উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ বৃহস্পতিবারই ইডি (Enforcement Directorate) গ্রেপ্তার করেছে গোরুপাচার মামলায় অভিযুক্ত অনুব্রত মণ্ডলকে (Anubrata Mondal)। অনুব্রতকে দিল্লি নিয়ে গিয়ে তদন্ত করতে চায় তারা। ইতিমধ্যে বিষয়টি নিয়ে তোড়জোড় শুরু করেছে ইডি। আর তার আগেই আসানসোল জেলে অসুস্থ হয়ে পরলেন অনুব্রত। রবিবার সকালে বুকে ব্যাথার কারণে চিকিৎসার জন্য অনুব্রতকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল আসানসোল জেলা হাসপাতালে। শরীরে তেমন সমস্যা ধরা না পড়ায় ফের কেষ্ট মণ্ডলকে ফিরিয়ে আনা হয়েছে আসানশোল জেলে।
‘বুকে পেন ভাই’, নিজেই একথা জানালেন বীরভূমের দৌরদণ্ডপ্রতাপ নেতা অনুব্রত মণ্ডল। রবিবার ভোর রাত থেকেই তিনি নাকি বুকে ব্যাথা অনুভব করছেন বলে জেল কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন অনুব্রত মণ্ডল। এরপরই তাঁকে জেল থেকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয় আসানসোল জেলা হাসপাতালে। আসানসোল জেলা হাসপাতাল সূত্রে খবর, অনুব্রতের কোনও শারীরিক সমস্যা পাওয়া যায়নি। বুকে ব্যথা হয়েছে বলে নিজেই জানিয়ে ছিলেন। তবে সব কিছুই স্বাভাবিক আছে। হাসপাতালের চিকিৎসক তাঁকে ইসিজি এবং চেস্ট এক্স-রে করার পরামর্শ দিয়েছিলেন। সঙ্গে সঙ্গে অনুব্রতর সবগুলো টেস্ট করানো হয়েছে জেলা হাসপাতালেই। ওই হাসপাতালের এমার্জেন্সি মেডিক্যাল অফিসার কীর্তি নায়েক বলেন, ‘‘উনি জানান, বুকে ব্যথা অনুভব করছেন। তাই ইসিজি করা হয়েছে। চেস্ট এক্স-রে করা হয়েছে। কোনও অসুবিধা দেখতে পাচ্ছি না। তা ছাড়া, রক্তচাপ, রক্তে শর্করার পরিমাণও স্বাভাবিক আছে বলে দেখলাম। ওজনও ঠিক ঠাক আছে।’’
এদিন হাসপাতাল থেকে বেড় হওয়ার পথে সাংবাদিকরা ঘিরে ধরেন অনুব্রতকে। অনুব্রত তাঁদের বলেন, ‘বুকে পেন ভাই’। এদিকে অনুব্রতর অসুস্থতার খবর ছড়িয়ে পড়তেই নানান গুঞ্জন শুরু হয়ে যায় রাজনৈতিক মহলে। বৃহস্পতিবারই আসানসোল জেলে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল ইডির আধিকারিকরা। জিজ্ঞাসাবাদ করার পর অনুব্রত মণ্ডলকে গ্রেপ্তার করে এই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডির আধিকারিকরা। ইডি চায় অনুব্রতকে দিল্লি নিয়ে গিয়ে তদন্ত করতে। সে মতোই কেষ্টকে দিল্লিতে নিয়ে যেতে তোড়জোড় শুরু করেছে ইডি। এর মধ্যেই অসুস্থ হয়ে পড়লেন তৃণমূলের প্রভাবশালী নেতা। বিরোধীদের বক্তব্য, গোরুপাচার মামলায় গ্রেপ্তার হওয়ার আগে বারবার অনুব্রত মণ্ডল অসুস্থ হয়েছেন ইডির হাজিরা এড়াতে। দিল্লিতে যাতে তাঁকে যেতে না হয়, তারজন্যই অসুস্থতার অভিনয় করছেন কেষ্ট। তাঁর এই অপচেষ্টা আর কাজে আসবে না।
ইতিমধ্যে অনুব্রতের কাছ থেকে পাওয়া সমস্ত তথ্যের বিবরণ বয়ান আকারে দিল্লির ইডির আদালতে জমা দেবেন তদন্তকারী আধিকারিকরা। ওই তথ্যের ভিত্তিতে ইডির আইনজীবী দিল্লি আদালতের বিচারকের কাছে অনুব্রতকে সেখানে নিয়ে গিয়ে জেরা করার আবেদন জানাবেন। যদি আদালত মনে করে, তবে ‘প্রোডাকশন ওয়ারেন্ট’ দিতে পারে। না হলে আসানসোল বিশেষ সিবিআই আদালতেই শুনানির নির্দেশ দিতে পারে।