নয়াদিল্লি : ভারতে ক্রমশ ছড়িয়ে পড়ছে নোভেল করানো ভাইরাস। বৃহস্পতিবার সকাল ৯ টায় সরকারিভাবে আক্রান্তের সংখ্যা ১৭৬৪ বলে জানানো হয়েছে। এখনও পর্যন্ত আক্রান্তদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ৫০ জনের। সুস্থ হয়ে উঠেছেন বা হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে ১৫০ জনকে। যদিও ভারতে করোনা-সংক্রমণ স্থানীয় পর্যায়ে সীমাবদ্ধ রয়েছে বলে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক জানিয়েছে। ইতিমধ্যে মহারাষ্ট্রে আক্রান্তের সংখ্যা ৩৩০ ছাড়িয়েছে। এখনও পর্যন্ত কেরলেও ২৬০ জনের বেশি আক্রান্ত হয়েছেন। কর্ণাটকে সংখ্যাটা ১১০। এখনও পর্যন্ত হরিয়ানা ও জম্মু কাশ্মীরে যথাক্রমে ৪৩ ও ৬২ জনের সংক্রমণ ধরা পড়েছে।
পশ্চিমবঙ্গেও আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। বাংলায় এখনও পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৩৭ জন। এখনও পর্যন্ত তামিলনাড়ুতে ২৩৪ জন আক্রান্ত হয়েছেন। উত্তরপ্রদেশে এখনও পর্যন্ত ১১৩ জন আক্রান্ত। তেলেঙ্গানায় ৯৬ জনের দেহে ভাইরাসের অস্তিত্ব নিশ্চিত হয়েছে। দেশের ২৯টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে। এই পরিস্থিতিতে আগাম প্রস্তুতি হিসেবে পর্যাপ্ত চিকিত্সা পরিকাঠামো তৈরি রাখতে চাইছে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারগুলি।
বাইরে থেকে আসা মানুষ ও তাঁদের সংস্পর্শে থাকা ব্যক্তিরাই মূলত সংক্রামিত হয়েছেন। বড় আকারে গোষ্ঠী সংক্রমণের ঘটনা ভারতে ঘটেনি বলেই মনে করা হচ্ছে। পর্যবেক্ষকদের মতে, দিল্লিতে তবলিক জমাতের সভায় অংশগ্রহণকারীদের একাংশের মাধ্যমে সংক্রমণ কতটা ছড়িয়েছে, তা আগামী কয়েকদিনের মধ্যে বোঝা হবে।
বুধবার দিল্লিতে এক সাংবাদিক বৈঠকে স্বাস্থ্যদপ্তরের যুগ্মসচিব লব আগরওয়াল ভারতীয় রেলের পরিকাঠামোকে আক্রান্তদের চিকিত্সার কাজে ব্যবহারের কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘রেলের ২০ হাজার কোচের নকশা বদলে আক্রান্তদের রাখার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। সেখানে ৩.২ লক্ষ শয্যার ব্যবস্থা থাকবে। এর মধ্যে ৫ হাজার কোচে বদলের কাজ শেষ হয়েছে। ওই কোচগুলিতে ৮০ হাজার শয্যা রয়েছে। সেখানে ওষুধ ও অক্সিজেন সিলিন্ডার রাখার আলাদা ঘর, চিকিত্সাকর্মীদের থাকার জায়গাও থাকছে। চিকিত্সার পাশাপাশি ওই কোচগুলিকে কোয়ারান্টিন সেন্টার হিসেবেও ব্যবহার করা হবে বলে স্বাস্থ্যমন্ত্রকের একটি সূত্র জানিয়েছে।’
রেলের কোচকে চিকিত্সার কাজে ব্যবহারের সিদ্ধান্তকে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বলে মনে করছেন চিকিত্সকরা। তাঁদের মতে, ভারতে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে থাকলেও যে কোনও সময় রোগীর সংখ্যা আচমকা বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওযা যাচ্ছে না। করোনা চিকিত্সার জন্য রাতারাতি হাসপাতাল তৈরির চেয়ে রেলের কোচে চিকিত্সার ব্যবস্থা করা অনেক কম সময়সাপেক্ষ। প্রয়োজনে এগুলিকে চলমান চিকিত্সাকেন্দ্র হিসেবেও ব্যবহার করা যাবে। কোনও রাজ্যে সংক্রমণ দ্রুত ছড়াতে শুরু করলে সেখানে প্রয়োজনমতো কোচ পাঠিয়ে দেওয়া সহজ হবে।