দীপেন ঢাং, বাঁকুড়াঃ লকডাউনের কারণে চরম সংকটে পড়েছে বাঁকুড়ার ডোকরা গ্রাম। এই পরিস্থিতিতে গ্রামের প্রায় ১৫০টি শিল্পী পরিবারে দেখা দিয়েছে অনটন। গত একমাস ধরে কাজ বন্ধ। যেসব শিল্পসামগ্রী তৈরি করা হয়েছে তাও বাড়িতে জড়ো করে রাখা। মহাজন আসছেন না। পাশাপাশি খদ্দেররাও আসা বন্ধ করেছেন। ফলে বহু পরিবারে নেমে এসেছে অর্থ সংকট। শুক্রবার খবর পেয়ে খাদ্যসামগ্রী নিয়ে হাজির হলেন বাঁকুড়া জেলা পরিষদের সভাধিপতি মৃত্যুঞ্জয় মুর্মু ও পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ শিবাজী বন্দ্যোপাধ্যায়।
বাঁকুড়া শহর লাগোয়া গন্ধেশ্বরী নদীর উত্তর পাড়ে অবস্থিত বিকনা গ্রাম। এখানের ১৫০ পরিবার ডোকরা শিল্পের সঙ্গে জড়িত। সে কারণে গ্রামটি পরিচিতি পায় ডোকরা গ্রাম হিসেবে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পরিবারের কর্তা বলেন, ‘আমাদের ডোকরা শিল্প জগৎ বিখ্যাত। আমাদের শিল্পকর্ম মহাজনের মারফত সারা বিশ্বে রপ্তানি হয়। সে কারণেই মহাজন আমাদের বরাত দেন এবং কাঁচামালও সরবরাহ করেন। কারণ আমাদের তো সেই সামর্থ্য নেই। আমরা দাবিমতো শিল্পসামগ্রী তৈরি করে দিই। সেই সব শিল্প নিয়ে কোটি কোটি টাকার ব্যবসা হলেও আমরা সেই হত দরিদ্রই রয়ে গিয়েছি। আর কোথায় আমরা রাষ্ট্রপতি পুরস্কার নিয়ে এসেছি। বিভিন্ন রাজ্য থেকে অনেক শিল্পী পুরস্কৃতও হয়েছেন।’
আরও পড়ুনঃ রোজা উপলক্ষে খাদ্যসামগ্রী বিলি সামসীতে
তিনি বলেন, ‘জেলার কর্তারা গর্ব করেন। বাঁকুড়া জেলাকে বিশ্ব মানচিত্রে আনার জন্য প্রশংসা করেন। কিন্তু ওই পর্যন্তই। তবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ধন্যবাদ। তিনি এই শিল্পী পরিবারগুলির জন্য আবাসন তৈরি করে দিয়েছেন। কেউ কেউ শিল্পী ভাতাও পান। কিন্তু সকলে তো পান না। দেশের ভয়াবহ পরিস্থিতিতে আমরা অসহায় অবস্থায় রয়েছি। জেলা পরিষদ থেকে যে ত্রাণ দেওয়া হল তাতে আমাদের কয়েকদিন চলবে। তারপর যদি পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হয় তখন কি হবে সে কথা ভেবেই আমরা দিশেহারা।’
আরও পড়ুনঃ আদিবাসী মহিলার পাশে দাঁড়াল অভিযাত্রী ক্লাব
সভাধিপতি মৃত্যুঞ্জয় মুর্মু বলেন, ‘আমরা একটি মানুষকেও খাদ্যাভাবে থাকতে দেব না। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত ত্রাণ পাঠানো হবে।’ পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ শিবাজী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘এইসব শিল্পীদের জন্য বাঁকুড়া জেলা জগৎ সভায় স্থান পেয়েছে। এখানের শিল্পসামগ্রী ইংল্যান্ডের রানীর ঘরে শোভাবর্ধন করছে। এঁদের পাশে আমরা আছি।’