মোথাবাড়ি: ভোটের মুখে উত্তপ্ত হয়ে উঠল মোথাবাড়ির রাজনৈতিক মহল। এক বিজেপি কর্মীকে গুলি করে খুনের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। আক্রান্ত বিজেপি কর্মীর নাম উদয় মণ্ডল। তাঁর পায়ে গুলি লেগেছে। বর্তমানে তিনি মালদা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল। ঘটনাকে ঘিরে চরম উত্তেজনা ছড়িয়েছে জেলাজুড়ে।
কালিয়াচক ২ নম্বর ব্লকের মোথাবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের শ্রীপুর মদনপুর কলোনির বাসিন্দা উদয় মণ্ডল। দীর্ঘদিন ধরে উদয়ের পরিবার বিজেপির সঙ্গে জড়িত। উদয়ের ভাইয়ের স্ত্রী মাধবী মণ্ডল মোথাবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের বিজেপির একমাত্র সদস্য। জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার দুপুর ২টা নাগাদ বাড়ির পাশে একটি জমিতে কাজ করছিলেন উদয়। সেই সময় স্থানীয় ছবিলাল মণ্ডল দলবল নিয়ে এসে উদয়কে লক্ষ্য করে গুলি চালিয়ে পালিয়ে যায়। ঘটনাটি জানতে পেরেই স্থানীয় বাসিন্দারা এসে উদয়কে উদ্ধার করে মালদা মেডিকেলে ভর্তি করান।
উদয়ের দাদা সিপেন মণ্ডল বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে আমার পরিবার বিজেপি করে। এর আগেও ছবিলাল মণ্ডল ও তার দলবল আমার ভাইকে অপহরণ করেছিল। আমার ভাইয়ের একটাই অপরাধ যে বিজেপি করে। যে গুলি চালিয়েছে তাকে আমরা চিনি।’ অভিযুক্ত ছবিলাল মণ্ডল তৃণমূল কর্মী বলে দাবি করেন সিপেন।
যদিও সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মোথাবাড়ি বিধানসভার তৃণমূল প্রার্থী সাবিনা ইয়াসমিন। এই ঘটনার পিছনে কোনও রাজনীতি নেই বলে দাবি করেন তিনি। বলেন, ‘ঘটনাটি দুঃখজনক। তবে ঘটনার পিছনে কোনও রাজনীতি নেই। আক্রান্ত ব্যক্তি বিজেপির কর্মী হলেও ঘটনাটি সম্পূর্ণ তাঁদের পারিবারিক বিবাদের ফল। তবে যে বা যারা গুলি করেছে, তাদের উপযুক্ত শাস্তির দাবি জানিয়েছি পুলিশকে।’ এই ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে বিজেপি অযথা রাজনীতি করতে চাইছে বলে দাবি করেন সাবিনা।
এদিকে, ঘটনাস্থলে যান বিজেপির রাজ্য নেতা শ্যামচাঁদ ঘোষ। তাঁর অভিযোগ, ‘একুশের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল হেরে গিয়েছে জেনে আমাদের কর্মীদের ওপর এভাবে হামলা শুরু করেছে। আমরা এই ঘটনার প্রতিবাদে প্রয়োজনের রাজ্যজুড়ে আন্দোলনে নামব। নির্বাচন কমিশনারকে লিখিতভাবে জানাব। গত নির্বাচনে আমি সেখানে ভোটে দাঁড়িয়েছিলাম। এই উদয় মণ্ডল আমাদের কর্মী হিসেবে খুব ভালো ছেলে। তৃণমূলের গুন্ডারা এই কাজ করেছে।’
মোথাবাড়ি বিধানসভার জেড পি ৩১-এর মণ্ডল সভাপতি অলক মণ্ডলের অভিযোগ, ‘এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করছি। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে যদি দোষী গ্রেপ্তার না হয় তাহলে আগামীকাল আমরা থানা ঘেরাও করব।’
যদিও বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলতে চায়নি মোথাবাড়ি থানার পুলিশ। তবে পুলিশ সুপার অলক রাজুরিয়া অবশ্য জানিয়েছেন, মোথাবাড়িতে এক যুবক গুলিতে আক্রান্ত হওয়ার খবর পেয়েছি। পুলিশ গোটা ঘটনার তদন্ত করছে।