেখানে তাঁর সুচিকিৎসা না করে ফেলে রাখা হয়েছিল। পরিস্থিতি ক্রমশ খারাপ হতে থাকলে পরিবারের লোকেরা রায়গঞ্জের একটি নার্সিংহোমে নিয়ে আসেন। প্রায় চিকিৎসার পর গভীররাতে মারা যান নিলয়বাবু। ওই নার্সিংহোম সূত্রে জানা গিয়েছে, নিলয়বাবুর হার্ট অ্যাটাক ও ব্রেন হেমারেজ হয়েছিল। মৃতের দাদা মানসকুমার পাট্টাদারের অভিযোগ, ইটাহার স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভাইয়ের চিকিৎসা না করে দু ঘন্টা ফেলে রাখা হয়েছিল। বিএমওএইচ-এর বিরুদ্ধে অভিযোগ জানালো হবে বলে জানান তিনি। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক রবীন্দ্রনাথ প্রধান বলেন, ঘটনার সত্যতা যাচাই করে নিরপেক্ষ তদন্ত করা হবে।
অন্যদিকে রাতে এই মৃত্যু সংবাদ সামনে আসতেই তুমুল আলোড়ন পড়েছে উত্তর দিনাজপুরের প্রশাসনিক মহলে। রাতেই কালিয়াগঞ্জে মৃত চিকিৎসকের বাড়িতে আসেন বিডিও প্রসূনকুমার ধারা, পুরপ্রধান কার্তিক পাল, ওয়ার্ড কাউন্সিলার অমিত দেবগুপ্ত সহ বহু বিশিষ্ট মানুষ। প্রশাসনের সহযোগিতায় রাতেই প্রয়াত চিকিৎসকের মরদেহ কালিয়াগঞ্জের বাড়িতে আনা হয়। বিশিষ্ট হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক নিলয় পাট্টাদার কালিয়াগঞ্জে বেশ পরিচিত ছিলেন। মাঝবয়সী এই চিকিৎসকের এমন অকাল প্রয়াণের খবরে কালিয়াগঞ্জে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।