ডালখোলা: পুরসভা গঠনের দুই দশক হতে চলল। এখনও উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি ডালখোলা পুরসভার দুই নম্বর ওয়ার্ডের বেশকিছু এলাকায়। নেই পাকা রাস্তা, পানীয় জল ও নিকাশি নালা। মূলত মজদুর শ্রেণির মানুষদের বসবাস ওই এলাকায়। তা সত্বেও এলাকাবাসীর কেউ পাননি বাংলার বাড়ি প্রকল্পে ঘর। এমনই অসহায় অবস্থার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন ওই ওয়ার্ডের হরিপুর দিঘিরপাড় কলোনি এলাকার বাসিন্দারা।
২০০৩ সালে ডালখোলা দুই নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতকে পুরসভায় উন্নীত করা হয়। দীর্ঘ ১৮ বছর পেরিয়ে গেলেও এখনও হরিপুর দিঘিরপাড় কলোনির মানুষের চলাচলের ভরসা বেহাল কাঁচা রাস্তা। নেই পানীয় জল ও নিকাশি নালা। এলাকার বেশিভাগ বাড়ি এখনও কাঁচা। রাস্তা পাকা না হওয়ার কারণে অসুবিধায় পড়তে হচ্ছে ওই এলাকায় বসবাসকারী প্রায় ২০০ পরিবারকে। বৃষ্টির দিনে অবস্থা আরও খারাপ হয়ে দাঁড়ায়। এলাকাবাসী তাঁদের অসুবিধার কথা বারংবার পুর আধিকারিকদের জানানোর পরও কোনও কাজ হয়নি বলে অভিযোগ। রাস্তার বেহাল দশার কারণে সেখানকার স্কুল পড়ুয়াদের স্কুলে যেতে সমস্যার কথাও বলেন হরিপুরের দিঘিরপাড় কলোনির মহিলারা। এমনকি কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে রাস্তার কারণে ডাক্তাররা যেতে চান না ওই এলাকায়। স্থানীয় বাসিন্দা পেশায় দিন মজুর লক্ষ্মী দাস জানান, নেতারা ভোটের সময় ভোট চাইতে এলে প্রতিবারই প্রতিশ্রুতি দেন রাস্তাটি পাকা করে দেওয়ার। কিন্তু ভোট পেরোলেই আর কেউ কথা রাখে না। অসুবিধার কথা পুরসভার আধিকারিকদের বহুবার জানিয়েও কোনও সুরাহা হয়নি।
বিগত বিধানসভা ভোটের আগে এলাকায় রাস্তা করার জন্য একটি সাইন বোর্ড লাগানো হয়েছিল। কিন্তু সাইন বোর্ডের কালি মুছে গেলেও এখনও রাস্তার কাজ শুরু হল না। এলাকার গৃহবধূ পুনম দাস জানান, প্রায় তিনবছর আগে আইএইচএইচএল প্রকল্পের অধীনে শৌচালয় নির্মাণের জন্য তাঁদের কাছ থেকে এক হাজার টাকা করে নেওয়া হলেও আজও শৌচালয় হল না। বাধ্য হয়ে খোলা জায়গায় শৌচকর্ম করতে হচ্ছে। এতে করে একদিকে যেমন পরিবেশ দূষণ হচ্ছে, অন্যদিকে বিভিন্ন ধরনের রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভবনা বাড়ছে। অপর এক গৃহবধূ রেখাদেবী জানান, বেহাল রাস্তার কারণে এলাকার প্রসূতি ও তাঁর পরিবারের লোকজনদের ভোগান্তির শেষ নেই। প্রসবের আগে প্রসূতিদের অন্যত্র পাঠিয়ে দিতে বাধ্য হচ্ছেন পরিবারের লোকেরা। যদিও ডালখোলা পুরসভার প্রশাসনিক বোর্ডের চেয়ারপার্সন তনয় দে জানান, ওই এলাকার সমস্যা নতুন নয়। তবে ওই এলাকার সমস্যা সমাধানের জন্য বিভিন্ন পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।