দীপঙ্কর মিত্র, রায়গঞ্জ : লকডাউনের মধ্যে রায়গঞ্জ ব্লকের বিভিন্ন গ্রামে অবৈধভাবে চলছে মদ ও জুয়ার ঠেক। কোথাও কোথাও আবার পিকনিকও চলছে। লকডাউনের জন্য ভিন রাজ্য থেকে যুবকরা গ্রামে চলে আসায় সারাদিন চলছে আড্ডা। বাড়িতে বাড়িতে চলছে মদের আড্ডা এবং জুয়ার ঠেক। যেখানে রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় সরকার বারবার সকলের কাছে আবেদন করছে বাড়িতে থাকুন এবং সুস্থ থাকুন, কোথাও কোনো ভিড় করবেন না। সেই নির্দেশিকাকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে গ্রামাঞ্চলের মানুষ বিনোদনে মেতেছেন বলে অভিযোগ।
রায়গঞ্জ ব্লকের রাঙ্গাপুকুর, নারায়ণপুর, বরুয়া, রায়পুর, পিপলান, নরম, বাহিন সহ বিভিন্ন গ্রামে চলছে মদ ও জুয়ার আসর। ঠেকগুলিতে ৪০ থেকে ৫০ জন ভিড় করছেন। আবার চলছে পিকনিক। রায়পুর নিবাসী প্রণব দেবনাথ বলেন, বরুয়া অঞ্চলের বিভিন্ন গ্রামে অবৈধভাবে মদ ও জুয়ার ঠেক চলছে। আমরা এলাকার যুবকরা বিভিন্ন ঠেকে গিয়ে বোঝাচ্ছি, লকডাউনের সময় এভাবে ভিড় করা করা যায় না। প্রত্যেককে বাড়িতে থাকার জন্য আবেদন করছি। তবে ঠেকের আড্ডা কিছুটা কমেছে।
রূপাহারের বাসিন্দা সুব্রত দেবপাল বলেন, দু-তিনজন মিলে বিভিন্ন গ্রামে গিয়ে গ্রামের মানুষকে বোঝাচ্ছি। বাইরে থেকে শয়ে শয়ে যুবক চলে আসায় অনেকেই নিজের ভালোটা বুঝতে পারছে না। আমাদের কাছে খবর এসেছে, বিরঘই অঞ্চলের কয়েকটি গ্রামে দিবারাত্রি বসছে মদ ও জুয়ার ঠেক। এগুলি বন্ধ করতে গ্রামের পঞ্চায়েত সদস্য, প্রধান ও উপপ্রধানদের উদ্যোগ নিতে হবে।
এদিকে গত রবিবার রাতে গ্রামের মদ ও জুয়ার ঠেকগুলিতে হানা দেয় পুলিশ। প্রত্যেককে বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। সেইসঙ্গে এলাকার মানুষদের মদ ও জুয়ার ঠেক হলেই পুলিশে অভিযোগ জানানোর জন্য বলা হয়েছে। ১২ নম্বর বরুয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান ধবেশ্বর বর্মন বলেন, গ্রামের মানুষদের সতর্ক করা হচ্ছে কোথাও যেন মদ ও জুয়ার ঠেক না হয়। পিকনিকও করা যাবে না। এখন এগুলির সময় নয়। আমরা সতর্ক না হলে করোনা মহামারির আকার নেবে।
১৩ নম্বর কমলাবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান প্রশান্ত দাস বলেন, আমরা গ্রামের মানুষকে সতর্ক করে দিয়েছি কোথাও মদ ও জুয়ার ঠেক করা যাবে না। এই সব ঠেক হলে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে। কারন এই সময় কোথাও কোনো জমায়েত করা যাবে না। যদিও সূত্রের খবর, পঞ্চায়েত এবং প্রশাসনের নির্দেশ উপেক্ষা করেই গ্রামগুলিতে আজও বিভিন্ন জায়গায় মদ ও জুয়ার ঠেক বসছে। রায়গঞ্জ ব্লক সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক রাজু লামা বলেন, পুলিশের মোবাইল ভ্যান নিয়মিত নজরদারি চালাচ্ছে। বিশেষ নজরদারি চালানোর জন্য আইসিকে বলে দেওয়া হবে।