নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা : দেয়ালে পিঠ ঠেঁকে যাওয়া ইস্টবেঙ্গল খোঁচা খাওয়া বাঘের মতো ভযংকর! ময়দানী মিথটাকেই ভুল প্রমাণ করতে বসেছেন রবি ফাওলার এবং তাঁর ভুলে ভরা স্ট্র্যাটেজি। ডার্বির পর নর্থ ইস্ট। আরও একটা ম্যাচ দেখিয়ে দিল লাল-হলুদের কঙ্কালসার অবস্থাকে। ১৯ ম্যাচে জয় মাত্র ৩টিতে। একশো বছরে পা দেওয়া ইস্টবেঙ্গলে এটাই সবচেয়ে খারাপতম পারফরমেন্স কি না তা নিয়ে চর্চা চলতেই পারে।
দলের এই ব্যর্থতা নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল ঘরের ছেলে সৌমিক দে-কে। একরাশ ক্ষোভ প্রকাশ করে লাল-হলুদের প্রাক্তন সাইডব্যাক বললেন, এই দল নিয়ে যত না বলা যায় ততই ভালো। যেদিকে তাকানো যাবে সেখানেই শুরু ব্যর্থতা। এমন শ্রীহীন দশা কেন ইস্টবেঙ্গলের? সৌমিকের কথায়, আইএসএল হোক কিংবা অন্য কোনও টুর্নামেন্ট। জিততে গেলে লড়াই করতে হয়। সেই ফাইটিং স্পিরিটটাই তো নেই লাল-হলুদের খেলায়।
লড়াকু মানসিকতা দূরে থাক, টিম-বন্ডিংটাই যে এসসি ইস্টবেঙ্গলে নেই, সেটা ফের একবার স্পষ্ট দলের সহকারী কোচ টনি গ্র্যান্টের কথায়। নিজেদের ব্যর্থতা আড়াল করতে ফের একবার আঙুল তুললেন দলের ভারতীয় ফুটবলারদের মান নিয়ে। তাঁর তোপ, মরশুমের শুরু থেকে যে দল পেয়েছি সেটা আই লিগের জন্য উপযুক্ত, আইএসএলের জন্য নয়। সেই বাস্তব সত্যকে মেনে নিতে হবে। এর আগে ফাওলারও একইভাবে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছিলেন ভারতীয় ফুটবলারদের।
লিগের শেষ ম্যাচ বাকি থাকলেও এখন থেকে পরের মরশুম নিয়ে ভাবতে শুরু করে দিয়েছে ফাওলার-গ্র্যান্টরা। সেই বার্তা দিয়ে রাখলেন লাল-হলুদের সহকারী কোচ। বললেন, ভালো দল গঠনের লক্ষ্যে ট্রান্সফার উইন্ডোতে ক্লাবকে ঝাঁপাতে হবে। (নর্থ ইস্ট ম্যাচে) জেজেকে সামনে রেখে আমরা নতুনদের সুযোগ দিয়েছিলাম। তারা কেউ নিজেদের প্রমাণ করতে পারেনি। দলের ভালোমানের ফুটবলারের অভাব রয়েছে। সঙ্গে যোগ করেছেন, মরশুমের শুরুতে দলে কজন ভারতের অনূর্ধ্ব-২৩, ১৯-এ খেলা ফুটবলার রয়েছে, তা দেখতে আগ্রহী ছিলাম। একজনকেও খুঁজে পাইনি। নর্থ ইস্টের বিরুদ্ধে ভুল করলেও সার্থক গলুইয়ে পাশে দাঁড়াচ্ছেন গ্র্যান্ট। সার্থকের মতো ভারতীয় ফুটবলার প্রযোজন সেই বার্তাও দিয়ে রাখলেন তিনি।
তবে গ্র্যান্টের উলটো সুরই শোনা গেল প্রাক্তনী সৌমিকের গলায়। বললেন, ড্যানি ফক্সের মতো শ্লথ ডিফেন্ডার নিয়ে ম্যাচ জেতা যায় না। বিদেশি হিসেবে যারা খেলছেন তাদের অধিকাংশ নিম্নমানের। লাল-হলুদ জার্সি গায়ে চাপানোর যোগ্য নন। সঙ্গে জানাতে ভুললেন না, ফাওলার ভালো ফুটবলার হতে পারেন, বড় কোচ নন। ৩-৫-২ ফর্মেশন থেকে ঘনঘন প্রথম একাদশ বদলানো কোচের সব সিদ্ধান্ত ভুলে ভরা। হাজারো প্রশ্নবাণে এইভাবে জর্জর এখন এসসি ইস্টবেঙ্গল।