গাজোল: একশো দিনের কাজে বরাদ্দ বন্ধ নিয়ে বিতর্কের মধ্যেই ফের এই প্রকল্পে বড়সড়ো দুর্নীতির অভিযোগ সামনে এল। এবার গাজোল-২ (Gazole) গ্রাম পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে কলাবাগান তৈরিতে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। প্রকল্প এলাকায় বোর্ড লাগিয়ে টাকা তোলা হয়ে গেলেও উপভোক্তারা কেউই টাকা পাননি বলে অভিযোগ। দীর্ঘদিন অপেক্ষা করার পর অবশেষে তদন্তের দাবি জানিয়ে ব্লক প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন উপভোক্তারা। বিষয়টি নিয়ে তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি। লোকসভা ভোটের প্রাক মুহূর্তে এই ঘটনাকে ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর।
গাজোল-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের রসিকপুর এলাকার সাত জন বাসিন্দা অভিযোগ করেন, ২০১৮-১৯ সালে মহাত্মা গান্ধি জাতীয় গ্রামীণ কর্মসংস্থান নিশ্চয়তা প্রকল্পে (Mahatma Gandhi National Rural Employment Guarantee Act) কলাবাগান তৈরি করতে প্রত্যেকের জন্য লক্ষাধিক টাকা বরাদ্দ হয়। কিন্তু সেই টাকা পাননি উপভোক্তারা। ২০২১ সালে শুধুমাত্র দশটি করে কলাগাছ এবং কয়েকটি বাঁশ দিয়ে একটি করে সাইনবোর্ড দেওয়া হয়। এছাড়া প্রকল্পের আর কোনও কাজ হয়নি। যার ফলে আজও ওই জমিতে সাইনবোর্ড লাগানো থাকলেও কলা বাগানের চিহ্নমাত্র নেই। এই প্রকল্পের এক উপভোক্তা মাধবী রায় জানান, তার জমিতে কলাবাগান প্রকল্পের জন্য ৩ লক্ষ ২৭ হাজার টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল। কিন্তু সেই টাকা তারা পাননি। পরে জানতে পেরেছি তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যরা মিলে সেই টাকা তুলে নিয়েছে।
২০১৮ সালে তৃণমূলের কাছ থেকে গাজোল-২ গ্রাম পঞ্চায়েত ছিনিয়ে নেয় বিজেপি। কিন্তু কিছুদিনের মধ্যেই বেশ কিছু বিজেপি সদস্য যোগ দেয় তৃণমূলে। এরপর গ্রাম পঞ্চায়েতের আবার দখল নেয় তৃণমূল। বিধায়ক চিন্ময় দেব বর্মনের অভিযোগ, গোটা রাজ্যেই তৃণমূল ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পের টাকা লুটেপুটে খেয়েছে। যার জন্য কেন্দ্রীয় সরকার বর্তমানে এই প্রকল্পে টাকা দেওয়া বন্ধ রেখেছে। তৃণমূলের দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করতে গিয়ে খুন হতে হয়েছে বৈরগাছি-২ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার ধনঞ্জয় সরকারকে। ওখানে বিজেপি বোর্ড গঠন করলেও চুরি করার জন্য বিজেপির কয়েকজন সদস্য তৃণমূলে যোগ দিয়েছিল। ওই চুরির সঙ্গে তারাই জড়িত। আমরা দাবি জানাচ্ছি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।
পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মোজাম্মেল হোসেন বলেন, ‘গাজোল-২ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে কলাবাগান তৈরি নিয়ে একটা দুর্নীতির অভিযোগ এসেছে। ওখানে নাকি বোর্ড লাগানো হয়েছে অথচ কোনও কাজ হয়নি। ঘটনা ২০১৮-১৯ সালের। সে সময় পঞ্চায়েত পরিচালনার দায়িত্বে ছিল বিজেপি। অভিযোগ পেয়েছি, ঘটনার তদন্ত শুরু করছি আমরা।’