পলাশবাড়ি: বামফ্রন্টের আমলে কাজ হয়নি। তৃণমূলের শাসনেও ছবিটা বদলায়নি। তাই ভোটার তালিকায় প্রথমবার নাম উঠলেও ভীষ্মদেব বর্মন, পিংকি বর্মনদের মতো কলেজ পড়ুয়াদের প্রশ্ন, তাহলে ভোট দিয়ে কী হবে? আসলে পিংকিদের বাড়ি পশ্চিম কাঁঠালবাড়িতে। জেলা পরিষদের রাস্তা দিয়ে যাতায়াত। কিন্তু ওই রাস্তায় গিরিয়া নদীর ওপর একটি সেতু প্রায় ৩০ বছর ধরে বেহাল। সেতুটি বেঁকে রয়েছে। মাঝে বিরাট গর্ত। দুর্ঘটনাও ঘটছে। তাই এলাকার নতুন ভোটাররা এই সেতুর ইস্যু নিয়েই ভোট দিতে চান।
নতুন ভোটার ও অন্যান্য বাসিন্দাদের ক্ষোভের কারণ বহু পুরোনো। জানা গিয়েছে, আলিপুরদুয়ার(Alipurduar) ১ ব্লকের পূর্ব কাঁঠালবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের পুঁটিমারি মোড় থেকে কোচবিহারগামী জেলা পরিষদের রাস্তায় থাকা গিরিয়া সেতুটি প্রায় ৩০ বছর ধরে বেহাল। ওই দুর্বল সেতু দিয়ে ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধের জন্য গ্রাম পঞ্চায়েতের তরফে সেতুর দু’পাশে সতর্কীকরণ সাইনবোর্ড লাগানো হয়েছে। কিন্তু দুই জেলার সংযোগকারী এই রাস্তা দিয়ে ছোট যাত্রীবাহী গাড়ি চলাচল করে। পণ্যবাহী ট্রাক, ট্র্যাক্টর, ট্রলিও যাতায়াত করে। স্থানীয়দের বক্তব্য, গিরিয়া নদীর সেতুটি ১৯৯৩ সালের বন্যায় কিছুটা ক্ষতিগ্রস্থ হয়। সেইসময় মাঝখানের পিলারগুলি বসে যায়। সেতুটি বেঁকে যায়। প্রশাসন এটিকে দুর্বল সেতু ঘোষণা করে। এভাবেই বছরের পর বছর ধরে চলছে। মাঝখানে জেলা পরিষদের রাস্তাটি বেশ ক’বার সংস্কার করা হয়। কিন্তু সেতুটির কোনও কাজ হয়নি বলে স্থানীয়দের দাবি। তাই ফের পঞ্চায়েত ভোট আসতে চলায় এই সেতুকেই মূল ইস্যু করে সরব হয়েছেন দুই জেলার একাধিক এলাকার বাসিন্দারা।
কিন্তু এবার নতুন ভোটারদেরও ক্ষোভের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ওই বেহাল সেতু। পশ্চিম কাঁঠালবাড়ির ভীষ্মদেব বর্মন আলিপুরদুয়ার কলেজে পড়েন। একই এলাকার পিংকি বর্মন ফালাকাটা কলেজ ও কোয়েল বর্মন বিবেকান্দ কলেজের ছাত্রী। সবাই প্রথমবার ভোট দেবেন। তালিকায় নাম উঠেছে। পড়ুয়াদের বক্তব্য, বেহাল সেতুর জন্য ক্ষোভের কারণে ভোট দিতে চাই। আর ভোটের বিনিময়ে নতুন পাকা সেতুর দাবির বিষয়টি প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই।
পাতলাখাওয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের পুঁটিমারি বক্সিরবস এলাকার পঞ্চায়েত সদস্য অর্জুন শর্মার কথায়, ‘এরজন্য দুই জেলার বহু মানুষের সমস্যা হচ্ছে। কিন্তু সেতুটি আলিপুরদুয়ার জেলায় পড়েছে। তাই ওই জেলার স্থানীয় প্রশাসনের এ ব্যাপারে পদক্ষেপ করা প্রয়োজন।’ এদিকে পশ্চিম কাঁঠালবাড়ির পঞ্চায়েত সদস্য জীবন সরকারের বক্তব্য, ‘আমাদের তরফে বহুবার জেলা পরিষদ ও প্রশাসনের উপর মহলে এই সেতুর বিষয়টি জানানো হয়েছে। কারণ, পঞ্চায়েত থেকে তো জেলা পরিষদের সেতুর কাজ করা সম্ভব নয়।’ কিন্তু পঞ্চায়েত ভোট হয় ত্রিস্তরীয়। অর্থাৎ পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদের জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হন। তাই এবার নেতারা ভোট চাইতে আসলেই সেতুর প্রসঙ্গ নিয়ে প্রশ্ন করা হবে বলে জানিয়েছেন বাসিন্দারা। তবে আলিপুরদুয়ার জেলা পরিষদের সহকারি সভাধিপতি মনোরঞ্জন দে বলেন, ‘ওই সেতুর বিষয়টি জানা আছে। জেলা পরিষদ থেকে অর্থ বরাদ্দ হলেই কাজ হবে।’
আরও পড়ুনঃ দম্পতির দেহ উদ্ধার শিলিগুড়িতে! মৃত্যুর কারণ নিয়ে ধোঁয়াশা