রায়গঞ্জ, ২৯ জানুয়ারিঃ ফুল গাছের বাগান তো ঢের মিলে যায়। কিন্তু, যদি বলা হয়, প্রজাপতির বাগান! সামান্য অবাক লাগলেও, রায়গঞ্জের কুলিক পক্ষীনিবাসের জঙ্গল ঘেরা পরিবেশে এই প্রথম প্রজাপতির উদ্যান তথা বাটারফ্লাই পার্ক তৈরী হল। প্রায় ২ হেক্টর জমিতে গড়ে ওঠা উদ্যান জুড়ে ৪৫০ টির বেশী প্রজাতির নানা রংয়ের প্রজাপতি রয়েছে। প্রাথমিকভাবে ৩টি উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে এই পার্ক তৈরি করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। প্রজাপতি বিষয়ক গবেষণা, মানুষের মধ্যে প্রজাপতি বিষয়ক সচেতনতা বাড়ানো ছাড়াও, পর্যটকদের কাছে প্রজাপতি সহ কুলিক পক্ষীনিবাসকে আরো আকর্ষণীয় করে তুলতে, রায়গঞ্জ কুলিক পক্ষীনিবাসের ফরেস্ট বাংলোর বিপরীতে পার্কটি গড়ে উঠেছে।
রায়গঞ্জ কুলিক পক্ষীনিবাসের প্রজাপতি নিয়ে চিন্তাভাবনা অনেক পুরোনো। যদিও, এর আগে প্রজাপতি উদ্যানের কোনো অস্তিত্ব ছিল না। বর্তমানে রংবেরঙের সেইসব প্রজাপতিদের সহজে চিনে নিতে অনেকেই ভিড় জমাচ্ছেন কুলিক পক্ষীনিবাসের প্রকৃতি পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে। সেখানে গেলেই, নানান প্রজাতির প্রজাপতির চিত্র এবং বর্ণনা দেখা যায়। আর এখন, জীবন্ত প্রজাপতিদের দেখে মুগ্ধ হচ্ছেন প্রকৃতিপ্রেমীরাও। প্রজাপতিদের এই স্বর্গরাজ্যে প্রায় ৪৫০ প্রজাতির প্রজাপতি রয়েছে। হাতিশুঁড়, ভেরেন্ডা, লেবু, আতুসি, করবি, এরিকাপাম, দারুচিনি, পাউডার ফ্লো, পলাশ ফুল, নারকেল, আর শ্যওরা, আকণ্ড, ক্যাথিয়া এলাটা, বেল, পেয়ারা, মাধবীলতা, প্যাসিফ্লোরা ফিডিডা, দেবদারু, কুল, কদম, সিকমা, রঙ্গন, কারি পাতা, কাঞ্চন, আম সহ নানান গাছ লাগানো হয়েছে। মূলত প্রজাপতির বংশবৃদ্ধি ও প্রজননের উপযোগী এই গাছগুলি এখন পর্যন্ত লাগানো হয়েছে। বেশ কিছু বিশেষজ্ঞ ইতিমধ্যেই প্রজাপতি দেখতে রায়গঞ্জ ফরেস্ট পরিদর্শন করে গিয়েছেন। মনে করা হচ্ছে রাজ্যের আকর্ষণীয় প্রজাপতি উদ্যান হিসেবে খুব শীঘ্রই পরিচিতি পাবে কুলিক ক্যাম্পাস।
প্রকৃতিপ্রেমী সঞ্জীব গোস্বামী জানান, রায়গঞ্জ কুলিক পক্ষীনিবাস এশিয়ার প্রথম পক্ষীনিবাস। যেখানে পর্যটকরা শুধু প্রজাপতির নানা প্রজাতি দেখতে আসতেই পারেন। রায়গঞ্জ বিভাগের বন আধিকারিক সোমনাথ সরকার একজন প্রজাপতি প্রেমী। তিনি ইতিমধ্যেই ২৫০ প্রজাতির ভিন্ন প্রজাপতি ক্যামেরাবন্দি করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, জঙ্গল থেকে শুয়োপোকা ধরে এনে ল্যাবে রাখা হচ্ছে। এরপর পাত্রের মধ্যে রেখে পিউপা থেকে পূর্ণাঙ্গ প্রজাপতি করে, ফরেস্টে ছেড়ে দেওয়া হয়। এই মুহূর্তে প্রায় ১০ হাজার প্রজাপতি ছাড়া হয়েছে কুলিক বাটারফ্লাই পার্কে।