রায়গঞ্জঃ নিজে জীবনে প্রতিষ্ঠিত হতে পারেননি। গ্রামে প্রাইভেট টিউশন পড়িয়ে কোনও মতে সংসার চলে ৫০ বছরের মহম্মদ ইব্রাহিমের। বাড়ি উত্তর দিনাজপুরের(Uttar Dinajpur) গুলন্দর গ্রামে। ইংরেজি শিক্ষক হিসেবে যথেষ্ট সুপরিচিত রয়েছে তাঁর। ইংরেজিতে অনার্স কমপ্লিট করার পর বাড়ির আর্থিক অবস্থার কারনে পড়াশোনা ইতি টানতে হয়েছে। চাকরি না মেলায় গ্রামেই টিউশন পড়ানোটাই তাঁর পেশা। তবে মহম্মদ ইব্রাহিম নিজে প্রতিষ্ঠিত হতে না পারলেও ২০১৫ সাল থেকে নিঃশব্দে গ্রামের দুঃস্থ মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের বিনা পয়সায় পাঠদান করছেন। পাশাপাশি বিভিন্ন পঠন-পাঠন সামগ্রী দিয়ে সাহায্য করছেন দুঃস্থ মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের। আজ তাঁর বহু ছাত্র-ছাত্রী চিকিৎসক, ইঞ্জিনিয়ার ও অধ্যাপক। এই মহান কাজে ইব্রাহিম পাশে পেয়েছেন ইটাহার হাই স্কুলের প্রাক্তন প্রধানশিক্ষক অমিত সরকারকে।
মহম্মদ ইব্রাহিম জানান, আমি নিজে প্রতিষ্ঠিত হতে পারেনি। একটি সরকারি চাকরিও জোটেনি। আর্থিক কারনে অনার্স শেষ করে উচ্চশিক্ষা লাভ সম্ভব হয়নি। তাই ২০১৫ সাল থেকে গ্রামে ইংরেজি টিউশন পড়িয়ে কোনো মতে দিন যাপন করছি। সেই সঙ্গে গ্রামের দুঃস্থ মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের প্রতিভা বিকাশে নিজের সাধ্যমতো চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। যারা আর্থিক কারনে প্রাইভেট টিউশন পড়তে পারছে না তাদের সম্পূর্ণ বিনামূল্যে প্রাইভেট টিউশন পড়াই। পাশাপাশি দুঃস্থ পড়ুয়াদের উচ্চশিক্ষার জন্য বই বা অন্য কোনো পঠন সামগ্রী পৌঁছে দিই। তবে এক্ষেত্রে প্রাক্তন প্রধানশিক্ষক অমিতবাবু আমাকে ভীষণ সাহায্য করেন। উনি না থাকলে এই কাজ করতে পারতাম না।
ইটাহার হাই স্কুলের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক অমিত সরকার এদিন জানান, ইব্রাহিম নিঃশব্দে গ্রামে কাজ করছে দুঃস্থ ছাত্রছাত্রীদের জন্য। যথেষ্ট যোগ্যতা থাকা সত্বেও একটি চাকরি তার হয়নি। অথচ স্কুল সার্ভিস কমিশনের মেধা তালিকায় বেশ কয়েকবার জায়গা করে নিয়েছে। তবে নিজে প্রতিষ্ঠিত না হলেও গ্রামের দুঃস্থ মেধাবী ছেলে মেয়েরা যাতে প্রতিষ্ঠিত হতে পারে সেজন্য নিঃশব্দে কাজ করছে। আমি তার উদ্যোগকে কুর্নিশ জানাই। ওর পাশে থাকার চেষ্টা করি।
আরও পড়ুনঃ পৃথক কামতাপুর রাজ্যের দাবিতে রেল অবরোধের ডাক কেপিপির