স্বরূপ বিশ্বাস, কলকাতা: রাজ্যে করোনা মোকাবিলা নিয়ে শাসকদল তৃণমূল সরকার ও প্রতিপক্ষ বিজেপির চাপান-উতোর অব্যাহত৷ এই কঠিন পরিস্থিতি সত্বেও পরস্পরের বিরুদ্ধে দোষারোপের পালা চলছেই৷ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেছেন কেন্দ্র করোনা পরীক্ষার কিট পাঠাচ্ছে না৷ আমরা টেস্ট করতে পারছি না৷
পাল্টা রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ অভিযোগ করেছেন, কেন্দ্রের পাঠানো কিট এসে পড়ে রয়েছে৷ রাজ্য সরকার করোনা পরীক্ষার কাজে তা লাগাচ্ছে না৷ তাঁর সরাসরি অভিযোগ, করোনা মোকাবিলায় রাজ্য সরকার ব্যর্থ তো বটেই, সেই সঙ্গে ব্যর্থতা ঢাকতে তথ্য গোপনের আশ্রয় নেওয়া হচ্ছে৷ দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে সুনির্দিষ্ট তথ্য ও পরিসংখ্যান আমরা পাঠাচ্ছি৷ আর করোনা পরীক্ষার ব্যাপারে রাজ্যের এই উদাসিনতা ও ব্যর্থতার কথাও আমরা কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষবর্ধনকে তথ্য ও পরিসংখ্যান নিয়ে চিঠি লিখে জানাচ্ছি৷
দিলীপবাবুর অভিযোগ, মালদহতে এক হাজার কিট এসে পড়়ে রয়েছে৷ সরকারি ব্যর্থতায় তা কাজে লাগানো হচ্ছে না৷ ভিন রাজ্যগুলি থেকে এই রাজ্যে অসংখ্য শ্রমিক মালদহে ফিরে এসেছে৷ বহাল তবিয়তে তারা ঘুরে বেরাচ্ছে৷ সংক্রমণের ঝুঁকি থাকা সত্বেও রাজ্য সরকারে পক্ষ থেকে তাদের খোঁজ নেওয়া হচ্ছে না৷
তিনি আরও বলেন, শুধু মালদহ কেন, কলকাতায় পাঁচ হাজার কিট এসেছে৷ মেদিনীপুরের জন্য এক হাজার কিট এসেছে৷ কেন্দ্রের পাঠানো এই সব কিট রাজ্য সরকার পরীক্ষার কাজে না লাগিয়ে ফেলে রেখেছে৷ এই সব তথ্য আমরা কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে পাঠাচ্ছি৷ তাঁর অভিযোগ, রাজ্য সরকার এখন ব়্যাশন দিতে পারছে না মানুষকে৷ শাসকদল তৃণমূলের লোকজন জোর করে ব়্যাশনের সামগ্রী তুলে নিয়ে যাচ্ছে৷ ইচ্ছামতো তা বিতরণ করছে৷’ মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘আপনারা বাড়ি থাকুন, লকডাউন মানুষ৷’ আবার তিনিই সবাইকে নিয়ে রাস্তায় নেমে পড়েছেন৷ দলের লোকেদের রাস্তায় নামাচ্ছেন৷ বিরোধী দলের লোকজন রাস্তায় মানুষের সাহায্যে নামলে পুলিশ বাধা দিচ্ছে৷ আর তৃণমূলের লোকেদের সাত খুন মাফ৷ কীভাবে চলছে সরকার? প্রশ্ন তারঁ৷
তৃণমূলের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে টেনে বিজেপি রাজ্য সভাপতি এদিন সরকারি ব্যর্থতার তীব্র সমালোচনা করেন৷ দিলীপবাবুর অভিযোগ, এই অবস্থায় সরকারে উচিত মানুষকে খাওয়ানো৷ তা তারা করছে না৷ পার্টির সাংসদ অভিষেক প্রকাশ্যে রান্না করে মানুষকে খাওয়াচ্ছেন৷ অন্য পার্টির কেউ করলেই তা দোষের৷
তিনি জানান, রাজ্য বিজেপি সিদ্ধান্ত নিয়েছে ১৪ এপ্রিল পয়লা বৈশাখ সর্বত্র পার্টি নেতা ও কর্মীরা গরিব মানুষদের খাওয়াবেন৷ কর্মসূচীও তৈরি হয়ে গিয়েছে৷ এই পর্যন্ত রাজ্য বিজেপি কুড়ি হাজার নেতা ও কর্মী প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে টাকা পাঠিয়েছেন৷ এই কর্মসূচী চলছে৷