ফারাক্কা: নামেই ডিয়ার ফরেস্ট অথচ রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে ধীরে ধীরে সবকিছুই ফিকে হয়ে গিয়েছে ফারাক্কার ডিয়ার ফরেস্ট। ফারাক্কা ব্যারেজ তৈরির সময় নদীর উত্তর পশ্চিম কোণ বরাবর একটা দ্বীপের মত জায়গা প্রকাশ পায় যা সাধারণ মানুষের কাছে ডিয়ার পার্ক নামে পরিচিত ছিল। আনুমানিক ৩৫ একর জায়গা জুড়ে ছিল একটা ফরেস্ট। একসময় প্রচুর পর্যটক বাইরে থেকে শীতকালে পিকনিক করতে আসত। শাল, সেগুন, মেহগিনি, চন্দন ইত্যাদি নানা মূল্যবান গাছ ছিল। ২০০১ সালে বামেদের জেলা পরিষদ থাকাকালীন ডিয়ার পার্কে একটি হরিণ প্রজনন কেন্দ্র এবং গবেষণাগার গড়ে উঠেছিল। চারদিকে বাউন্ডারির ঘেরাটোপ ছিল। প্রাক্তন সাংসদ আবুল হাসানাত খানের তত্ত্বাবধানে প্রায় ৫০টির মতো হরিণ ছাড়া হয়েছিল। তৎকালীন বামেদের জেলা পরিষদ কিছুটা ফান্ডেরও ব্যবস্থা করেছিল সেসময়। ভিতরে তত্ত্বাবধানের জন্য বন দপ্তরের অফিস ছিল। কিন্তু ধীরে ধীরে অবস্থার অবনতি হতে থাকে। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে চোরাশিকারিদের বাড়বাড়ন্ত শুরু হয়। পাশাপাশি একদিকে খাবারের অভাব অন্যদিকে চোরাশিকারি দৌরাত্ম্যে হরিণের সংখ্যা কমতে থাকে। পশ্চিমবঙ্গ সরকার ফারাক্কার ডিয়ার ফরেস্টকে পর্যটনকেন্দ্র গড়ে তুলুক এই দাবিতে সরব হয়েছে ফারাক্কাবাসী।
ফারাক্কার সংশ্লিষ্ট বেওয়া-১ নম্বর পঞ্চায়েত প্রধান কাজেম আলি মির্জা বলেন, ‘এত ভালো একটা জায়গা যদি সঠিক রক্ষণাবেক্ষণ করে সরকারের ট্যুরিজম দপ্তর পদক্ষেপ নেয় তাহলে একদিকে সরকারের যেমন একটা আর্থিক সংস্থান বাড়বে তেমনি প্রচুর মানুষ একটা ভালো পর্যটনের জায়গায় ঘুরতে আসতে পারে।’
প্রাক্তন প্রধান মনোরঞ্জন ঘোষ বলেন, ‘বনদপ্তরের অফিস নেই। কতগুলো ভাঙা ঘর আর অল্প কিছু গাছপালা পড়ে আছে। ঠিকমতো প্ল্যান করলে ভিতরে বোটিং, ল্যান্ডস্কেপিং ইত্যাদি সহযোগে ভালো একটা ট্যুরিজম স্পট হতে পারে।’ এলাকার বাসিন্দা কিশোর মণ্ডল বলেন, আগে খুব ভালো লাগতো অনেক হরিণ চোরে বেড়াতো এখন সবকিছু শেষ। সরকার যদি পর্যটন কেন্দ্র করে তাহলে খুব ভালো হবে।’