দিনহাটা: কার্যত মহালয়ার পর থেকেই দিনহাটা (Dinhata) শহরের একাধিক পুজোমণ্ডপে দেখা মিলছে দর্শনার্থীদের। নিত্যনতুন থিমে সকলকে চমকে দিতে ও একে অপরকে টেক্কা দিয়ে দর্শনার্থীদের মন কাড়তে প্রস্তুত প্রায় সকলেই। কিন্তু শহর থেকে বেরোলেই শহরতলি কিংবা কিছুটা দূরের গ্রামাঞ্চলের ছবিটা কিন্তু ভিন্ন। থিমপুজো ও জাঁকজমকের ছবিটা চলতি বছরে ফিকে হয়েছে। করোনা পরিস্হিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলেও আর্থিক সংকট কাটেনি। এই পরিস্হিতিতে থিমপুজো ও জাঁকজমক দূরে সরলেও পুজো বন্ধ হয়নি। বরং নিষ্ঠায় ভর করে পুজো হচ্ছে দিনহাটার শহরতলি ও গ্রামাঞ্চলে। আর নিষ্ঠা, ভক্তি ও পরিশ্রমে স্হানীয়দের মন জয় করতে পারবেন বলে আশাবাদী স্হানীয় পুজো কমিটিগুলিও।
দিনহাটা ১ ব্লকের দিনহাটা ভিলেজ ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের রামনগর এলাকার বিবেকানন্দ ক্লাবের পুজোর এবার সুবর্ণজয়ন্তী বর্ষ। বৃহস্পতিবার সকালে ক্লাবের পুজোমণ্ডপে গিয়ে দেখা গেল মণ্ডপ তৈরির কাজ এখনও চলছে। পুজো কমিটির সম্পাদক অসিত দেবনাথ জানান, এবার পুজোর পঞ্চাশ বছর। বিশেষ কোনও জাঁকজমক হচ্ছে না। স্হানীয় যুবক ও পুজো কমিটির সদস্যরাই মণ্ডপ তৈরি করছেন। তবে পঞ্চাশ বছর উপলক্ষ্যে পুজোর প্রথমদিন শোভাযাত্রা করা হবে। পাশাপাশি পুজোর তিনদিন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও মহাষ্টমীতে দিনভর প্রসাদ বিতরণ কর্মসূচি রয়েছে। ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের নিগমনগর এলাকার রবীন্দ্র বিকাশ সংঘের পুজোও এবার জৌলুসহীন। প্রতিবছরই চমক দিলেও এবার ক্লাব প্রাঙ্গণেই কাল্পনিক মন্দিরের আদলে তৈরি মণ্ডপ ও পুজোর কয়েকদিন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্যেই সন্তুষ্ট থাকতে হবে দর্শনার্থীদের। নিগমনগর বাজার বারোয়ারি কমিটির পুজোর এবার ৭০তম বছর। বাজারের মাঝে অবস্হিত স্হায়ী পাকা মন্দিরেই পুজো হয়। জাঁকজমক না থাকলেও নিষ্ঠায় কোনও খামতি থাকে না বলে দাবি পুজো কমিটির সম্পাদক হারাধন চক্রবর্তীর। পাশাপাশি মাইক, ডিজে ইত্যাদি এড়িয়ে ১৪টি খোল, করতাল ও মহিলাদের শঙ্খধ্বনি সহযোগে শোভাযাত্রার পর প্রতিমা বিসর্জন এলাকাবাসীর নজর কাড়বে বলে জানালেন পুজো কমিটির সভাপতি দুলাল অধিকারী। বড়শাকদল গ্রাম পঞ্চায়েতের ঘাটপাড় বারোয়ারি কমিটির দুর্গাপুজোও সুপ্রাচীন। মূলত স্হানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানের সহযোগিতায় প্রতিবারই নিষ্ঠাভরে পুজো হয়। ঘাটপাড় এলাকার সংযুক্ত সংস্হার পুজোও প্রতিবারই নজর কাড়ে স্হানীয়দের। চলতি বছরে তাদের পুজোর ৫৩ তম বছর। কাল্পনিক মন্দিরের আদলে তৈরি মণ্ডপ ও পুজোর কয়েকদিন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেই মগ্ন থাকবেন এলাকাবাসীরা।
দিনহাটা ২ ব্লকের বড়শাকদলের সবুজপল্লি ক্লাবের পুজো এবার ৬৫ বছরে পড়ল। প্রতিবারই থিমপুজো, দেহসৌষ্ঠব প্রতিযোগিতা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ইত্যাদির মধ্য দিয়ে নজর কাড়ে ওই ক্লাব। তবে চলতি বছরে কোনও অনুষ্ঠান রাখেনি সবুজপল্লি ক্লাব। সবুজপল্লি উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে কাল্পনিক মন্দিরের আদলে তৈরি মণ্ডপে পুজো হবে। পুজো কমিটির সম্পাদক বিশু অধিকারীর কথায়, রাজ্য সরকারের অনুদানের টাকা দিয়ে কোনওরকমে পুজো করা হচ্ছে। করোনা পরিস্হিতির সময় থেকেই অনুষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছে। অন্যদিকে মা দুর্গার ত্রিনয়নী রূপের আদলে মণ্ডপ সাজিয়ে তাক লাগাতে বদ্ধপরিকর দিনহাটা ২ ব্লকের সাহেবগঞ্জ গ্রাম পঞ্চায়েতের আমরা কজন দুর্গাপুজো কমিটি। মণ্ডপ তৈরির কাজ এখনও চলছে।
আরও পড়ুন: ছাত্রনেতার মুক্তির দাবিতে পথ অবরোধ পড়ুয়াদের, উত্তেজনা তুফানগঞ্জ মহাবিদ্যালয়ে