মুরতুজ আলম, চাঁচল: বুধবার চাঁচল বিধানসভার বিজেপির প্রার্থী দীপঙ্কর রাম ভোট প্রচারে যান মকদমপুর জিপির আশ্বিনপুর গ্রামে। সেখানে মুসহর জনজাতির বসবাস। তিনি গ্রামে প্রবেশ করতেই গ্রামের বাসিন্দারা তাঁকে ঘেরাও করে নিজেদের পানীয়জল সমস্যার কথা কষ্টের কথা জানান। একেবারে ঠিক ভোটের আগে পানীয়জল সমস্যার কথা জানিয়ে শাসকদল ও বিরোধীদের ব্যাকফুটে ফেলে দিলেন। মকদমপুর অঞ্চলের আশ্বিনপুর গ্রামের ৫০টিরও বেশি মুসহর পরিবার বসবাস করেন। তাদের দাবি, পানীয় জলের সমস্যা না মিটলে তাঁরা ভোট নাও দিতে পারেন।
বাসিন্দাদের অভিযোগ, এলাকার অন্যত্র পানীয় জল পৌঁছালেও তাদের এলাকায় বারোমাস পানীয়জলের সমস্যা থাকে। পানীয়জলের জন্য কয়েকটা পঞ্চায়েতের হাতকল থাকলেও সেগুলিতে ঠিকমতো জল ওঠে না। আবার কয়েকটা হাতকল বিকল হয়ে পড়ে রয়েছে। মেরামতের হেলদোল নেই কারও। তাই পানীয়জল কিছুটা দূরে আশপাশের গ্রাম থেকে সংগ্রহ করতে হয়। এলাকার বিভিন্ন প্রান্তে বসলেও ওই গ্রামে বসেনি একটাও সাব-মার্সিবল। তাই রীতিমতো ক্ষোভে ফুঁসছে গোটা গ্রামবাসী। এলাকার জনপ্রতিনিধিরা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তাদের পানীয় জলের সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। কিন্তু অভিযোগ, ভোট আসে ভোট যায়। কিন্তু পানীয়জলের সমস্যা মেটেনি। তাই উপায় না দেখে বিজেপি প্রার্থীকে ঘিরে ফেলে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন গ্রামবাসীরা।
গ্রামবাসীদের তীব্র ক্ষোভের মুখে পড়ে বিজেপি প্রার্থী দীপঙ্কর রাম জানান, স্বাধীনতার ৭০ বছর পার হলেও আজও পানীয়জলের সমস্যা বাংলায় তা ভাবতে অবাক লাগে। এটা দুর্ভাগ্যের। তাদের সমস্যার কথা শুনলাম। এখানকার মানুষ খুব গরীব। এরজন্য পুরোপুরি রাজ্য সরকারের ব্যর্থতার দিকেই নিশানা করেছেন তিনি। তিনি জিতলে প্রথমে চাঁচলের সর্বত্রই পরিশ্রুত পানীয়জল পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করবেন বলে সাফ জানান বিজেপি প্রার্থী দীপঙ্কর রাম।
এদিকে পালটা জবাবে মকদমপুর অঞ্চল তৃণমূল কংগ্রেস কমিটির সভাপতি শাহজাহান আলি জানান, তৃণমূল সরকার জল সমস্যা মেটানোর জন্য রাজ্যে ‘জল ধরো জল ভরো’ প্রকল্পের সূচনা করেছেন। তবে মকদমপুর পঞ্চায়েতে কংগ্রেসের বোর্ড রয়েছে। তারজন্য কংগ্রেস পরিচালিত পঞ্চায়েতই দায়ী। তবে বিজেপি প্রার্থী ভোট নেওয়ার জন্য আশ্বিনপুর মুসহর পাড়ায় গিয়েছেন। তিনি ভোটের রাজনীতি করছেন। তিনি এতদিন কোথায় ছিলেন বলে প্রশ্ন তোলেন শাহজাহান আলি।
মকদমপুর পঞ্চায়েত প্রধান সহদেব চন্দ্র মণ্ডল জানান, পঞ্চায়েত এলাকায় কোথাও পানীয়জলের সমস্যা নেই। বিজেপি প্রার্থী উল্টো পালটা বলে ভোটের ফায়দা তোলার চেষ্টা করছেন।