খোকন সাহা, বাগডোগরা: শান্তশিষ্ট স্বভাবের হাতিটি হঠাৎই যেন বদলে গিয়েছে। ঢংগিবাবা এখন এলাকার ত্রাস। বাগডোগরার (Bagdogra Forest) বনাঞ্চলের পাশাপাশি এবং লোকালয়ে মাঝেমধ্যে দেখা দেওয়া মাকনা হাতিটি এতদিন কোনও সমস্যা করেনি। মানুষ বা কুকুরের চিৎকার, কাউকেই সে আমল দিত না। নিজের মর্জিমতো দুলে দুলে চলার সুবাদেই ‘ঢংগিবাবা’ নাম পাওয়া। কিন্তু মস্তি হওয়ার পর হাতিটি পালটে গিয়েছে। অভিযোগ, নেপালে (Nepal) চলে গিয়ে হাতিটি (Elephant Attack) আটজনকে খুন করেছে। বাগডোগরায় ফিরে এসে লোকালয়ে ঢুকে সেটি রোজই অত্যাচার চালাচ্ছে। লোকজন দেখলেই মারমুখী হয়ে তেড়ে যাচ্ছে।
ঘটনায় বন দপ্তর যথেষ্টই চিন্তায়। বাগডোগরার রেঞ্জ অফিসার সোনম ভুটিয়া বললেন, ‘ঢংগিবাবা কয়েক দিন আগে নেপালে গিয়ে আটজনকে মেরে ফেলেছে। তারপর সেটি বাগডোগরায় ফিরে এসেছে। মস্তি হওয়ার ফলে মেজাজ হারিয়ে বারবার লোকালয়ে ঢুকে অত্যাচার চালানো এই হাতিটি থেকে সাবধান থাকা জরুরি। নইলে এখানেও অনেককে প্রাণ হারাতে হতে পারে। সবাইকে সাবধান করতে মাইকিং করা হবে।’
পরিবেশপ্রেমী সংগঠন ঐরাবতের তরফে অভিযান সাহা বলেন, ‘নেপালে ভারতীয় হাতিদের ঢোকা ঠেকাতে ওই দেশের বাসিন্দারা দুই দেশের সীমানায় বেড়া দিয়েছিলেন। তবে বর্তমানে ওই বেড়াটি ভেঙেচুরে গিয়েছে। তাই এখান থেকে বহু হাতি নেপালে ঢুকছে। পূর্ব নেপালে বর্তমানে ৪০টি হাতি রয়েছে। পানিঘাটা রেঞ্জের কলাবাড়ি জঙ্গলের ১৩টির মতো হাতির নেপালে যাতায়াত রয়েছে।’ হাতিটি নেপালে গিয়ে মানুষ মেরেছে বলে বনাধিকারিক দাবি করলেও এই হাতিটিই যে ঘটনাটি ঘটিয়েছে তা নিয়ে সমস্ত মহল নিশ্চিত নয়। পরিবেশপ্রেমী সংগঠন নেচার অ্যান্ড ওয়াইল্ডলাইফ অ্যাসোসিয়েশনের তরফে অনুজিত বসু বললেন, ‘গত এক মাসে নেপালে হাতির আক্রমণে বেশ কয়েকজনের মৃত্যু হলেও সবই যে ঢংগিবাবার কীর্তি তা নিশ্চিত নয়।’ তবে হাতির হানায় মানুষের মৃত্যুতে নেপাল উদ্বিগ্ন। সমস্যা মেটাতে ২১ জানুয়ারি নেপালের বামনডাঙ্গিতে বৈঠক ডাকা হয়েছে।