নাগরাকাটা: স্পেশাল নিলামে ডুয়ার্সের সিটিসি ব্র্যান্ডের চায়ের মধ্যে সর্বোচ্চ দাম পেল জলপাইগুড়ির(jalpaiguri) ডেঙ্গুয়াঝাড় চা বাগান। সোমবার কলকাতা চা নিলাম কেন্দ্রে বিশেষ যত্ন নিয়ে তৈরি ওই বাগানটির চা কিলো প্রতি ১৭০১ টাকা দরে বিক্রি হয়। পাহাড়ের অর্থোডক্স চায়ের মধ্যে সর্বোচ্চ দাম পেয়েছে বাদামতাম বাগান। কলকাতা নিলাম কেন্দ্রেই বিক্রি হওয়া বাদামতামের চা কিলো প্রতি ২০ হাজার টাকা দাম পেয়েছে। এরপরেই রয়েছে ক্যাসেলটন(১২,০০১)। শিলিগুড়ি নিলাম কেন্দ্রে সর্বোচ্চ দাম আনন্দপুর চা বাগানের। কিলো প্রতি ৫০০ টাকা দরে বিকোয় ক্রান্তি ব্লকের বাগানটির উৎপাদিত চা। ওই নিলাম কেন্দ্রে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দাম পেয়েছে কুমারগ্রাম বাগানের চা(৪১৬ টাকা)। স্পেশাল নিলামে সিটিসি চায়ের মধ্যে গত বারের মতো এবারও শীর্ষ স্থান দখল করায় খুশির হাওয়া ডেঙ্গুয়াঝাড়ে।
ম্যানেজার ও চা বণিক সভা ডিবিআইটিএ-র চেয়ারম্যান জীবন পান্ডে বলেন, ‘আমরা শিলিগুড়ি নিলাম কেন্দ্রেও চা পাঠাই। স্পেশাল নিলামের জন্য এই সিসিসি চা কলকাতায় পাঠানো হয়েছিল। সেখানে অসমের বাগানগুলির সিসিটি ব্র্যান্ড ও প্রতিযোগিতায় থাকে। ভালো দাম পাওয়ার জন্য গুণগতমানই যে শেষ কথা তা বারবার প্রমাণিত হচ্ছে।’
শিলিগুড়ি নিলাম কেন্দ্রে বটলিফ চা বাগানগুলির মধ্যে সর্বোচ্চ দাম পেয়েছে ইসলামপুরের চোসপাড়া এক্সক্লুসিভ (২২৬ টাকা)। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ শিল টি এক্সপোর্টসের মণি ব্র্যান্ডের চা (১৫০ টাকা)। এর আগের দু বছর বটলিফের ক্ষেত্রে মধ্যে মণি ব্র্যান্ড সর্বোচ্চ দাম পেয়েছিল। স্পেশাল চায়ের মধ্যে (অর্ডোডক্স জাতীয়) কলকাতা নিলাম কেন্দ্রে ডুয়ার্সের মালবাজারের মীনগ্লাস (৫০০১), লিশ রিভার ( ৩৫২৬), কুমারগ্রামের সঙ্কোশ (৩০০২), মেটেলির চালৌনির (৪০০২) মতো বাগানগুলির দাম প্রাপ্তিও যথেষ্ট ভালো বলেই সংশ্লিষ্ট মহল বলছে। ডুয়ার্সের বাগানগুলির ওই চা অনেকটা পাহাড়ের ধাঁচে তৈরি।
২১ মে আন্তর্জাতিক চা দিবস উপলক্ষ্যে টি বোর্ডের নির্দেশে সেদিন বিশেষ মানের চা উৎপাদনের কথা বলা হয়েছিল। সেই মোতাবেক দেশের বিভিন্ন বড় বাগান সহ বটলিফ ফ্যাক্টরিগুলিও ওই কর্মসূচিতে অংশ নেয়। ফাইন প্লাকিং এর মাধ্যমে তৈরি ওই চা সোমবার দেশের বিভিন্ন নিলাম কেন্দ্রের মাধ্যমে বিক্রি হয়। যাকে টি বোর্ড স্পেশাল নিলাম হিসেবে আখ্যা দিচ্ছে। এই নিলামে অবশ্য বাগানগুলি যত খুশি সেই পরিমাণ চা পাঠাতে পারে নি। এক্ষেত্রে সীমারেখা বেঁধে দেওয়া হয়েছিল।
উত্তরবঙ্গের ডুয়ার্স-তরাইয়ের চা বিক্রির জন্য ভরসা শিলিগুড়ি চা নিলাম কেন্দ্রে অবশ্য সমস্ত স্পেশাল নিলামের সব চা বিক্রি হয়নি। শিলিগুড়ি টি অকশন কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান প্রবীর শীল বলেন, ‘স্পেশাল নিলামের এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানাই। তবে চায়ের বাজার যে ভালো নয় এদিন অবিক্রিত চায়ের পরিমাণ দেখেই বোঝা গিয়েছে।’
২০২০ সাল থেকে টি বোর্ডের উদ্যোগে রাষ্ট্রপুঞ্জ স্বীকৃত আন্তর্জাতিক চা দিবসের দিনটিতে স্পেশাল প্লাকিং এর মাধ্যমে উচ্চ গুণগতমানের চা উৎপাদনের কর্মসূচিটি শুরু হয়। এবার ছিল তৃতীয় বর্ষ। ক্ষুদ্র চা চাষিদের সর্বভারতীয় সংগঠন সিস্টা-র সভাপতি বিজয় গোপাল চক্রবর্তী বলেন, ‘এই উদ্যোগে ভালো মানের চা তৈরির সুস্থ প্রতিযোগিতাকে আরও বাড়িয়ে দেয়।’