রায়গঞ্জ: রাজ্যে একাধিক ধর্ষণের ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তোপ দাগলেন রায়গঞ্জের সাংসদ দেবশ্রী চৌধুরী। কালিয়াগঞ্জে নাবালিকা ধর্ষণের ঘটনায় মঙ্গলবার তাকে রায়গঞ্জ মেডিকেলে দেখতে গিয়ে সাংসদ মুখ্যমন্ত্রীকে তোপ দেগে বলেন, ‘১৫ দিনে পশ্চিমবঙ্গে একাধিক ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। অথচ এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর কোনও প্রতিক্রিয়া নেই। উলটে যারা ধর্ষক তাদের হয়ে সাফাই গাইছেন তিনি।’ প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জানান, নাবালিকার পরিবারকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। তাঁরা ওই পরিবারের পাশে রয়েছেন। পাশাপাশি তাঁর বক্তব্য, পশ্চিমবঙ্গ কোন জায়গায় পৌঁছে গিয়েছে। সম্প্রতি রায়গঞ্জে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল কালিয়াগঞ্জে একটি ঘটনা ঘটল।
অন্যদিকে, এদিন নাবালিকাকে দেখতে এসে তৃণমূলের মহিলা সভানেত্রী পম্পা সরকার বলেন, ‘বিজেপি সাংসদ দেবশ্রী চৌধুরী এখানে রাজনীতি করতে এসেছেন। তিন বছর অতিক্রান্ত হয়ে গেলেও এই জেলায় কোনও উন্নয়ন হয়নি। এদিকে ধর্ষণ নিয়ে হাসপাতালে রাজনীতি করতে এসেছেন।’ পাশাপাশি এদিন নাবালিকাকে দেখতে যান তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের জেলা সভাপতি শেখর দাস।
প্রসঙ্গত, ১০ বছরের নাবালিকাকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে প্রতিবেশী দাদার বিরুদ্ধে। অভিযুক্তও নাবালক, বয়স ১৫ বছর। সোমবার সকালে উত্তর দিনাজপুর জেলার কালিয়াগঞ্জের মোস্তাফা নগর গ্রাম পঞ্চায়েতে ঘটনাটি ঘটে। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, নির্যাতিতার বাবা ও ভাই দিল্লিতে পরিযায়ী শ্রমিকের কাজ করেন। বাড়িতে ঠাকুরদা, ঠাকুমা ও মায়ের সঙ্গে থাকে ওই নাবালিকা। গতকাল সকালে বাড়ির সকলে জমিতে কাজে চলে যান। সেই সময় সে বাড়িতে একাই ছিল। অভিযোগ, বাড়ি ফাঁকা থাকার সুযোগে ওই নাবালক বাড়িতে ঢুকে নাবালিকাকে ধর্ষণ করে। এরপর নির্যাতিতা ঘটনার কথা পরিবারের লোকজনকে জানায়। সঙ্গে সঙ্গে তাকে কুনোর ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় নির্যাতিতাকে রায়গঞ্জ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গতকাল রাতেই ওই নাবালককে আটক করে পুলিশ। নাবালকের বিরুদ্ধে কালিয়াগঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের করেন নির্যাতিতার ঠাকুমা। অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে এদিন রায়গঞ্জ জুভেনাইল কোর্টে তোলা হয়। তার বিরুদ্ধে পকসো আইনে মামলা রুজু করা হয়েছে। রায়গঞ্জের পুলিশ সুপার মহম্মদ সানা আখতার জানান, নাবালিকার পরিবারের তরফে লিখিত অভিযোগ জমা পড়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।