প্রসেনজিৎ দাশগুপ্ত, নয়াদিল্লি: ভরাডুবি হতে চলেছে মোদির ‘হর ঘর জল’ প্রকল্পের! দেশের সর্বত্র, বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলের মানুষের ঘরে বিশুদ্ধ পানীয় জল পৌঁছে দেওয়ার জন্য ‘হর ঘর জল’ প্রকল্পের বাস্তবায়ন, এই মুহূর্তে বিশবাঁও জলে৷ প্রধানমন্ত্রীর মস্তিষ্কপ্রসূত ‘হর ঘর জল’ প্রকল্পের প্রাথমিক পর্বের যাবতীয় কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে৷ নির্ধারিত সময়সীমা শেষের আগে দেশের বিভিন্ন রাজ্যে প্রকল্পের অগ্রগতি খতিয়ে দেখতে গিয়ে দেখা গিয়েছে, দেশের ১৩টি রাজ্যে এখনও নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা যায়নি, কবে শেষ হবে তা-ও বলা যাচ্ছে না এখনই৷ এর মধ্যে যোগী রাজ্য উত্তর প্রদেশের ৬৪,০০০ গ্রামে শুরুই হয়নি এই প্রকল্পের কাজ৷ পিছিয়ে থাকা অন্যান্য রাজ্যগুলির মধ্যে আছে ঝাড়খণ্ড, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড়, অন্ধ্রপ্রদেশ, কেরল, অসম এমনকি পশ্চিমবঙ্গও৷ দেশের অধিকাংশ বড় বড় রাজ্যগুলিতে ‘হর ঘর জল’ প্রকল্পের কাজের এই হাল দেখে জল শক্তি মন্ত্রকের উচ্চপদস্থ কর্তারা রেগে আগুন৷ আগামী বছরের মধ্যে কিভাবে রাজ্যগুলি তাদের অসম্পূর্ণ কাজ শেষ করবে সেই বিষয়ে তাদের পরিকল্পনা রিপোর্ট জমা দেওয়ার কথা জানানো হয়েছে৷ সরকারি হিসেব অনুযায়ী, দেশের মাত্র ৮ শতাংশ গ্রামীণ বাড়িতে এখনও পর্যন্ত পানীয় জল পাঠানো সম্ভব হয়েছে৷ কিন্তু কেন দেশের বড় ১৩টি রাজ্য ‘হর ঘর জল’ প্রকল্পের প্রাথমিক লক্ষ্যমাত্রা পূরণে পিছিয়ে পড়ছে? রাজধানী দিল্লিতে কেন্দ্রীয় জল শক্তি মন্ত্রকের কর্তাদের একাংশ দাবি করছেন, রাজ্যগুলির তরফে তুলে ধরা হয়েছে করোনা এবং ভোটজনিত সমস্যাকে৷ নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক মন্ত্রকের এক আধিকারিকের কথায়, ‘অনেক রাজ্যই করোনা পরবর্তী সমস্যার কথা বলেছে৷ অনেকের অভিযোগ, অন্য প্রকল্প বাবদ কেন্দ্রের কাছে পাওনা টাকা হাতে না পাওয়ায় এই প্রকল্পের কাজ নিয়েও এগোনো কঠিন হয়ে যাচ্ছে৷ কয়েকটি রাজ্য আবার তাদের ভোটের কথা বলেছে৷’ এও জানা গিয়েছে, কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যগুলিকে বুঝিয়ে বলার চেষ্টা করছে, এও বোঝানো হচ্ছে, তাদের প্রত্যেকের সক্রিয় সহায়তা ছাড়া গ্রামে গ্রামে পানীয় জল পাঠানোর এই প্রকল্পের কাজ শেষ করা অসম্ভব। রাজ্যগুলি এই আবেদনে সাড়া দেবে, বলে আশাবাদী কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক মহলের একাংশ।
আরও পড়ুন : অসমের সরকারি স্কুলে অন্তঃসত্ত্বা শিক্ষিকাকে মারধর