হরিশ্চন্দ্রপুর: শাসকদলের প্রাক্তন প্রধানের মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে মেরে মাথা ফাটিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল দলেরই নেতাদের বিরুদ্ধে। হরিশ্চন্দ্রপুর (Harishchandrapur) দু’নম্বর ব্লক এলাকার দৌলত নগর গ্রাম পঞ্চায়েতের ঘটনা। অভিযোগের তীর ওই ব্লকেরই শাসকদলেরই প্রাক্তন ব্লক সভাপতি ব্লক সভাপতি হযরত আলী এবং তৃণমূলের হরিশ্চন্দ্রপুর ২ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির কৃষি কর্মাধ্যক্ষ সামাউন ইসলামের বিরুদ্ধে। অভিযোগ দৌলত নগর গ্রাম পঞ্চায়েতে অনাস্থায় প্রধান নজিবুর রহমান অপসারিত হওয়ার পর ব্লক সভাপতি থাকাকালীন হযরত আলী সেই পদ পাইয়ে দেওয়ার জন্য কুড়ি হাজার টাকা নিয়েছিলেন। সেই নিয়েই চলছিল দ্বন্দ্ব। টাকা চাইতে গেলে দেওয়া হয়েছিল মিথ্যা মামলা। এরপরই প্রাক্তন প্রধানকে মারধরের ঘটনা সামনে আসে গতকাল। এদিকে আক্রান্ত তৃণমূলের প্রাক্তন প্রধানকে গতকালই হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই তার চিকিৎসা চলছে বলে জানা গেছে।
গতকাল রবিবার রাতে বাংরুয়া গ্রামে উরুষ মেলা থেকে ফিরছিলেন মোহাম্মদ নজিবুর রহমান। সেই সময় মাঝ রাস্তায় তাকে আটকে দেয় হজরত আলীর দুই ছেলে এবং সামাউন ইসলামের দলবল। মাথায় আগ্নেয়াস্ত্র ঠেকিয়ে লোহার রড দিয়ে মারধর করে তাঁকে রক্তাক্ত করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। বর্তমানে তিনি হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
নজিবুর রহমান জানান, হজরত আলীর দুই ছেলে এবং কৃষি কর্মাধ্যক্ষ সামাউন ইসলামের দলবল তাঁকে মারধর করেছে। তাঁর কাছ থেকে হজরত আলি কুড়ি হাজার টাকা নিয়েছিল। সেটা আমি চাওয়াতেই ওদের রাগ। প্রাক্তন ব্লক সভাপতি হজরত আলী বলেন, নজিবুরের তোলা সমস্ত অভিযোগ ভিত্তিহীন। দুর্নীতির জন্য ওর প্রধান পদ গেছে। সেই নিয়ে রাগ। কোন টাকা নেন নি বলেও দাবি করেন তিনি।
এদিকে গোটা ঘটনায় চরম অস্বস্তিতে শাসক দল। হরিশ্চন্দ্রপুর ২ নম্বর ব্লক তৃণমূল সভাপতি তবারক হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘দলের মধ্যে কোন দুর্নীতি বা গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নেই। নজিবুর রহমান যেটা অভিযোগ করেছে সেটা খতিয়ে দেখে দলের মধ্যেই মিটিয়ে নেওয়া হবে।’ সমস্ত ঘটনাকে তীব্র কটাক্ষ করেছে এলাকার বিজেপি নেতৃত্ব। উত্তর মালদা জেলা বিজেপির সাংগঠনিক সম্পাদক রূপেশ আগরওয়াল বলেন, ‘দলের মধ্যে পদ দেওয়ার জন্য এরা টাকার লেনদেন করছে। সেই নিয়ে নিজেদের মধ্যে মারামারি করতে গিয়ে পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠছে। এগুলোই তৃণমূলের সংস্কৃতি। মানুষ সবই দেখছে আগামী নির্বাচনে এর জবাব দেবে।’
আরও পড়ুন : রাখে হরি মারে কে! ট্র্যাক্টরের নীচে চাপা পড়েও বরাতজোরে প্রাণ রক্ষা দুজনের