প্রসেনজিৎ দাশগুপ্ত, নয়াদিল্লি: ২০১৩ সালে মুক্তি পেয়েছিল ‘অপেরা হাউজ কাণ্ড’ অবলম্বনে নীরজ পাণ্ডে পরিচালিত ‘স্পেশাল ২৬’। অক্ষয় কুমার, অনুপম খের অভিনীত সে সিনেমায় দেখা গিয়েছিল ‘নকল’ সিবিআই বনাম ‘আসলে’র টানটান সংঘাত। ছবির শেষে, নকল সিবিআই-রূপী অক্ষয় কুমার আসল সিবিআইয়ের চোখে ধুলো দিতে সক্ষম হলেও, বাস্তবে তা হল না। অবিকল বলিউডি সিনেমার আদলে নয়াদিল্লিতে (New Delhi) এক নকল সিবিআই অফিসারকে গ্রেপ্তার করল আসল সিবিআই অফিসাররা।
এমন অভাবনীয় কাণ্ডই ঘটেছে রবিবার মাঝরাতে নয়দিল্লিস্থিত তামিলনাড়ু সরকারের অতিথিশালায়। যেখানে নিজেকে সিবিআইয়ের পরামর্শদাতা, প্রাক্তন আইপিএস পরিচয় দেওয়া এক প্রতারককে রীতিমতো অপারেশন চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার আধিকারিকরা। আর এই গ্রেপ্তারি ঘিরেই হয়েছে রীতিমতো নাটক দিল্লির তামিলনাড়ু সরকারের গেস্ট হাউসে।
সিবিআই সূত্রে জানা যায়, ধৃত ব্যক্তির নাম কোমরেড্ডি শ্রীনিবাস। যিনি দিল্লিতে থেকে দীর্ঘদিন ধরে অগণিত লোককে প্রতারণা করেছেন নিজেকে সিবিআইয়ের পরামর্শদাতা, প্রাক্তন আইপিএস হিসেবে তুলে ধরে। দিল্লি পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত কয়েক মাসে কোমরেড্ডি শ্রীনিবাসের রুটিন। প্রতিদিন স্যুটেড-বুটেড হয়ে ধবধবে সাদা গাড়িতে চড়ে একের পর সরকারি আর বেসরকারি অফিসে যাতায়াত। বিভিন্ন সংস্থার আধিকারিকদের সঙ্গে ব্যক্তিগত আলাপচারিতার সুযোগে রাজধানীর এলিট সোসাইটিতে অবাধ প্রবেশ। সর্বোপরি ‘আপনার কাজ হয়ে যাবে’ বলে মোটা টাকা পকেটে ভরা ছিল তাঁর নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। অবসরপ্রাপ্ত আইপিএস, কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআইয়ের বিশেষ পরামর্শদাতা পরিচয় দেওয়া কোমরেড্ডি শ্রীনিবাসের প্রভাব এত বেশি হয়ে যায় যে, তার নিজের রাজ্য অন্ধ্রপ্রদেশের বাইরে বহু প্রভাবশালী রাজনীতিবিদের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ গড়ে ওঠে। পাল্লা দিয়ে বাড়তে থাকে তাঁর সম্পত্তির পরিমাণও। বেশ কিছু গুরুতর অভিযোগের ভিত্তিতে দীর্ঘদিন ধরে তাঁকে খুঁজছিল সিবিআই ও দিল্লি পুলিশ। অবশেষে রবিবার রাতে ‘জাল’ সিবিআই অফিসার কোমরেড্ডি শ্রীনিবাস পুরো ফিল্মি কায়দায় দিল্লির বুকে ‘আসল’ সিবিআইয়ের জালে ধরা পড়লেন।
আরও পড়ুন: J. P. Nadda | পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে শা-নাড্ডার সঙ্গে বৈঠকে বসবে রাজ্য বিজেপি