খোকন সাহা, বাগডোগরা : যেকোনো সময় হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়তে পারে বাগডোগরা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি। এতটাই বেহাল হয়ে রয়েছে স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি। অভিযোগ, বহু প্রাচীন ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্র নিয়ে কোনোরকম হেলদোল নেই স্বাস্থ্য বিভাগের।
বহু বছরের পুরোনো টিনের চালাঘরেই চলছে ফার্মাসি, স্টোর রুম, এইচআইভি কাউন্সেলিং সেন্টার, আইসিটিসি ল্যাব। টিনের ঘরের কাঠের কাঠামো ভেঙে গিয়েছে। সিলিং ভেঙে ঝুলে রয়েছে। দরজা, জানালার অবস্থা জরাজীর্ণ। সামান্য বৃষ্টি হলেই জল পড়ে। রীতিমতো আতঙ্কের মধ্যে থাকতে হচ্ছে স্বাস্থ্যকর্মী, নার্সদের। বাগডোগরা স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মেডিকেল অফিসার ইনচার্জ ডাঃ দীপক সাধু জানান, নতুন বিল্ডিং তৈরির প্রস্তাব কলকাতা স্বাস্থ্য ভবনে পাঠানো হয়েছে। যদিও বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে, দীর্ঘদিন ধরে বেহাল অবস্থায় থাকা ঘরের মেরামত করতে কেন এত দেরি হচ্ছে?
বাগডোগরা স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কর্মী প্রবীর সিকদার বলেন, আমরা আতঙ্কের মধ্যে থাকি সর্বক্ষণ। কারণ যেকোনো সময় গোটা ঘরটাই ভেঙে পড়তে পারে। ভেঙে পড়লে আমরা শুধু নই, রোগীরা জখম হবেন। স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ফার্মাসিস্ট বিকাশ দত্ত বলেন, এখানকার স্টোর, ফার্মাসি সহ পুরো ঘরটাই বিপজ্জনক হয়ে রয়েছে। আমরা চাই অবিলম্বে ঘর তৈরি করা হোক, নাহলে যেকোনো সময় ভেঙে পড়বে। একই পরিস্থিতি হোমিয়োপ্যাথি বিভাগের। সেখানকার ঘরটির অবস্থাও বেহাল হয়ে রয়েছে। ছোটো একফালি ঘরে ওষুধ রাখা, রোগী দেখা সবকিছুই চলছে। স্যাঁতসেঁতে ঘরে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে রোগী দেখতে হয়। হোমিয়োপ্যাথি বিভাগের ডাঃ বিমলকুমার বর্মন বলেন, এই পরিস্থিতি সম্পর্কে স্বাস্থ্য বিভাগ অবগত আছে। অনেকেই এসে পরিস্থিতি দেখে গিয়েছেন, আশ্বাস দিয়ে গিয়েছেন নতুন ওপিডি হবে। তবে কবে হবে জানা নেই।
শুধু স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ঘর নয়, স্বাস্থ্যকর্মীদের আবাসনের অবস্থা আরও খারাপ। স্বাস্থ্যকেন্দ্র চত্বরে রয়েছে ১০টি আবাসন। এর একটিতেও থাকার মতো অবস্থা নেই। এগুলিও বহু বছর আগে তৈরি করা হয়েছিল। রক্ষণাবেক্ষণ না করায় ঘরের চাল ভেঙে পড়ছে, দরজা-জানালা ভেঙে গিয়েছে। মেরামত না করায় নিজেরাই চালের উপরে প্লাস্টিকের শিট দিয়ে জোড়াতালি দিয়ে থাকছেন। এ নিয়ে স্বাস্থ্যকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়েছে। নার্স প্রতিমা শ্রেষ্ঠা, স্বাস্থ্যকর্মী পুষ্পা সাহা জানান, আবাসনের অবস্থা খুব খারাপ। বৃষ্টি হলেই ঘরে জল পড়ে। দরজা, জানলা সব ভাঙা। নিরাপত্তা বলে কিছু নেই। বহুদিন হয়ে গেল মেরামত হয়নি। বলেও কোনো লাভ হয় না।