নাগরাকাটা: প্রাইভেট-পাবলিক পার্টনারশিপ (পিপিপি) মডেলে ব্যতিক্রমী সবজি চাষে নামছে কালিম্পং-এর কৃষকরা। এরজন্য বেছে নেওয়া হয়েছে লাল বাঁধাকপি, রঙিন ক্যাপসিকাম, ব্রোকোলির মতো ফসল। পলি হাউসে ওই চাষ হবে। যার পোশাকি নাম ‘বাম্বু স্ট্যাকচার্ড ন্যাচারালি ভেন্টিলেটেড পলি হাউস’। জেলার ৩ ব্লকের ৫০০ চাষিকে এর আওতায় নিয়ে আসছে হর্টিকালচার দপ্তর। কালিম্পং (Kalimpong) ১ নম্বর ব্লকের সিন্দেবং-এর ২০০ চাষিকে ইতিমধ্যেই প্রশিক্ষণ প্রদানের কাজ শেষ হয়ে গেছে। এর বাইরে রয়েছে পেডং ব্লকের কাগে গ্রাম পঞ্চায়েতের ১২৫ জন ও গরুবাথান ব্লকের তোদে এলাকার আরও ১৭৫ জন। তাঁদেরও দ্রুত পলি হাউস স্থাপন ও চাষাবাদের কৌশল নিয়ে প্রশিক্ষন প্রদানের কাজ শুরু হয়ে যাবে। জেলা হর্টিকালচার আধিকারিক সঞ্জয় দত্ত বলেন, ‘পিপিপি মডেলে চাষ হবে। কৃষকরা প্রথমে বেসরকারি সংস্থার কাছ থেকে চারা কিনবেন। ফসল উৎপাদন হওয়ার পর ওই সংস্থাই তা কৃষকদের কাছ থেকে কিনে নেবে। এরজন্য ব্যাক অ্যান্ড ভিত্তিতে বা শেষে চাষের আয়তনের প্রতি বর্গ ফুট পিছু ৭০ টাকা করে ভর্তুকিও চাষিরা পাবেন।’
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রথমে ৪-৫টি পলি হাউসে চারা তৈরির কাজ শুরু হবে। পুরোটাই প্লাগ ট্রে তে কোকোপিটের মাধ্যমে। অর্থাৎ মাটির সঙ্গে চারার কোনও সম্পর্ক থাকবে না। ফলে রোগমুক্ত চারা মিলবে। এরপর ওই চারা চাষিরা বেসরকারি সংস্থার কাছ থেকে অর্ধেক দামে কিনে নেবে। পরে ফসল পরিণত হওয়ার পর বিক্রির সময় চারা ক্রয় বাবদ বকেয়া চাষিরা মিটিয়ে দেবেন। অসময়ের ও ব্যতিক্রমী যে সমস্ত সবজি চাষ শুরু হচ্ছে সেগুলির বাজার দর সবসময়েই চড়া থাকে বলে হর্টিকালচার দপ্তর জানাচ্ছে। সম্প্রতি, সিন্দেবং-এ যে প্রশিক্ষণটি দেওয়া হয় সেখানে বিপণনের সঙ্গে জড়িত একাধিক সংস্থার প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন। পলি হাউজ তৈরির প্রকল্পটির সরকারী নাম ‘ডু ইট ইয়োরসেল্ফ।’
হর্টিকালচার দপ্তর জানাচ্ছে, বর্তমানে গোটা কালিম্পং জেলাজুড়েই নানা ধরনের চাষবাসে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করার কাজ শুরু হয়েছে। এজন্য পলি হাউসের কিট দপ্তরের পক্ষ থেকেই দেওয়া হচ্ছে। জিটিএ-র তরফে যে কৃষি নীতি নেওয়া হয়েছে তার মূল কথা ‘ওয়ান ভিলেজ-ওয়ান ক্রপ।’ এর অর্থ পাহাড়ের প্রতিটি গ্রামকে একেকটি আলাদা ফুল, ফল, শাক-সবজি চাষের জন্য সুপরিচিত করে তোলা। এজন্য ইতিমধ্যেই তোদে-তাংদা এলাকাকে লিলিয়াম ফুল, লোলেকে অ্যাভোকাডো নামে এক প্রকারের ফল, সিন্দেবংকে স্ট্রবেরী চাষের জন্য চিহ্নিত করে সেই মোতাবেক পদক্ষেপ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন : কুশিয়ারবাড়িতে ভাওয়াইয়া কর্মশালা