ফাঁসিদেওয়া, ৫ ডিসেম্বরঃ শিলিগুড়ি মহকুমার বিধাননগরে দার্জিলিং জেলা পুলিশের ব্লক রেইড তথা নাকা তল্লাশিকে কেন্দ্র করে ধুন্ধুমার। নাকা তল্লাশিতে পুলিশের বিরুদ্ধে পয়সা তোলার অভিযোগ এনে সমর্থকদের নিয়ে বিক্ষোভে সামিল হলেন তৃণমূল কংগ্রেস নেতা। আরও অভিযোগ, সাধারণ মানুষকে অযথা হেনস্থা করা হচ্ছে। গরীব মানুষকে পুলিশ কর্মীরা পেটাচ্ছেন। এদিন ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিধাননগর তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশের সঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেস নেতা তথা বিধাননগর ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন উপ প্রধান পীযুষ সিংহের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়। শনিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত পুলিশের নাকা তল্লাশি চলে। এরপর অভিযোগ এনে তৃণমূল নেতার সমর্থনকারীরা মুরালীগঞ্জে ৩১ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করার পরিকল্পনা নেয়। যদিও, জাতীয় সড়ক অবরোধ শেষ পর্যন্ত হয়নি। পুলিশি আধিকারিকরা সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিলে, বিক্ষোভকারীরা চলে যান। যদিও, পয়সা তোলার অভিযোগ পুলিশ অস্বীকার করেছে। অসমর্থিত সুত্রের খবর, রবিবার বিষয়টি নিয়ে পুলিশের আধিকারিকরা বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন।
এদিন গোটা দার্জিলিং জেলায় একই সময় নাকা তল্লাশি চলেছে। দুপুর ১টার পর তৃণমূল নেতা পীযুষ সিংহ মুরালীগঞ্জ চেকপোস্ট এলাকায় সমর্থনকারীদের নিয়ে হাজির হন। সেখানে পুলিশকর্মীদের সঙ্গে বাইক চালকদের ফাইন করা নিয়ে পুলিশের সঙ্গে তৃণমূল নেতার বচসা বাধে। ঘটনাকে কেন্দ্র এলাকায় উত্তেজনা চরমে ওঠে। খবর পেয়ে বিধাননগর তদন্ত কেন্দ্রের ওসি মানস দাস ঘটনাস্থলে পৌঁছান। এরপরই তৃণমূল নেতা পীযুষ সিংহের সঙ্গে পুলিশের ধাক্কাধাক্কা শুরু হয় বলে অভিযোগ। যদিও, ঘটনায় হতাহতের কোনও খবর নেই। পীযুষ সিংহের সমর্থনকারীদের অভিযোগ, নাকা তল্লাশি চালিয়ে সাধারণ মানুষকে হয়রান করা হচ্ছে। মোটরবাইক চালকদের মাথায় হেলমেট না থাকলে লাঠিপেটা করা হচ্ছে। বাইক ধরে নিয়ে থানায় কয়েকদিন আটকে রেখে সাধারণ মানুষকে হেনস্থা করার অভিযোগ তুলেছেন পীযুষ বাবু। তাঁর আরও অভিযোগ, দৈনিক ডোডা, নকল মদ, বালি পাচার হচ্ছে বিধাননগরে। কিন্তু, পুলিশের কোনও ভূমিকা নেই। অথচ, গরীব মানুষের লাইসেন্স রিনিউ করা না থাকলেই পুলিশ অত্যাচার চালাচ্ছে। পীযূষ বাবু আরও বলেন, পুলিশ নাকা তল্লাশি করবে, এতে আমাদের কোনও সমস্যা নেই। তবে, মানুষকে ৫ হাজার টাকা কেস দেওয়া হচ্ছে। এই হেনস্থা করা বন্ধ করতে হবে। এরই বিরুদ্ধে আমরা প্রতিবাদে নেমেছি।
এদিকে, মুরালীগঞ্জ ব্যবসায়ী সমিতির কিছু দোকানদারের অভিযোগের পক্ষে পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। সনাতন মল্লিল নামে এক হোটেল ব্যবসায়ী বলেন, দৈনিক এলাকায় নাকা তল্লাশি চালানো হয়। পুলিশ বড় এবং ছোট গাড়ি সহ মোটরবাইক আটক করে তোলা আদায় করে চলেছেন৷ সেই কারণে মানুষ তিতিবিরক্ত। হোটেলে খদ্দেরও আসে না। থানার বড় বাবুকে অভিযোগ জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। আরেক ব্যবসায়ী বলেন, মোটরবাইক চালকদের কাগজ থাকলেও, পুলিশ লাঠিচার্জ করছে। কাগজ না থাকলে স্পট ফাইন না করে, থানায় নিয়ে আটকে রাখছে। সাধারণ মানুষকে বন্ধের দাবি তুলেছেন তাঁরা। রাস্তায় দাঁড়িয়ে তোলা আদায়ের প্রসঙ্গে বিধাননগর তদন্ত কেন্দ্রের ওসি মানস দাস বলেন, পুলিশ রাস্তায় দাঁড়িয়ে টাকা তোলেনি। বিধাননগর পুলিশ এমন কাজে জড়িত নয় বলে তিনি দাবি করেন। তিনি আরও বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশানুযায়ী সকল কাজ করা হয়। ডিএসপি (গ্রামীণ) অচিন্ত্য গুপ্ত জানান, অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তিনি আরো জানান অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হলে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।