হরিশ্চন্দ্রপুর: ভূগর্ভস্থ পাইপ লাইনে ফাটল ধরে যাওয়ায় বিগত ১৫ দিন ধরে পরিস্রুত পানীয় জল পরিষেবা বন্ধ হয়ে রয়েছে হরিশ্চন্দ্রপুর এলাকাজুড়ে। পানীয় জল পরিষেবা পাচ্ছেন না হরিশ্চন্দ্রপুর, কাশিমপুর, পিপলা, রামনগর, থানাপাড়া সহ ওয়াটার সাপ্লাই স্কিমের অন্তর্গত বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষেরা। সেই কারণে বৃহস্পতিবার হরিশ্চন্দ্রপুর এলাকার বেশ কয়েকটি পাড়ার বাসিন্দারা খালি বালতি হাতে রাস্তায় নেমে জলের দাবিতে বিক্ষোভ দেখান।
এবিষয়ে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দপ্তর সূত্রে খবর, মেইন লাইনের যে অংশে ফাটল ধরেছে তা মাটি থেকে প্রায় ৮ থেকে ১০ ফুট গভীরে। ওপরে পিডব্লিউডি-র আড়াই ফিট মোটা কংক্রিটের রাস্তা। অন্যদিকে সেই পাইপ লাইনের উপরে রয়েছে পার্শ্ববর্তী মার্কেট কমপ্লেক্সের বারান্দা। এছাড়াও সঠিক কোন অংশে পাইপ লাইনে ফাটল ধরেছে তাও উপর থেকে নির্ধারণ করা সম্ভব না। পাশাপাশি ব্যস্ততম রাস্তার নিচে সুরঙ্গ করে কাজ করতে গেলে রাস্তা ধসে পড়ার সম্ভাবনা প্রবল। ফলে প্রায় জটিল অবস্থার সম্মুখীন হরিশ্চন্দ্রপুরবাসী।
প্রায় ১৫ দিন ধরে জল না পেয়ে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ শামিল হয়েছেন হরিশ্চন্দ্রপুর এলাকার বহু বাসিন্দা। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, সরকার থেকে সরবরাহ করা এই পরিস্রুত পানীয় জলের উপর ভরসা করে থাকতে হয় সবাইকে। টানা দুই সপ্তাহ ধরে জল না পাওয়ায় বাধ্য হয়ে এলাকার নলকূপ বা অন্য কোনও জায়গা থেকে অপরিশোধিত পানীয় জল সংগ্রহ করে ব্যবহার করতে হচ্ছে। অবিলম্বে পানীয় জল পরিষেবা স্বাভাবিক হোক সেটাই দাবি।
এদিকে, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সারা রাজ্যব্যাপী প্রত্যেকটি বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার জন্য জলস্বপ্ন প্রকল্প হাতে নিয়েছেন। সেই কারণে রাজ্যব্যাপী ৫৬ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এলাকার বিভিন্ন ওয়াটার সাপ্লাই স্কিমে ইতিমধ্যে তার কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। বিভিন্ন এলাকায় জল বাড়িতে পৌঁছে যাচ্ছে পাইপ লাইনের মাধ্যমে। কিন্তু হরিশ্চন্দ্রপুর ওয়াটার সাপ্লাই স্কিমের পুরোনো পাইপ লাইনের মাধ্যমে আদৌ কি মুখ্যমন্ত্রী স্বপ্নের জলস্বপ্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন সম্ভব? সেই প্রশ্নই এখন বাসিন্দাদের মুখে। অবিলম্বে এই প্রকল্পকে পুনরুজ্জীবন করা উচিত বলে দাবি করছেন এলাকাবাসী। কারণ এই পাইপলাইন পুনরুজ্জীবন না করলে বাড়ি বাড়ি জল পরিসেবা দেওয়া সম্ভব হবে না কোনদিনও।
হরিশ্চন্দ্রপুর-১ ব্লক তৃণমূলের ব্লক সভাপতি মানিক দাস জানান, এলাকায় জল পরিষেবা যাতে স্বাভাবিক হয়ে যায় তার জন্য আমরা যথেষ্ট তৎপর।
এ প্রসঙ্গে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দপ্তরের মালদা জেলার এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার পৃথ্বীশ ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি যাতে অবিলম্বে ওই এলাকায় জল পরিষেবা স্বাভাবিক করা যায় তার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।