চাঁদকুমার বড়াল, কোচবিহার : কোচবিহার শহরে পুরসভার উন্নয়নমূলক একাধিক কাজ আটকে গিয়েছে। ১০০ কোটি টাকার উপরে এই কাজের বেশিরভাগই নিকাশি ব্যবস্থার। এর ফলে এবার বর্ষায় শহরের মানুষের ভোগান্তি চরমে উঠতে পারে। এইসব সংস্কারমূলক কাজ বর্ষার আগে শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু লকডাউনে রাজ্যের নগরোন্নয়ন দপ্তর থেকে কাজ শুরু করার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না। এমনকি এই কাজগুলির বরাদ্দও অর্থ দপ্তরকে ফেরত দিতে হয়েছে। নতুন করে আর বরাদ্দ আসেনি।
কোচবিহার পুরসভার চেয়ারম্যান ভূষণ সিং বলেন, রাজ্যের নগরোন্নয়ন দপ্তরের আধিকারিকদের সঙ্গে কথা হয়েছে। তাঁরা জানিয়েছেন, করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে কোনও কাজ শুরু করা যাবে না। বরাদ্দও এখন দেওয়া হবে না। তাই পরিস্থিতি স্বাভাবিক কবে হবে এখন সেদিকে তাকিয়ে থাকা ছাড়া আর কোনও উপায় নেই। চেযারম্যান বলেন, ১০০ কোটি টাকার উপরে কাজ হত। এর মধ্যে শহরে ঢাকনাযুক্ত বিশেষ নর্দমা তৈরিতে বেশিরভাগ টাকা ধরা হয়েছিল। কোচবিহার পুরসভার বিরোধী দলনেতা মহানন্দ সাহা বলেন, যে সমস্ত কাজের কথা বলা হচ্ছে তা আরও আগে করা যেত। এখন লকডাউনের জন্য সমস্যা হয়েছে। এতে কারও কিছু করার নেই। তবে তৃণমূলের বোর্ড ব্যর্থ। শহরের মানুষ বর্ষায় ভুগবে। বিভিন্ন এলাকা জলমগ্ন হবে। মানুষের জন্য উন্নয়ন হয়নি। উন্নয়নে বরাদ্দ টাকা লুঠ হয়েছে।
কোচবিহার পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, কোচবিহার শহরে আধুনিক নর্দমা হওয়ার কথা ছিল। এই কাজে প্রায় ৮০ কোটি টাকার উপর খরচ ধরা ছিল। ঢাকনাযুক্ত নর্দমা তৈরির প্রাথমিক কাজও শুরু হয়। কনটুর প্ল্যান করার কাজ চলছিল। তবে সেই কাজ আপাতত বন্ধ। বেহাল নিকাশি ব্যবস্থার জন্য প্রতি বছর শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ডে বর্ষায় জল আটকে যায়। তখন সমস্যায় পড়েন নাগরিকরা। আধুনিক নর্দমা হলে শহরের বাসিন্দারা সেই জলযন্ত্রণার হাত থেকে নিস্তার পেতেন। এছাড়া শহরের বেশকিছু ওয়ার্ডে বিটুমিনের রাস্তা তৈরি করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। কিছু পথবাতি লাগানো থেকে শুরু করে আরও ছোটখাটো সংস্কারমূলক কাজ করার কথা ছিল।
কোচবিহার শহরের বাসিন্দা দীপ দাস বলেন, বর্ষায় শহরের বিভিন্ন এলাকা জলমগ্ন হয়। নর্দমা সংস্কার হবে বলে শুনেছিলাম। কিন্তু লকডাউনে তো কাজ হবে না। তাই এবারও বর্ষায় ভোগান্তি রয়েছে। নিবেদিতা সরকার নামে আরেক বাসিন্দা বলেন, ছোট ছোট রাস্তাগুলো সারানোর কথা ছিল। আসলে এসব কাজ পুরসভার আরও আগে শুরু করা উচিত ছিল। পুর আধিকারিকরা জানিয়েছেন, এই মুহূর্তে কোনও বড় কাজ বেশি শ্রমিক নিয়ে শুরু করা যাবে না বলে সরকারি নির্দেশ রয়েছে। পাশাপশি রাজ্য থেকে এই মুহূর্তে নতুন করে অর্থ বরাদ্দ হবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে। ফলে আগামী বর্ষার আগে এই কাজগুলি আর হওয়া অসম্ভব।