মাদারিহাটঃ চা বাগানে বন দপ্তরের পাতা খাঁচায় বন্দি হল একটি স্ত্রী চিতাবাঘ। বুধবার আলিপুরদুয়ারের গ্যারগান্ডা চা বাগানের মানদ্রাজি লাইনের ১৬ নম্বর সেকশনে খাঁচাবন্দি অবস্থায় চিতাবাঘটিকে দেখতে পান স্থানীয়রা। পরে বনকর্মীরা এসে চিতাবাঘটিকে উদ্ধার করে নিয়ে যান।
জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের সহকারী বন্যপ্রাণ সংরক্ষক দেবদর্শন রায় জানান, সম্পূর্ণ সুস্থ অবস্থায় চিতাবাঘটিকে দক্ষিণ খয়েরবাড়ি ব্যাঘ্র পুনর্বাসন কেন্দ্রে আনা হয়েছে। চিতাবাঘটির বয়স ৭-৮ বছর হবে। এই নিয়ে বর্তমানে ১৯টি চিতাবাঘ ও ৩টি চিতাশাবক এখানে রয়েছে। তবে চিতাবাঘটির কোনো শাবক ছিল কিনা, সেদিকে নজর রাখছেন বনকর্মীরা। এদিকে, নতুন অতিথির যাতে আপ্যায়নে কোনো ত্রুটি না হয় সেজন্য কড়া নজরদারি রাখছেন বনকর্মী পার্থসারথি সিনহা। নিয়ম মেনেই চিতাবাঘটিকে সাড়ে তিন কিলোগ্রাম মাংস খেতে দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ সচেতনতার নজির, গ্রামে ফিরে স্বেচ্ছা নির্বাসনে ৪ শ্রমিক
দেবদর্শনবাবু জানান, চিতাবাঘটিকে খাঁচায় রাখার আগে স্যানিটাইজার দিয়ে জীবাণুমুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া যাঁরা মাংস জোগান দিচ্ছেন তাঁদেরও স্যানিটাইজ করা হচ্ছে। যে বনকর্মী দুজন ওদের সব সময় দেখাশোনা করছেন তাঁদের এন ৯৫ মাস্ক, গামবুট ও গ্লাভস দেওয়া হয়েছে। তবে পিপিই (পার্সোনাল প্রোটেকশন ইকুইপমেন্ট) এখনও দেওয়া হয়নি। এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য আধিকারিককে জানানো হয়েছে। এছাড়া ভেতরে প্রবেশের আগে পটাশিয়াম পার ম্যাঙ্গানেট দিয়ে পা ধুয়ে তবেই বনকর্মীদের প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে।
আরও পড়ুনঃ লকডাউনে অন্নসংস্থান করতে না পেরে আত্মহত্যার হুঁশিয়ারি জামালপুরের তাঁতিদের
অন্যদিকে, লকডাউনকে উপেক্ষা করেই খাঁচাবন্দি চিতাবাঘ দেখতে ভিড় জমান কয়েক শত মানুষ। চা বাগানের শ্রমিকরা জানিয়েছেন, গোটা বাগানই যেন চিতাবাঘের চিড়িয়াখানায় পরিণত হয়েছে। প্রায়ই এখানে চিতাবাঘ ধরা পড়ছে। এ নিয়ে গত দেড় বছরে বাগানে ৬টি চিতাবাঘ ধরা পড়ল। এর আগে স্থানীয় তিনটি চা বাগানে চিতাবাঘের হানায় প্রাণ হারিয়েছে ৬ জন।
গ্যারগান্ডা চা বাগানের অঞ্জন মাহাত জানান, মানুষ এমনিতেই করোনা ভাইরাসের আতঙ্কে ভুগছেন। এরমধ্যে আবার চিতাবাঘের আতঙ্ক বাড়তি সমস্যা তৈরি করেছে।