কলকাতা: বৃহস্পতিবার দুপুরে শিক্ষামন্ত্রীর নিজের ফেসবুক প্রোফাইলে লেখা বক্তব্য নিয়ে দোলাচলে রাজ্যের আপার প্রাইমারি শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় পাস করা পরীক্ষার্থীরা।
শিক্ষামন্ত্রী ফেসবুক প্রোফাইলে লেখেন, ‘‘আপনারা অনেকেই আমার গুরুত্বপূর্ণ বিষয় পোস্টের পর অন্য বিষয়গুলি নিয়ে মতামত দিচ্ছেন৷ আপার প্রাইমারি নিয়ে জানাই বিষয়টি বিচারাধীন। সমাধান সূত্র থাকলেও এ মুহূর্তে তা করা সম্ভব হচ্ছে না৷ অতিথি শিক্ষকদের বিষয় ভেরিফিকেশন অনেক দূর এগোনোর পর বর্তমান সময়ে আটকে পড়েছে৷ যদিও কলেজগুলি যাদের নিয়োগ করেছিল তাদেরকে সেইভাবেই ভাতা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। কারণ এগুলি ওই সময় কালে সরকারের অনুমোদন ছিল না৷ সংকট কেটে গেলেই এ বিষয়ে সমাধান সূত্র বের হবে৷ সবাই সুস্থ থাকুন ঘরে থাকুন৷’’
সমগ্র বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এ দেশ তথা তথা রাজ্যেও লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা আতঙ্ক৷ করোনা ভাইরাস রুখতে ইতিমধ্যেই দ্বিতীয় দফায় লকডাউনের মেয়াদ বাড়িয়েছে কেন্দ্র৷ ঝিমিয়ে পড়া অর্থনীতি সঙ্গে দীর্ঘ লকডাউন, রাতারাতি বাড়িয়ে দিয়েছে বেকারত্ব৷ কাজ হারিয়ে ঘরে ফিরে গিয়েছেন বহু শ্রমিক৷ গত ২৯ মার্চ থেকে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত দেশে বেকারত্বের হার ২৩ শতাংশ পেরিয়ে গিয়েছে, যা সর্বোচ্চ৷
একদিকে যখন লাফিয়ে বাড়ছে বেকারত্ব, তখন নিয়োগ পরীক্ষায় সফল হয়েও মিলছে না নিয়োগপত্র৷ আর তাই নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে বাংলার সফল চাকরিপ্রার্থীদের মধ্যে৷ বাড়ছে ক্ষোভও৷ খোদ শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ফেসবুকে গিয়ে এবার নিজেদের ক্ষোভ উগরে দিতে শুরু করেছেন চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ৷ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ইতিমধ্যেই মাঠে নেমেছেন স্বয়ং শিক্ষামন্ত্রী৷ আর সম্ভবত তারই জেরে শিক্ষা মন্ত্রী গতকাল তার নিজের ফেসবুকে ওই মন্তব্য করেন।
উল্লেখ্য, দীর্ঘ মামলার জটে আটকে রয়েছে উচ্চ প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ৷ কলকাতা হাইকোর্টে উচ্চ প্রাথমিকে নিয়োগ মামলার ভবিষ্যত এখনও ঝুলে রয়েছে৷ একদিকে মামলা, শিক্ষক নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ অন্যদিকে করোনা, লকডাউন-সবমিলিয়ে জেরবার উচ্চ প্রাথমিকে চাকরিপ্রার্থীদের ভবিষ্যৎ৷ বাড়ছে বেকারত্বের যন্ত্রণা৷ মহামারীর এই পরিস্থিতির মধ্যে এবার খোদ শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে জমতে শুরু করেছে চাকরিপ্রার্থীদের একাংশের ক্ষোভ৷ পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে এবার নিজের ফেসবুক পেজে চাকরিপ্রার্থীদের বড়সড় আশ্বাস দিলেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
উল্লেখ্য, অর্থ দপ্তরের অনুমোদন সাপেক্ষেই উচ্চ প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি হয়েছিল ২০১৪ সালে৷ স্কুল সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে উচ্চপ্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়া নিয়ে চলছে মামলা৷ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পাঁচ বছর পরও উচ্চপ্রাথমিকে নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ হয়নি অনিয়মের জেরে৷ গত বছর ৪ অক্টোবর চূড়ান্ত মেধাতালিকা প্রকাশ হলেও নিয়োগ হয়নি৷ চলছে মামলা৷ ঝুলে রয়েছে ১৪ হাজার ৮৮ শূন্যপদ৷ অনিশ্চিত ৩০ হাজারের বেশি চাকরিপ্রার্থীর ভাগ্য৷ এখন দেখার বিষয় লকডাউন উঠে গেলে সেই সমস্ত চাকরিপ্রার্থীদের ভাগ্যে শিকে ছেঁড়ে কিনা।