রায়গঞ্জ: রায়গঞ্জ শহর লাগোয়া বাহিনের মহারাজপুর গ্রামে কৃষি জমিতে বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন হয়েছে কালো গমের চাষ। কালো গমের আটাকে মধ্যবিত্তের হাতের নাগালে আনতে পেরে খুশি রায়গঞ্জ সুভাষগঞ্জের চাষি দীপক সরকার। রায়গঞ্জ ব্লকের ৮ নম্বর বাহিন গ্রাম পঞ্চায়েতের মহারাজপুর গ্রামে সাত বিঘা জমিতে কালো গমের চাষ করেছেন দীপকবাবু। গত বছর তিন বিঘা জমিতে কালো গম চাষ করে ব্যাপক লাভ এসেছিল। তাই এবছর সাত বিঘার কিছু বেশি জমিতে কালো গম চাষ করেছেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘এই কালো গমের আটার প্রচুর খাদ্যগুন আছে। এই আটা গ্লুটেন ফ্রি এবং এর গ্লাইসেমিক ইনডেক্স খুবই কম। সাধারণ গমে অ্যান্থোসায়ানিন অ্যান্টি অক্সিডেন্ট যেখানে থাকে ৫ পিপিএম, সেখানে কালো গমে থাকে দেড়শ থেকে ২০০ পিপিএম। সাধারণ গম থেকে এই গমে ৬০ গুণ বেশি জিংক ও আয়রন থাকে।’ দীপকবাবু আরও বলেন, ‘জেলায় এবছর একমাত্র আমরাই সম্পূর্ণ জৈব পদ্ধতিতে বাণিজ্যিকভাবে কালো গম চাষ করেছি। কিছুটা হারভেস্ট করা হয়েছে, বাকি জমির গম পাকার পথে।’
একটি কৃষি সমবায় সমিতির সম্পাদক চিন্ময় দাস বলেন, ‘কালো গমের আটার রুটির অনেক রকম উপকারিতা আছে। এই আটা খেতেও অসাধারণ। এর স্বাদ না খেলে জানতে পারতাম না। পশ্চিমবঙ্গে ফিয়ামের জৈব চাষিরাই সর্বপ্রথম বাণিজ্যিকভাবে কালো গম চাষ শুরু করেছে। আগামীদিনে যাতে আরও বেশি সংখ্যক চাষি এই গম চাষ করে সেজন্য উৎসাহ দিচ্ছি আমরা।’
রায়গঞ্জ ব্লকের সহকৃষি অধিকর্তা তুষার কান্তি চৌধুরী বলেন, ‘এটা আতমা প্রকল্পের অন্তর্গত একটি প্রচেষ্টা।পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কৃষি তথ্য ও উপদেষ্টা কেন্দ্রের আর্থিক সহায়তায় এই প্রকল্প চলছে। এতে মোটামুটি ভাবে আমরা সফল। আগামী দিনে এই সফলতাকে আমরা আরও প্রত্যন্ত অঞ্চলে ছড়াতে চাই। অ্যান্টি অক্সিডেন্ট, জিংক, আয়রন যুক্ত খাওয়ার সাধারণ মানুষের নিত্যনৈমিত্তিক প্রয়োজন। এছাড়াও গ্লুটেন ফ্রি এবং গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম থাকার কারণে এই গমের আটা স্বাস্থ্যকর। সাধারণ আটার চেয়ে এই আটাই শরীরের পক্ষে উপকারী বলে দাবি চিকিৎসকদের।’