শিলিগুড়ি: তিস্তাপাড়ে এখন হাতির আতঙ্ক! তিস্তাপাড় তো বটেই দাঁতালের অনুপ্রবেশ ঘটছে ভোরের আলো পর্যটন প্রকল্পেও। হাতি দর্শনে কেউ কেউ খুশি হলেও, পরপর দুদিন দাঁতালটি তাণ্ডব চালানোয় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন অনেকেই। ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে একটি হোটেল কর্তৃপক্ষকে। তবে এখন পর্যন্ত অর্কিড পার্ক এবং কটেজের কোনও ক্ষতি হাতিটি করেনি বলে পর্যটন দপ্তরের আধিকারিকদের দাবি।
গজলডোবা প্রকল্পে হাতির হানাদারি নতুন কোনও ঘটনা নয়। কিন্তু এবার সরাসরি ভোরের আলো প্রকল্পের মধ্যে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে একটি দাঁতাল। নতুন করে হাতির হানাদারি শুরু হয়েছে শুক্রবার রাত থেকে। শুক্রবারের পর শনিবার সন্ধ্যা এবং রবিবার ভোররাতে দাঁতালটি প্রকল্প এলাকায় ঢুকে তাণ্ডব চালায় বলে জানা গিয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, বৈকুণ্ঠপুর থেকে বেরিয়ে হাতিটি সরস্বতীপুর হয়ে ভোরের আলো প্রকল্পের ভিতর ঢুকে যাচ্ছে। এখন পর্যন্ত পাঁচটি নারকেল গাছ, দুটো রাবার গাছের পাশাপাশি ক্ষতি করেছে এখানে থাকা একটি হোটেলের গেট ও ফেন্সিং। হাতির পায়ের চাপে অনেক জায়গায় ভেঙে চুরমার হয়ে গিয়েছে পেভার্স ব্লক। বাজি ফাটিয়ে সার্চ লাইট জ্বালিয়ে দাঁতালটিকে ভোরের আলো প্রকল্প থেকে বের করা সম্ভব হয়েছে বলে জানান এখানে কর্মরত বেশ কয়েকজন। হোটেল মালিক প্রবীর শীল বলেন, ‘টানা দুদিন তিনবার হাতিটি হামলা চালাল। এই ক্ষতি পূরণ হবে কী করে? কেন হাতির ঢোকা বন্ধ করতে উদ্যোগ নেওয়া হবে না?’
স্থানীয়দের বক্তব্য, তিস্তাপাড়ে পলি জমে যাওয়ায় এবং এখন তিস্তাতে জল তেমন না থাকায় বৈকুণ্ঠপুর জঙ্গল থেকে সহজেই গজলডোবার ভোরের আলো প্রকল্প এলাকায় দাঁতালটি ঢুকে যেতে পেরেছে। একবার যখন দাঁতালটি ঢুকতে পেরেছে, তখন আরও হাতি ঢুকতে পারে বলেও আশঙ্কা করছেন অনেকে। তবে দাঁতালটি কটেজ সংলগ্ন এলাকায় ঢুকলেও কটেজের তেমন ক্ষতি করেনি বলে পর্যটন দপ্তরের আধিকারিকদের বক্তব্য।
পর্যটন দপ্তরের ডেপুটি ডিরেক্টর জ্যোতি ঘোষ বলেন, ‘দাঁতালটি কটেজের কোনও ক্ষতি করেনি। অক্ষত রয়েছে অর্কিড পার্কটি। নতুন করে যাতে কোনও হাতি এখানে ঢুকতে না পারে, তার জন্য বন দপ্তরের সঙ্গে আমরা আলোচনা করছি।’ ভোরের আলো প্রকল্পে রয়েছে ১৭টি কটেজ। পুজোর দিনগুলিতে প্রত্যেকটি কটেজই কার্যত বুকড রয়েছে। ওই সময় যদি হাতি ঢোকে, তাহলে কী হবে? কেউ কেউ হয়তো হাতি দর্শনে খুশি হবেন, কিন্তু পর্যটকদের মধ্যে আতঙ্কও দেখা দেবে। যেমনটা ঘটেছে শনিবার ওই হোটেলটির ক্ষেত্রে।