বালুরঘাট: ভারত ছাড়ো আন্দোলনে শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে বালুরঘাট দিবস পালন করা হল। বৃহস্পতিবার বালুরঘাটের ডাঙ্গিতে ৪২ আন্দোলনের শহিদদের স্মৃতিসৌধে ফুলের মালা দিয়ে ও জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে দিনটি যথাযথ মর্যাদায় উদযাপন করা হয়। জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহম্মদ নাসিম।
ডাঙ্গির পাশাপাশি এদিন বালুরঘাট প্রশাসনিক ভবন চত্বরে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে ভারত ছাড়ো আন্দোলনের স্মৃতি সৌধতে শ্রদ্ধা জানান জেলা শাসক বিজিন কৃষ্ণা। এছাড়াও হাজির ছিলেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি চিন্তামণি বিহা, অতিরিক্ত জেলা শাসক বিবেক কুমার, বালুরঘাট পুরসভার চেয়ারম্যান অশোক কুমার মিত্র, জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক রাজেশ কুমার মণ্ডল, ১৪ সেপ্টেম্বর বালুরঘাট দিবস উদযাপন কমিটির সভাপতি পীযুষ দেব, বিপ্লব খাঁ সহ অন্যান্য বিশিষ্টজনরা।
প্রসঙ্গত, ভারত ছাড়ো আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন বালুরঘাটের স্বাধীনতা সংগ্রামীরা। ১৯৪২ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর বালুরঘাটের ট্রেজারি বিল্ডিং থেকে ব্রিটিশদের ইউনিয়ন জ্যাক পতাকা নামিয়ে ভারতের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন তাঁরা। সেইসময় প্রায় দুই দিন স্বাধীনতার স্বাদ পান বালুরঘাটবাসী। ১৯৪২ সালে ভারত ছাড়ো আন্দোলনের ঢেউ আছড়ে পড়ে বালুরঘাটেও। দেশকে পরাধীনতার বন্ধন থেকে মুক্ত করতে ভারতবর্ষে যতগুলি আন্দোলন সংগঠিত হয়েছিল তার মধ্যে অন্যতম ছিল ৪২ সালের এই ভারত ছাড়ো আন্দোলন।
বালুরঘাটের বাসিন্দা স্বাধীনতা সংগ্রামী সরোজ রঞ্জন চট্টোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে বালুরঘাট শহরের উপকণ্ঠে ডাঙ্গি গ্রামে হাজার হাজার মানুষ জমায়েত হন আগের দিন রাতে। ১৪ সেপ্টেম্বর তাঁরা বালুরঘাটে এসে শহর অবরুদ্ধ করে দেন। আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় আদালত, পোস্ট অফিস, প্রশাসনিক ভবনে। লুঠপাঠ চলে সমস্ত সরকারি অফিসে। তৎকালীন প্রশাসনিক ভবন বর্তমানে ট্রেজারি বিল্ডিং থেকে ব্রিটিশ ইউনিয়ন জ্যাক পতাকা নামিয়ে ভারতের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। ভয়ে পালিয়ে যান ব্রিটিশ কর্তারা। দুই দিন স্বাধীন থাকার পর ফের ব্রিটিশ সেনা ফিরে এসে পুনরায় দখল নেয় বালুরঘাটের। চলে ধরপাকড়, অত্যাচার। সেদিনটি স্মরণ করে আজও ১৪ সেপ্টেম্বর সমমর্যাদায় পালিত হয় বালুরঘাট দিবস। জেলা প্রশাসনের তরফে এদিনটি সম মর্যাদায় পালন করা হয় প্রতি বছর।