মোস্তাক মোরশেদ হোসেন, বীরপাড়া: ট্রেনের ধাক্কায় গুরুতর জখম বছর পঞ্চাশের এক প্রৌঢ় গত ২৩ জানুয়ারি থেকে বীরপাড়া হাসপাতালে (Birpara Hospital) ভর্তি। লেখাপড়া না জানায় লিখেও নিজের নাম-ঠিকানা জানাতে পারছেন না তিনি। মূক ওই ভদ্রলোকের এখনও কোনও আত্মীয়পরিজনের খোঁজ মেলেনি। ফলে, হাসপাতালের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের মধ্যে তাঁকে শুশ্রূষা দেওয়া নিয়ে দেখা দেয় নানা সমস্যা। স্বাস্থ্যকর্মীরা প্রশ্ন তোলেন এই রোগীকে খাওয়াবে কে? শৌচকর্মই-বা কে করাবেন? শেষপর্যন্ত শুশ্রূষার পাশাপাশি তাঁকে প্রাতরাশ, মধ্যাহ্নভোজ, নৈশাহার সবই করাচ্ছেন স্বাস্থ্যকর্মীরাই। পরিবারের সদস্যদের মতোই পরম মমতায় খাইয়েও দিচ্ছেন তাঁকে। মঙ্গলবার এমনই ছবি দেখা গেল বীরপাড়া (Birpara) স্টেট জেনারেল হাসপাতালের পুরুষ বিভাগে। বিষয়টি নজরে পড়তে অনেকেই হাসপাতালের কর্মীদের সহৃদয়তার প্রশংসায় পঞ্চমুখ।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, গত ২৩ জানুয়ারি বীরপাড়ায় ট্রেনের (Train) ধাক্কায় জখম হন তিনি। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে বীরপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। হাসপাতাল সুপার কৌশিক গড়াই বলেন, ‘স্বাস্থ্যকর্মীরা সাধ্যমতো ওই রোগীর শুশ্রূষা করছেন। রেলমন্ত্রক সহযোগিতা করলে তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য অন্যত্র পাঠানো যেত।’ ওই প্রৌঢ়ের দুই পা-ই ভেঙে গিয়েছে। তিনি সম্পূর্ণ চলাচলে অক্ষম হয়ে পড়েছেন। স্বাস্থ্যকর্মী ফটিক দাসের কথায়, ‘নিজের হাতে খেতেও পারছেন না ওই বৃদ্ধ। তাই, আমরা তাঁকে খাইয়ে দিচ্ছি।’
এ ব্যাপারে আরপিএফের হাসিমারার (Hasimara) ইনস্পেকটর সুদীপ্তা দাশগুপ্ত বলেন, ‘অসাধ্য সাধন করছেন বীরপাড়া হাসপাতালের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা। ওই ব্যক্তির বাঁচার সম্ভাবনা প্রায় ছিলই না। তাঁর মাথায় গুরুতর আঘাত লেগেছিল। চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের চেষ্টায় তাঁর জীবন বেঁচেছে। তাঁরা অত্যন্ত মানবিকতার সঙ্গে তাঁর সেবা-শুশ্রূষা করছেন। আমাদের ক্ষমতাও সীমিত। ওই ব্যক্তি ট্রেনের যাত্রী নন। তিনি নিরাপত্তার অভাবেরও শিকারও নন। তাই, মন্ত্রক থেকে তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য কোথাও পাঠানো সম্ভব নয়।’