ওডিশা এফসি – ১ (রিদিম)
এটিকে মোহনবাগান – ১ (কাউকো)
ফাতোরদা : তিন নম্বরে উঠে এলেও কঠিন হয়ে গেল এটিকে মোহনবাগানের লিগ শিল্ড জয়।
এখন যা পরিস্থিতি তাতে হায়দরাবাদ (৩৫, ১৮ ম্যাচ) এবং জামশেদপুর (৩১, ১৬ ম্যাচ) পয়েন্ট নষ্ট না করলে এবং নিজেরা পুরো পয়েন্ট না পেলে এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলার আশা ত্যাগ করতে হবে হুয়ান ফেরান্দোর দলকে। ওডিশা এফসির মতো দুর্বল দলের বিরুদ্ধে ড্র কিন্তু বুঝিয়ে দিচ্ছে চোট আঘাত এবং মাঝের সময়ে করোনা কতটা ক্ষতি করে দিয়ে গিয়েছে দলটার। ৫৪ মিনিটে নামা রয় কৃষ্ণার মতো স্ট্রাইকারেরও কিছু করতে না পেরে হতাশা থেকে দ্বিতীয় হলুদ ও লাল কার্ড দেখাই এর বড় উদাহরন।
তবু এত সমস্যার মধ্যেও প্রায় প্রতি ম্যাচেই যে চারিত্রিক দৃঢ়তা দেখাচ্ছেন মেরিনার্সরা, সেটার প্রশংসা হতেই পারত, ম্যাচটা ড্র না হলে। গোল খেয়ে স্নায়ু যুদ্ধে জিতে যাওয়া বড়ো কম কথা নয়। আর এটা পারছেন বলেই গোলশোধ করতে মাত্র তিন মিনিট নিলেন জনি কাউকোরা। বক্সের মধ্যে বল অনুসরন করতে গিয়ে ইচ্ছাকৃতভাবে না হলেও হুগো বৌমাসকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেন সাহিল পানওয়ার। পেনাল্টি দিতে দেরি করেননি রেফারি। গোলরক্ষক কমলজিৎ সিংকে নড়তে না দিয়ে ডানপায়ের জোরালো শটে ওডিশার জাল কাঁপিয়ে দেন কাউকো।
তবে সমস্যা হল, কিছুতেই গোল খাওয়া আটকানো যাচ্ছে না সবুজ মেরুন ডিফেন্সের। গোল না খেলে যেন দলটা জাগছেই না। মাত্র ৫ মিনিটে গোল ওডিশার। জেরি মিঙথাঙ্গার নীচু ক্রশ থেকে রিদিম তালাঙ গোলটা করার সুযোগ পেলেন গোটা ডিফেন্সটা এক লাইনে দাঁড়িয়ে থাকায়। এদিন পেনাল্টি আটকানোই শুধু নয়, অন্যদিনের থেকে অনেকবেশি আত্মবিশ্বাস নিয়ে বরং খেলতে দেখা গেল অমরিন্দারকে। ২৫ মিনিটে ওডিশা পেনাল্টি থেকে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছিল। কিন্তু সেই সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি জাভি হার্নান্ডেজ।
আরিদাই কাব্রেরাকে বক্সের ঠিক বাইরে তিরি প্রথমে বলে ট্যাকল করেন বলেই মনে হয়েছে। আরিদাই ডাইভ দেন বক্সের মধ্যে। রেফারির পেনাল্টির সিদ্ধান্তে স্বাভাবিকভাবেই অসন্তোষ ছিল এটিকে মোহনবাগানের। জাভির দূর্বল শট অমরিন্দার সিং আটকে দেওয়ায় যেন পোয়েটিক জাস্টিস হল। বরং ৩৬ মিনিটে হওয়া একটা কর্ণারের সময়ে ভিক্টর রোডাসকে অবৈধভাবে আটকে রেখেছিলেন তিরি। যা পেনাল্টি দিলে বলার কিছু থাকত না।
ঠিক তার আগেই আরিদাই আবারও নিশ্চিত সুযোগ নষ্ট করেন অমরিন্দারকে কাটিয়ে গোলে বল রাখতে না পারায়। তবে ৮৯ মিনিটে দিনের সেরা সুযোগটা ছিল লিরিডন ক্রাসনিকির। ক্রসপিস প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়ায়। চোট আঘাত সমস্যা এই মরশুমে আর পিছু ছাড়ছে না এটিকে মোহনবাগানের। কৃষ্ণা যখন পুরোপুরি ফিট হয়ে উঠছেন তখন সম্ভবত টুর্নামেন্ট থেকেই ছিটকে গেলেন ডেভিড উইলিয়ামস। ম্যাচের মাঝেই ফের হাঁটুর চোট ফের মাথা চাড়া দেওয়ায় বিরতিতে বসে যেতে হয় সন্দেশ ঝিঙ্ঘানকেও।
তবে হল কি মনবীর সিং-লিস্টন কোলাসো জুটির? বিচ্ছিন্নভাবে জ্বলে ওঠার চেষ্টা করলেও প্রতিপক্ষের উপর বুলডোজার চালানোর সেই দুই তরুনকে যেন খুঁজে পাওয়া গেল না আগের ম্যাচের মতোই। আর তাতেই যেন অনেকটাই নিশ্চিন্তে খেলে গেল ওডিশা ডিফেন্স। ১৭ ম্যাচে ৩১ পয়েন্ট নিয়ে টানা ১৩ ম্যাচ অপরাজিত থাকা এটিকে মোহনবাগানকে এবার শেষ তিন ম্যাচ জিতলেও তাকিয়ে থাকতে হবে বাকিদের দিকে।