উত্তরবঙ্গ ব্যুরো: উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় সাড়ম্বরে পালিত হল হনুমান জয়ন্তী। এই হনুমান জয়ন্তী উপলক্ষ্যে শোভাযাত্রা এবং দুদিন ব্যাপী ভজন, কীর্তন ও যজ্ঞের আয়োজন করা হল ওদলাবাড়িতে। শ্রী হনুমান সেবা সমিতির ব্যবস্থাপনায় ওদলাবাড়ি রাধাকৃষ্ণ মন্দির প্রাঙ্গনে ১৭তম বর্ষের হনুমান জয়ন্তী মহোৎসব পালন করা হয়েছে। আয়োজক কমিটির সভাপতি রাধেশ্যাম ঠাকুর এবং সম্পাদক বিজয় গুপ্তা বলেন, ‘দুদিন ব্যাপী উৎসবের প্রথম দিন বাংলা নববর্ষে গনেশ বন্দনা, কলস স্থাপন এবং শ্রী রামায়ণ অখন্ড পাঠের পর শনিবার সকাল থেকে বালাজি মহারাজের পুজার্চনা, যজ্ঞ, ভোগ বিতরন ইত্যাদি ধর্মীয় অনুষ্ঠান হয়। বিকেলে ব্যান্ড, ঢোল বাদ্যযন্ত্র সহযোগে বিশাল এক র্যালি ওদলাবাড়ির বিভিন্ন পথ পরিক্রমা করে।
পাশাপাশি হনুমান জয়ন্তী উপলক্ষ্যে চ্যাংরাবান্ধায় একটি শোভাযাত্রা বের করা হয়। সমস্ত অনুষ্ঠানের জন্য মেখলিগঞ্জ থানার ওসি রাহুল তালুকদারের নেতৃত্বে নিরাপত্তার ব্যবস্থাও করা হয়েছিল। চ্যাংরাবান্ধা, হনুমান জয়ন্তী উদযাপন কমিটির তরফে প্রীতম আগরওয়াল, পবন কুমার ঝা প্রমুখ বলেন, ‘আগামী দিনে এই উৎসবকে কেন্দ্র করে আরও নানা পরিকল্পনা রয়েছে।‘
আলিপুরদুয়ার জেলার মাদারিহাট-বীরপাড়া ও ফালাকাটা ব্লকে হনুমান জয়ন্তী উৎসবে মানুষের ঢল নামল শনিবার। এদিন বিভিন্ন এলাকায় শোভাযাত্রায় অংশ নেন পুণ্যার্থীরা। এ উপলক্ষ্যে পুলিশি তৎপরতা নজরে পড়েছে। পুজো কমিটির সভাপতি রাজকুমার লাখোটিয়া জানান, দুইদিন ব্যাপী পুজো ও ভাগবত পাঠের আয়োজন করা হয়। শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়েছে উৎসব।
হনুমান জয়ন্তী উপলক্ষ্যে বানারহাট মাড়োয়ারি সেবা সমিতি শিব মন্দির (হাটখোলা) ও জাতীয় সড়ক হনুমান মন্দির কমিটির আয়োজনে শোভাযাত্রা বের করা হয়। বানারহাট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি অশোক কন সাল জানান, এই শোভাযাত্রায় হনুমান, রামের ভজন কীর্তনে শতাধিক ভক্ত সমাবেশ হয় এবং মহিলাদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।
অন্যদিকে, হনুমান জয়ন্তীকে ঘিরে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ছবি ফুটে উঠলো নাগরাকাটায়। হিন্দু সম্প্রদায়ের ওই ধর্মীয় অনুষ্ঠানের শোভাযাত্রায় অংশ নেওয়া প্রত্যেককে পানীয় জল ও আমের সরবত খাওয়াতে এগিয়ে আসে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়দের যৌথ মঞ্চ অল ডুয়ার্স মাইনোরিটি ডেভলপমেন্ট জয়েন্ট কাউন্সিল ও ডুয়ার্স মিল্লাত ই ইসলামিয়ার ( ডিএমআই) সদস্যরা। অল ডুয়ার্স মাইনোরিটি ডেভলপমেন্ট জয়েন্ট কাউন্সিলের চেয়ারম্যান সন্তোষ গুরুং ও ভাইস চেয়ারম্যান কাদের আলি বলেন, ‘সৌভ্রাতৃত্ব ও একতাই আমাদের মূল শক্তি। ধর্ম যার যার, উৎসব সবার।’ হনুমান জয়ন্তীর বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রাকে ঘিরে একতার ছবি ফুটে ওঠে লুকসানেও।