বর্ধমান, ২৯ জানুয়ারিঃ বৈদ্যুতিন যন্ত্র নির্মাতা সংস্থার ম্যানেজারকে অপহরণের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ৪ জনকে বর্ধমান থানার পুলিশ গ্রেপ্তার করল। বৃহস্পতিবার মালদার ইংরেজবাজারের একটি হোটেল হানা দিয়ে বর্ধমান পুলিশ অপহৃতকেও উদ্ধার করেছে। শুক্রবার রাতে অপহৃত ও অপহরণকারীদের নিয়ে পুলিশ বর্ধমান পৌছায়। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতরা হল শেখ সাজ্জাদ, শেখ মনরুজ,মহম্মদ সাকির ও আব্দুল হান্নান। মালদার মানিকচকে বাড়ি সাজ্জাদ ও মনরুজের। অপর ২ ধৃত মানিকচক সংলগ্ন পুকুরিয়া গ্রামের বাসিন্দা। ধৃতদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করে পুলিশ শনিবার ধৃতদের বর্ধমান আদালতে পেশ করবে।
জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কল্যাণ সিংহ রায় জানিয়েছেন, অপহরনকারীরা যে ব্যক্তিকে অপহরণ করেছিল তাঁর নাম সুজিত কুমার চক্রবর্তী। তিনি বর্ধমান শহরের নবাবহাট এলাকার একটি বেসরকারি বৈদ্যুতিন যন্ত্র নির্মাতা একটি সংস্থার এরিয়া ম্যানেজার। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, বৃহস্পতিবার বিকেলে ওই সংস্থার প্রকল্প আধিকারিক প্রিয়তম কুমার বসুর কাছ থেকে অপহরণের বিষয়টি তাঁরা জানতে পারেন। এরপরেই তদন্তে নেমে বর্ধমান থানার তদন্তকারী পুলিশ দল গিয়ে মালদার জন্য রওনা হয়ে যান। মালদা জেলা পুলিশের সহযোগিতায় নিয়ে ইংরেজবাজারের একটি হোটেলে অভিযান চালানো হয়। অপহৃত ও ধৃতদের সঙ্গে কথা বলে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যাবে বলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জানিয়েছেন।
পুলিশ সূত্রের খবর, সুজিতবাবুর বাড়ি হগলির মানকুণ্ডুতে। কর্মসূত্রে তিনি বর্ধমান শহরের গোদা এলাকায় ভাড়া বাড়িতে থাকতেন। বৃহস্পতিবার নবাবহাটের কাছে রাস্তার উপর দাঁড়িয়েছিলেন সুজিতবাবু। সেই সময় একটি যাত্রীবাহী ছোট গাড়িতে তাঁকে তুলে নিয়ে চলে যায় অপহরণকারীরা। তারপর ওইদিনই দুপুরে বেসরকারি সংস্থার প্রকল্প আধিকারক প্রিয়তম কুমার বসুর কাছে অচেনা নম্বর থেকে ফোন আসে। যিনি ফোন করেছিলেন তিনি, সুজিত বাবুকে ছাড়ার জন্য ১ কোটি ৩০ লক্ষ টাকা দাবি করেছিলেন বলে অভিযোগ। এমন ফোন আসার পর প্রিয়তম বাবু বর্ধমান থানার দ্বারস্থ হন। সাইবার থানা ও পুলিশের বিশেষ বিভাগকে কাজে লাগিয়ে বর্ধমান থানা জানতে পারে, যে ফোন নম্বর থেকে ফোন করা হয়েছে, সেই ফোনটি মালদায় রয়েছে। এরপরেই বর্ধমান থানার পুলিশ মালদার উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছিল।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে বর্ধমানের বেসরকারি বৈদ্যুতিন সংস্থাটি ও মহারাষ্ট্রের একটি সংস্থা একত্রে রাজ্য বিদ্যুৎ পর্ষদের কাজ করেছিল। সেই কাজের জন্যে মালদা থেকে ৬০০ শ্রমিক নেওয়া হয়েছিল। মজুরি বাবদ তাঁদের পাওনা ছিল ১ কোটি টাকা। সেই টাকা না পেয়ে অভিযুক্তরা মহারাস্ট্রের সংস্থাটির সহযোগী বর্ধমানের সংস্থার কর্মীকে অপহরণ করে টাকা আদায় করার ছক কষেছিল।