আসানসোলঃ বর্ধমান সানমার্গ চিটফান্ড মামলায় আসানসোল জেলা আদালতে সিজিএমের এজলাসে বুধবার আরও একটি সাপ্লিমেন্টারী চার্জশিট জমা দিলো সিবিআই। এই নিয়ে এখনও পর্যন্ত এই চিটফান্ড মামলায় তদন্ত করে তিনটি চার্জশিট আসানসোল আদালতে জমা দিল কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। আর এদিন আদালতে চার্জশিট জমা পড়ায় আসানসোল জেলে থাকা হালিশহর পুরসভার চেয়ারম্যান রাজু সাহানির (Raju Sahani) বন্দি দশা তিন সপ্তাহ পিছিয়ে গেল।
আইনজীবী খুরশিদ আলম এদিন বলেন, দুদিন আগে হাইকোর্ট রাজু সাহানিকে জামিন দিয়েছে। তবে সেই জামিনের একটা শর্ত ছিল যে, তিনদিনের মধ্যে এই মামলায় সিবিআই যদি কোন চার্জশিট আসানসোল আদালতে জমা দেয়, তাহলে তিনদিনের মধ্যে এই জামিন কার্যকর হবে না। সেক্ষেত্রে এই জামিন কার্যকর হবে ২১ দিন পরে। তিনি আরও বলেন, এদিন আরও একটি সাপ্লিমেন্টারী চার্জশিট সিবিআই জমা দেওয়া, রাজু সাহানি জেল থেকে মুক্তি পাবেন না। তিনি ছাড়া পাবেন ২১ দিন পরে। এদিকে এদিন যে চার্জশিট জমা দিয়েছে তা ৪০ পাতারও বেশি বলে সিবিআই সূত্রে জানা গেছে। রাজু সাহানির পাশাপাশি এই চার্জশিটে নাম রয়েছে আরও তিনজনের। যার মধ্যে অন্যতম রাজু সাহানির ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী দূর্গাপুরের বাসিন্দা সঞ্জয় সিং ও রেখা চট্টোপাধ্যায়। আরও জানা গেছে, কিভাবে এই চিটফান্ড সংস্থার টাকা লোপাট হয়েছে, তা বিস্তারিত বলা হয়েছে চার্জশিটে।
প্রসঙ্গতঃ, গত ৩ সেপ্টেম্বর বর্ধমান সানমার্গ চিটফান্ড মামলায় সিবিআই গ্রেপ্তার করে রাজু সাহানিকে। তাকে ৫ দিনের জন্য নিজেদের হেফাজতে পেয়েছিল এই মামলায় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। সেই মেয়াদ শেষে গত ৮ সেপ্টেম্বর তাঁকে আসানসোল জেলা আদালতে পেশ করেছিল সিবিআই। তারপর থেকে আসানসোল জেলে রয়েছেন হালিশহর পুরসভার চেয়ারম্যান।
উল্লেখ্য, এই চিটফান্ড মামলায় ২০১৪ সালে ৪ টি এফআইআর হয়েছিল পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোল দূর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের কুলটি থানায়। পরবর্তী কালে আদালতে নির্দেশে ২০১৮ সাল থেকে এই মামলায় সিবিআই তদন্ত শুরু করে। তারা আলাদা করে একটি মামলা করে। বর্ধমান শহরে বর্ধমান পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান প্রণব চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে এই বর্ধমান সানমার্গের দুটি সংস্থার অফিস ছিল। অভিযোগ বেশি টাকা পাইয়ে দেওয়ার নামে এই সংস্থা বাজার থেকে প্রায় ১০০ কোটি টাকা তুলেছে বলে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা জানতে পারে। এই সংস্থার মুল মাথা চেয়ারম্যান তথা ডিরেক্টর সৌম্যরুপ ভৌমিককে এখনও সিবিআই গ্রেপ্তার করতে পারেনি। সে ফেরার রয়েছে। তার নামে লুকআউট নোটিশও জারি করা হয়েছে।
সিবিআই গ্রেপ্তার করেছিল এই সংস্থার অন্য এক মাথা সিএস সাবাতকে। ১৮ মাস জেলে থাকার পরে হাইকোর্ট তাকে জামিন দিয়েছিল। এছাড়াও পরে কয়েক মাস আগে বর্ধমান পুরসভার পুর প্রশাসক পদে থাকার সময় প্রণব চট্টোপাধ্যায়কেও সিবিআই গ্রেপ্তার করে। গত ১৪ আগষ্ট তাকেও হাইকোর্ট জামিন দিয়েছে। বর্ধমান শহরে যে ভাড়াবাড়িতে এই সংস্থার অফিস ছিল সেটির মালিক প্রণব চট্টোপাধ্যায়ের স্ত্রী রেখা চট্টোপাধ্যায়ের নামে।