কলকাতা: খারাপ আবহাওয়া বা এয়ার পকেটে বিমান পড়ে যাওয়া নয়, অন্য একটি বিমান সামনে চলে আসায় পাইলট বিমান দ্রুত প্রায় ৮ হাজার ফুট নীচে নামিয়ে আনেন। বারাণসী থেকে কলকাতা ফেরার পথে বিমান বিভ্রাট নিয়ে এমনই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ তুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
গত শুক্রবার বারাণসী থেকে কলকাতায় ফিরছিলেন মমতা। ফেরার পথে তিনি বিমান বিভ্রাটে পড়েন। সোমবার বিধানসভায় নিজের ঘরে ঢোকার আগে মমতা বলেন, ‘বড় বিমান দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে গিয়েছি। তবে আমার কোমরে আঘাত লেগেছে। সেই ব্যথা এখনও রয়েছে।‘ যদিও মমতার এই অভিযোগ নিয়ে এদিন সন্ধ্যা পর্যন্ত দমদম বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের তরফে কোনও বিবৃতি জারি করা হয়নি। ইতিমধ্যেই নবান্ন এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। কী করে ঘটনা ঘটেছে, তা নিয়ে ডিজিসিএ এবং এয়ারপোর্ট অথরিটি অফ ইন্ডিয়ার কাছে রিপোর্ট চেয়েছে রাজ্য স্বরাষ্ট্র দপ্তর। ডিজিসিএ পৃথকভাবে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
সোমবার থেকে বিধানসভার অধিবেশন শুরু হয়েছে। এদিন বিধানসভা কক্ষে ঢোকার আগে অলিন্দে দাঁড়িয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দিচ্ছিলেন মমতা। সাংবাদিকরা তাঁর বিমান সংক্রান্ত গোলযোগ নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ‘খারাপ আবহাওয়া নয়, অন্য একটি বিমান আমার বিমানের মুখোমুখি চলে এসেছিল। পাইলটের দক্ষতায় রেহাই পেয়েছি। ১০ সেকেন্ডের মধ্যেই পাইলট গোটা বিষয়টি সামলে নিয়েছেন। ৮ হাজার ফুট নীচে নামাতে হয়েছিল বিমানটিকে।’ মুখ্যমন্ত্রীর এই দাবির পরই এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের ভূমিকা নিয়ে নতুন করে বিতর্ক তৈরি হল। কারণ, যেকোনও বিমান নির্দিষ্ট রুটে চলাচল করে থাকে। ওই রুট নিয়ন্ত্রিত করে এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল বা এটিসি।
মুখ্যমন্ত্রী একটি ভাড়া করা বিমানে সেদিন বারাণসী থেকে কলকাতা ফিরছিলেন। মুখ্যমন্ত্রীর বিমানের রুট নির্দিষ্ট থাকাই স্বাভাবিক। সেখানে ওই রুটে অন্য কোনও বিমান চলে আসার কথা নয়। কিন্তু কলকাতা থেকে ৫০ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে বিমানটির অবস্থান থাকার সময় সেটি ঝাঁকুনি দিয়ে হঠাৎ করে নেমে যায়। শনিবারই এই নিয়ে ডিজিসিএ-কে চিঠি দিয়েছেন রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব বিপি গোপালিকা।
মুখ্যমন্ত্রীর বিমান বিভ্রাটের ঘটনায় সোমবার দমদম বিমানবন্দরে বিক্ষোভ দেখায় তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি সমর্থিত কনট্রাক্টর ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন। এর আগেও মুখ্যমন্ত্রীর পাটনা থেকে ফেরার সময় বিমান বিভ্রাট ঘটেছিল। বারবার কেন মুখ্যমন্ত্রীর বিমান বিভ্রাট হচ্ছে, এই প্রশ্ন তুলে তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন বিক্ষোভ দেখায়। এদিন শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা বিমানবন্দরের অধিকর্তা সি পট্টভিকে স্মারকলিপিও দেন।
আরও পড়ুন : বার্ণপুর ইস্কো কারখানায় ছাদ থেকে পড়ে ঠিকাকর্মীর মৃত্যু