ফালাকাটা: রবিবার সকাল থেকে কলাগাছ খুঁজতে খুঁজতে নাকাল হতে হল বনকর্মীদের। পরে বংশীধরপুরের বাসিন্দা মহাবীর ওরাওঁ হাতির খাবার দিতে সম্মত হন। শেষে প্রায় ২০টি কলাগাছ কেটে হাতির (Elephants) খাবার জোগার করল বনকর্মীরা। তবে এদিনই প্রথম নয়। জলদাপাড়ার একাংশ বনকর্মীর দাবি, এখন রোজ আশপাশের গ্রামে কলাগাছ খুঁজতে হয়। কোনও দিন অনেক দূরের গ্রামে গিয়েও হাতির খাবার সংগ্রহ করতে হয়। কারণ, আগের মতো এখন যেখানে সেখানে কলাগাছ মেলে না।
ফালাকাটার বংশীধরপুর গ্রামের পাশেই জলদাপাড়ার ব্যাংডাকি বিট। এই বিটে তিনটি পোষা হাতি রয়েছে। জঙ্গল ও লোকালয়ে নজরদারি চালাতেই পোষা হাতির যথেষ্ট ভূমিকা। কিন্তু পোষা হাতির জন্য খাদ্যের প্রয়োজন। এক্ষেত্রে কলাগাছ হাতির প্রিয় খাদ্য। আগে জলদাপাড়া বনাঞ্চল ও আশপাশ এলাকায় কলাগাছের অভাব ছিল না। কিন্তু এখন বনাঞ্চলের সীমানা ঘেঁষেও চাষাবাদ হয়। আর এখন চলছে শুখা মরশুম। বনকর্মীদের বক্তব্য, এই শুখা মরশুমে বনাঞ্চলেও বুনোদের কিছুটা খাদ্যের সংকট হয়। তাই পোষা হাতির খাবার খুঁজতে গ্রামে গ্রামে যেতে হয়। কিন্তু বছর দশেক আগে গ্রামে গ্রামে কলাগাছ পর্যাপ্ত পাওয়া যেত। এখন কলাগাছের কিছুটা সংকট তৈরি হয়েছে।
এদিন বংশীধরপুর গ্রামে কলাগাছ নিতে আসা বনকর্মীরা বলেন, ‘কালীপুর, শিশাগোড়, শালকুমার মোড়, ভান্ডানি, কলাবাড়িয়া, মেজবিল সহ দূরের গ্রামগুলিতেও যেতে হয়। কিন্তু আগে বংশীধরপুর গ্রামেই পর্যাপ্ত কলাগাছ পাওয়া যেত। এদিন ছোট গাড়ি নিয়ে বেশকিছু এলাকা ঘোরার পর শেষে বংশীধরপুর গ্রামেই কলাগাছের সন্ধান মেলে। আসলে এখনও যাদের কলাগাছ আছে, তাঁরা মহাকাল বাবার খাবারের জন্য চাইলে অস্বীকার করতে পারেন না। এমন বিশ্বাস থেকেই স্থানীয় মহাবীর ওরাওঁ এদিন কুড়িটি কলাগাছ কাটার অনুমতি দেন।‘ মহাবীর ওরাওঁ বলেন, ‘রাস্তার ধারে আমার জমিতে এখনও কিছু কলাগাছ আছে। তাই মহাকাল বাবার খাবারের কথা বলায় বনকর্মীদের কলাগাছ কাটতে বাধা দিইনি।’ মাহুত বিমল কার্জি বলেন, ‘এই কুড়িটি কলাগাছে দু-তিন দিনের খাবার হয়ে গেল। এভাবেই সপ্তাহে দু-তিন দিন কলাগাছ খুঁজতে বের হতে হয়।’
আরও পড়ুন : চা বাগানে হাতির হানা, আতঙ্কে বাসিন্দারা