রায়গঞ্জ: করোনা আতঙ্কে এবার রায়গঞ্জ শ্মশান কলোনি এলাকার বাসিন্দারা জঞ্জালের গাড়ি আটকে এলাকায় পথ অবরোধ করে বিক্ষোভে সামিল হলেন। শনিবার দীর্ঘক্ষণ এই অবরোধ চলতে থাকলেও পুরসভার প্রতিনিধিরা এসেও অবরোধকারীদের সরাতে ব্যর্থ হন। এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায়।
রায়গঞ্জ পুরসভার ২২ নম্বর ওয়ার্ডে অবস্থিত বন্দর শ্মশানঘাট। ওই এলাকা এক সময় ফাঁকা থাকলেও এখন ওই এলাকায় ঘনবসতি গড়ে উঠেছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, ‘শহরের বিভিন্ন নার্সিংহোম, হাসপাতালের জঞ্জাল এই শ্মশান কলোনি এলাকায় ডাম্পিং গ্রাউন্ডের পাশে ফেলা হয়। ফলে যেকোনও মুহূর্তে দূষণ ছড়াতে পারে। আমরা আতঙ্কে রয়েছি। এছাড়াও শ্মশানে বিভিন্ন মৃতদেহ দাহ করার পর জঞ্জাল যত্রতত্র ফেলা হয়।’ যা থেকে করোনার মতন মারণ ভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারেন বলে আশঙ্কা স্থানীয়দের।
স্থানীয়দের আরও অভিযোগ, হাসপাতালের বিভিন্ন রোগীর বর্জ্য পদার্থ বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে নষ্ট না করে এলাকায় ফেলা হচ্ছে। ফলে সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা করছেন তাঁরা। পাখিরা কখনও নোংরা মুখে করে নিয়ে বাড়ির দুয়ারে আবার কখনও বাড়ির উঠোনে ফেলছে। মাঝে মধ্যেই সেখানে জঞ্জালে আগুন ধরিয়ে দিলে এলাকায় তীব্র উৎকট গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে। বাসিন্দাদের শ্বাস-প্রশ্বাস ফেলাই মুশকিল হয়ে যায়। দিনের বেলাতেও মশারি টাঙিয়ে থাকতে হয়। আর রাতে মশার উৎপাত তো রয়েইছে।
যদিও এই বিষয়ে স্থানীয় কাউন্সিলার তপন দাস জানিয়েছেন, বাসিন্দাদের মধ্যে একটা অহেতুক আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। এখানে ডাম্পিং গ্রাউন্ডের জঞ্জাল নিয়মিত পরিষ্কার করা হয়। এখানে কোনও করোনায় আক্রান্ত রোগীর মৃতদেহ দাহ করা হচ্ছে না। অহেতুক আতঙ্ক ও উদ্বেগের কোনও কারণ নেই।
এদিন সকাল থেকেই এলাকার বাসিন্দারা রাস্তায় বাঁশ বেঁধে অবরোধ আন্দোলনে সামিল হন। খবর পেয়ে রায়গঞ্জ থানার বিশাল পুলিশবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। কিন্তু পুলিশ গিয়েও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি।
এদিন খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় রায়গঞ্জ পুরসভার চেয়ারম্যান সন্দীপ বিশ্বাস, রায়গঞ্জ পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান অরিন্দম সরকার প্রমুখ। পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, ‘স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে। সমস্ত এলাকাই স্যানিটাইজ করে দেওয়া হবে।’ ধোঁয়া থেকে যেন কোনও অসুবিধা না হয় তার যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণেরও আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। এদিন বন্দর শ্মশানঘাটের ইনচার্জ বৈদ্যনাথ ঘোষও আন্দোলনকারীদের বোঝানোর চেষ্টা করেন, এখানে কোনও বাইরের মৃতদেহ আনা হচ্ছে না। এটা কেউ ভুল বুঝিয়েছে। আন্দোলন তুলে নেওয়ার আবেদন জানান। জানা গিয়েছে, শেষ পর্যন্ত পুরসভার আধিকারিক এবং কাউন্সিলারের আশ্বাসে অবরোধ তুলে নেন তাঁরা।