কার্তিক দাস, খড়িবাড়ি : লকডাউনের জেরে উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের খড়িবাড়ি খামার বন্ধ থাকায় কৃষি গবেষণার ক্ষেত্রে ব্যাপক ক্ষতির সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। গবেষণার কাজ বন্ধ থাকার পাশাপাশি খড়িবাড়ি ব্লকের একমাত্র মাটি পরীক্ষা কেন্দ্রের কাজকর্মও বন্ধ। ফলে কৃষকদের পরামর্শ দেওযার কাজও ব্যাহত হচ্ছে। উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়যে ডাইরেক্টর অফ রিসার্চ ডঃ অশোক চৌধুরী জানান, লকডাউনের জেরে কিছুটা সমস্যা তৈরি হয়েছে। তবে বিকল্প পদ্ধতিতে কীভাবে কৃষকদের সাহায্য করা যায় তার চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে।
খড়িবাড়ি পূর্ব হাওদাভিটায় প্রায় ২৩ একর জমিতে রয়েছে উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় খড়িবাড়ি খামার। এখানে মূলত দানাশস্য, ডাল, ধান, গম সহ বিভিন্ন ফসলের উপর গবেষণা ও উন্নয়নমূলক কাজ হয়। এই খামারে উচ্চ ফলনশীল ও উন্নত প্রজাতির ফসল, উন্নত চাষবাস পদ্ধতি নিযে গবেষণা হয়। এছাড়া বিভিন্ন এলাকার মাটি পরীক্ষা ও মরশুমি সবজি ও ফসল চাষ নিযে কৃষকদের পরামর্শ দেন গবেষকরা। এছাড়া গবেষণাকেন্দ্রে তৈরি রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন উন্নত প্রজাতির বীজ কৃষকদের বিতরণ করা হয়। বর্তমানে এখানে দুজন গবেষক কর্মরত রয়েছেন। তাঁদের তত্ত্বাবধানে তিনজন রিসার্চ স্কলার কাজ করেন। এছাড়া ৬ জন কর্মী ও ৬ জন ফিল্ড ওযার্কার রয়েছেন। কিন্তু ২৪ মার্চ থেকে খামার বন্ধ হযে যাওযায় সব ধরণের গবেষণা বন্ধ। নিরাপত্তাকর্মী ছাড়া খামারে কেউ নেই। লকডাউনের আগে খামারে ধান, গম, ভুট্টা, বেগুন, ওল ও লংকা চাষের ওপর গবেষণা চলছিল। গবেষণার জন্য যে সব চাষ করা হযেিল, পরিচর্যার অভাবে সেখানে আগাছা জন্মেছে। উন্নত প্রজাতির উচ্চফলনশীল গম পেকে গেলেও কাটা যাচ্ছে না ফলে গমের বীজও সংরক্ষণ করা যাচ্ছে না। মাটি পরীক্ষা কেন্দ্রটি বন্ধ থাকায় স্থানীয় কৃষকরা সমস্যায় পড়েছেন। চাষবাসের প্রযোজনীয় পরামর্শও পাচ্ছেন না তাঁরা।
খড়িবাড়ি খামারের ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক অধ্যাপক ডঃ ওযাসিম রেজা জানান, লকডাউনের জন্য কিছু সমস্যা দেখা দিয়েছে। তবে গবেষণার ক্ষতি সম্পর্কে তিনি কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তবে গবেষণার ক্ষেত্রে ক্ষতির বিষয়টি স্বীকার করে নিয়েছেন ডাইরেক্টর অফ রিসার্চ ডঃ অশোক চৌধুরী। তিনি বলেন, লকডাউনের পর যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তাতে সবকিছুই টালমাটাল হযে গিয়েছে। গবেষণার ক্ষেত্রেও এর প্রভাব পড়েছে। য়তটা সম্ভব কাজ চলছে। কর্মীদের কাজ করতে বাধ্য করা সম্ভব নয়। লকডাউন ওঠার পর ফের পুরোদমে গবেষণার কাজ শুরু হবে বলে আশাপ্রকাশ করেন তিনি।