হরিশ্চন্দ্রপুর: গ্রাম পঞ্চায়েতের বিরোধী দলনেতার পদের দখল নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ল তৃণমূলের দুই গোষ্ঠী। ঘটনাকে ঘিরে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লকের তুলসিহাটা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়। সোমবার সন্ধ্যায় দু’দফায় সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে তারা। প্রথম দফায় হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লক চত্বরে এবং দ্বিতীয় দফায় হরিশ্চন্দ্রপুর শহিদ মোড়ে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ে দু’পক্ষ।
গতকাল তুলসিহাটা গ্রাম পঞ্চায়েতের বিরোধী দলনেতা গঠনের জন্য তৃণমূলের ছয়জন পঞ্চায়েত সদস্য হরিশ্চন্দ্রপুর ১-এর বিডিওর অফিসঘরে হাজির হয়েছিলেন। জোটের দখলে থাকা ওই গ্রাম পঞ্চায়েতে এই মুহূর্তে বিরোধী আসনে রয়েছে শাসকদল। সেই সময় ব্লক চত্বরে তুলসিহাটা গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য আভা দাসের ছেলে বাপি দাসের বাইক আটকে চাবি কেড়ে নিয়ে মারধর করার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের তুলসিহাটা অঞ্চল সভাপতি আবুল হোসেন আশরাফি ও তাঁর সঙ্গীদের বিরুদ্ধে। যদিও পালটা অঞ্চল সভাপতির অভিযোগ, বাপি দাস তাঁকে কটুক্তি করেন। তার প্রতিবাদ করেন তিনি। এরপরই বাপি তাঁর ওপর চড়াও হন। তাঁকে মারধর করেন।
এবার তুলসিহাটা গ্রাম পঞ্চায়েতে শাসকদলের সাতজন সদস্য জয়ী হয়েছেন। এর মধ্যে বিরোধী নেতার দাবিদার পদে রয়েছেন মহাবা বিবি। যিনি আবার ওই অঞ্চলের তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের সভাপতি আব্বাস আলির স্ত্রী। আরেক দাবিদার রয়েছেন রুবি খাতুন। যিনি শাসকদলের অঞ্চল সভাপতি আবুল হাসান আশরাফের স্ত্রী। আর এদিন ব্লক চত্বরে এই দুই গোষ্ঠী গ্রাম পঞ্চায়েতের বিরোধী দলনেতার পদের দখলদারি নিয়ে নিজেদের মধ্যে গণ্ডগোলে জড়িয়ে পড়ে।
এদিকে, ঝামেলার কথা মেনে নিয়েছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বও। তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসির ব্লক সভাপতি আব্বাস আলির অভিযোগ, ‘আবুল হোসেন আশরাফির স্ত্রী যাতে বিরোধী দলনেত্রী হতে পারে, তাই বাপি দাসের সঙ্গে সেই ঝামেলা করেছে। আবুল হাসান আশরাফির সঙ্গে অন্য কোনও শাসকদলের সদস্য ওর সমর্থনে নেই। আমরা শাসকদলের বিজয়ী সাতজন সদস্যের মধ্যে ছয়জন সদস্য মিলে নেত্রীর নাম প্রস্তাব করেছি বিডিওর কাছে।’ সমগ্র ঘটনা নিয়ে নেতৃত্বের মীমাংসা করা উচিত বলেও মত প্রকাশ করেন তিনি।
ব্লক ছাত্র সভাপতি বিমান ঝা বলেন, ‘আবুল হাসান আশরাফির অনুগামীরা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ঝামেলা করেছে। ওই অঞ্চলে শাসকদলের বিজয়ী সদস্য মহাবা বিবিকে সর্বসম্মতিক্রমে বিরোধী দলনেত্রী বাছা হয়েছে। সেখানে দলের কিছু লোক ইচ্ছা করে গণ্ডগোল পাকাতে চেষ্টা করছে। এই বিষয়ে অভিযোগ করতে গেলে আমাকেও মারধর করা হয়েছে। আমি সমস্ত অভিযোগ দলের নেতৃত্বকে জানাব।’ যদিও এই নিয়ে ব্লক সভাপতি মানিক দাসকে ফোন করা হয়। তবে তিনি ফোন না ধরায় কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।