হরিশ্চন্দ্রপুর: প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে হরিশ্চন্দ্রপুর এলাকার দুই দুঃস্থ দৌড়বিদ ভাইয়ের কাছ থেকে লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠল স্থানীয় এক তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে। ঘটনাকে ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে হরিশ্চন্দ্রপুর এলাকাজুড়ে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এলাকার হাইস্কুল পাড়ার বাসিন্দা কৃষ্ণ ও বিষ্ণু মহলদার। এলাকায় দৌড়বিদ হিসেবে যথেষ্ট সুনাম কুড়িয়েছে দুই ভাই। তাঁরা ব্লক, জেলা এবং রাজ্যস্তরে বিভিন্ন ম্যারাথন দৌড় প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে কৃতিত্ব অর্জন করেছেন বহুবার। তাঁদের মাটির ঘরের দেওয়ালে সাজানো রয়েছে প্রচুর ট্রফি, মেডেল, সার্টিফিকেট। ক্রীড়াজগতে সাফল্য পেলেও বিভিন্ন মহল থেকে তাঁদের চাকরির প্রতিশ্রুতি মিলেছিল। কিন্তু প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন হয়নি। তাই বাধ্য হয়ে চাকরির আশায় ওই দুই যুবক শেষ সম্বল জমি বিক্রি করে নগদ ছয় লক্ষাধিক টাকা তুলে দেন এলাকারই দুই মহিলা তৃণমূল কর্মী নিভা মোহরি এবং উৎপলা পাসওয়ানের কাছে। অভিযোগ, হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এলাকার ডুমুরিয়া গ্রামের প্রভাবশালী তৃণমূলের নেতা তথা প্রাক্তন জেলা সাধারণ সম্পাদক তৈমুর রহমানের ইশারাতেই এই টাকা আদায় করা হয়েছিল। কিন্তু টাকা দেওয়া দীর্ঘদিন হয়ে গেলেও এখনও মেলেনি চাকরি। উলটে টাকা ফেরত চাইতে গেলে হুমকিও দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। যদিও সালিশি সভার পর কিছু টাকা ফেরত দেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এদিকে, সমস্ত অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন তৃণমূল নেতা তৈমুর রহমান। পাশাপাশি, তৃণমূলের দুই মহিলা কর্মী সংবাদমাধ্যমের কাছে কোনও প্রতিক্রিয়া দিতে চাননি।
তৃণমূল নেতা তৈমুর রহমানের দাবি, ‘সামনে ভোট। আমার ভাবমূর্তি কালিমালিপ্ত করার জন্য এ ধরনের চক্রান্ত করছেন এলাকার বিজেপির নেতারা। আমি ওই দুই ভাইকে চিনি না। আর ওদের কাছ থেকে কোনও টাকাও নিইনি।’ শাসকদলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ চৌধুরী বলেন, ‘জেলায় কিছু লোক দলের নাম ভাঙিয়ে নোংরা কাজ করে বেড়াচ্ছে। এতে দলের বদনাম হচ্ছে। দল এ ধরনের দুর্নীতি বরদাস্ত করবে না। আইন আইনের পথে চলবে। আমরা প্রশাসনকে অনুরোধ করব এর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে।’
বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক কিষান কেডিয়া বলেন, ‘লজ্জাজনক বিষয় যে, দুই খেলোয়াড়ের কাছ থেকে এভাবে চাকরি দেওয়ার নাম করে টাকা তুলে নিচ্ছেন এলাকার তৃণমূল নেতা। রাজ্যজুড়ে এই কাটমানির খেলা চলছে। অবিলম্বে প্রশাসনকে কড়া হাতে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।’
আরও পড়ুন : চোরাই শাল কাঠ উদ্ধার