মহুয়া চট্টোপাধ্যায়, শিলিগুড়ি: প্রাচীন বৈদ্যরা তো বটেই বর্তমান আয়ুর্বেদিকরাও আমাদের বিভিন্ন শারীরিক সমস্যার সমাধানে অর্জুন গাছের কাঁচা ও শুকনো ছালের প্রতি আস্থাবদ্ধ। তবে যেকোনো অসুখেই কিন্তু বাজার থেকে কিনে নিয়ে এসে তা ব্যবহার করা যায়না। আজ জানব কোন কোন রোগে অর্জুন ছাল ব্যবহার যোগ্য।
১) যাদের মাঝেমাঝেই বুক ধড়ফড় করে কিন্তু পরীক্ষায় দেখা গেছে হাই ব্লাডপ্রেশার নেই তারা অর্জুনের ছাল কাঁচা হলে ১০-১২ গ্রাম আর শুকনো হলে ৫-৬ গ্রাম নিয়ে একটু থেঁতো করে ১২৫ গ্রাম দুধ আর ৫০০ গ্রাম জল দিয়ে একসঙ্গে সেদ্ধ করে ২৫০ গ্রাম মতো হলে নামিয়ে ছেঁকে নিন, বিকেলের দিকে খাবেন ,এতে কমে যাবে এই সমস্যাটা।
২) লো প্রেশারে যারা ভুগছেন তারাও এই একই পদ্ধতিতে সমস্যা কমাতে পারেন।
৩) সাদাস্রাবে ভোগা মেয়ে বা মহিলারা অর্জুন ছাল ৪-৫ গ্রাম নিয়ে রাত্রে ভিজিয়ে রেখে সকালে ঐ জল ছেঁকে আধ চামচ কাঁচা হলুদের রস মিশিয়ে খেলে খুব তাড়াতাড়ি উপকার পাবেন।
৪) সময়ে অসময়ে যাদের কাশি ওঠে, কমতেই চায়না তাঁদের জন্য অর্জুন ছাল নিন বাসক পাতার রসে তাকে ভিজিয়ে নিয়ে শুকোতে দিন রোদে, এইভাবে ৭ বার বাসক পাতার রসে ভিজিয়ে রোদে শুকোতে হবে তারপর গুঁড়ো করে কৌটোতে তুলে রাখতে হবে। যখনই কাশি উঠবে মধু বা মিছরির গুঁড়ো সমেত চেটে খেতে হবে, ধীরেধীরে কমে যাবে।
৫) কোষ্ঠকাঠিন্যে যারা কষ্ট পান তারা দুধে সেদ্ধ করে নিন অর্জুন ছালকে , উষ্ণ গরম থাকতে থাকতে খেয়ে নিতে হবে।
৬) মেচেতায় আমাদের রূপ খুব নষ্ট হয়, তাই মেচেতা হলেই অর্জুন ছালের মিহি গুঁড়ো করে নিন, তারপর স্নানের আগে মধু দিয়ে একটা ফেসপ্যাক বানিয়ে নিন, মুখে লাগিয়ে অপেক্ষা করুন ১৫ মিনিট , আধ শুকনো হলে গোলাপ জল বা দুধ দিয়ে ঘষে তুলে নিন। স্নান শেষে অয়েলবেস ময়শ্চারাইজার লাগান , দাগ চলে যাবে।
৭) হাঁপানিতে কষ্ট পান যারা অর্জুনের শুকনো ফলকে টুকরো করে নিয়ে একটা পাত্রে তামাকের মত ধোঁয়ার ব্যবস্থা করুন মুখ দিয়ে সেই ধোঁয়া টানুন যতবার সম্ভব, এতে খুব তাড়াতাড়ি হাঁপের টান কমে যায়।
৮) হার্নিয়ায় যদি অপারেশন করাতেই হয় তাহলে শুরুতেই অর্জুনের ফল কোমরে বেঁধে রেখে দেখুন না, কমে যাবার সম্ভাবনা প্রবল, নাহলে হাতের পাঁচ অপারেশন তো রইলোই।
বিঃদ্রঃ- অর্জুন গাছের ছাল যেকোনও আয়ুর্বেদিক দোকানে পেয়ে যাবেন।