কুশমণ্ডি : মানবিক দৃষ্টান্তের নজির গড়লেন কুশমণ্ডি থানার আইসি মানবেন্দ্র সাহা, বিডিও শৈপা লামা ও বিএমওএইচ অমিত দাস। লকডাউন ঘোষণার পর থেকে সকাল হলেই বেরিয়ে পড়ছেন তাঁরা। সেই বাঁধা রুটিনে রবিবার সকালে বাজারগুলিতে মানুষের দূরত্ব বজায় রয়েছে কিনা তা দেখতে বেরোন আইসি ও বিডিও। সকাল ১০টা নাগাদ বিডিও নিজের অফিসে ফিরে যান। আইসি তখনও কোথাও কোনও দোকান খোলা রয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখছিলেন। তখনই বিডিওর কাছে খবর আসে, কুশমণ্ডি থেকে ঊষাহরণ যাওয়ার রাস্তায় দলদলিয়া খাঁড়ির ব্রিজের কাছে এক প্রৌঢ়া মাটিতে পড়ে রয়েছেন।
এই খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান আইসি। মাটিতে পড়ে থাকা ষাট ছুঁই ছুঁই ওই মহিলার পাশে বসে অনেকক্ষণ কথা বলার প্রৌঢ়া উঠে বসেন। মানসিক ভারসাম্যহীন ওই মহিলার সঙ্গে আলাপ জমিয়ে উদ্ধার করেন থানার নাম। এরপর সেই থানা এলাকার কিছু গ্রামের নাম বলতেই সাড়া দেন প্রৌঢ়া। আইসি জানান, উত্তর দিনাজপুর জেলার ইটাহার থানা এলাকার দুর্গাপুর সংলগ্ন কালিবাড়ি ভূপালপুর গ্রামে প্রৌঢ়ার বাড়ি। তাঁর ছবি পাঠিয়ে ইটাহার থানার মাধ্যমে প্রৌঢ়ার বাড়িতে খবর দেওয়া হয়েছে। ওই মহিলাকে হাসপাতালে নিয়ে যান আইসি। তাঁর প্রাথমিক চিকিৎসার আয়োজন করেন বিএমওএইচ অমিত দাস। বিএমওএইচ জানিয়েছেন, অনিয়মিত আহার ও বয়সজনিত কারণে খানিক দুর্বল হয়ে পড়েছেন প্রৌঢ়া। তাঁর আর অন্য কোনও উপসর্গ নেই।
বিকেলে ওই মহিলার স্বামী নিত্য বর্মন কুশমণ্ডি হাসপাতালে চলে আসেন। তিনি বলেন, আমার স্ত্রী চিন্তামণি বর্মণ ছয় মাস আগে বাড়ি থেকে বেড়িয়ে যায়। ইটাহার থানায় স্ত্রীর নিরুদ্দেশের কথা জানানো হয়। এদিকে মানসিক ভারসাম্যহীনতায় ভুগলেও স্বামীকে দেখতে পেয়ে খুশি চিন্তামণিদেবীও। এই ঘটনায় কুশমণ্ডির বিডিও, আইসি ও বিএমওএইচকে সাধুবাদ জানিয়েছেন মহকুমা শাসক মানবেন্দ্র দেবনাথ।