মহুয়া চট্টোপাধ্যায়, শিলিগুড়ি: ভেষজ গুণ দিয়েই কোনও বস্তুর উপকারিতা বা অপকারিতা নির্ধারিত হয়। আমরা এখন আধুনিক তাই নিজস্ব খাবার বা ফল বাদ দিয়ে আমরা বিদেশী খাবার বা ফলের দিকে ঝুঁকছি, এমন নয় যে তাতে খারাপ হচ্ছে কিন্তু কিছু কিছু খাবারে তো খারাপ হয়ই; সবটা জেনে বুঝেই আমাদের খাবার নির্বাচন করা উচিৎ। বাঙালি মেয়েরা টক-ঝাল-মিষ্টি খুব ভালবেসেই খান, তার মধ্যে তেঁতুল অন্যতম। তেঁতুল মাখা, চাটনি, আচার সবটাই ভালো আর এর গুণ তো আরও ভালো, আজকে জানব তেঁতুল বা যমদূতিকার গুণ ব্যবহারিক জীবনে কি প্রভাব ফেলে।
১) সর্দি উপশমকারী— কাঁচা সর্দি , হাঁচি, নাক দিয়ে কাঁচা জল পড়লে তেঁতুলের কাঁচা পাতাকে সিদ্ধ করে তার ঠাণ্ডা জল খেলে উপশম হয়।
২) রক্ত অর্শে – তেঁতুলের কাঁচা পাতা সেদ্ধ জল বা পুরনো তেঁতুল ভেজানো জল খেলেও কাজ হবে ।
৩) বসন্ত হলে – ৩ গ্রাম তেঁতুল পাতা, ৩গ্রাম হলুদের পাতা বা কাঁচা হলুদ একসঙ্গে বেটে ছেঁকে নিয়ে রোগীকে খাওয়ালে বসন্তের গুটি তাড়াতাড়ি পেকে যায় ।
৪) পুরনো আমাশায় — ৪-৫ গ্রাম তেঁতুল পাতা সিদ্ধ করে,চটকে,ছেঁকে সেই জলটা জিরে ফোড়নে সাঁতলে নিয়ে খেলে ২-৩ দিনের মধ্যেই বহুদিনের পুরনো এবং পেটে থাকা মিউকাস বা আম বেরিয়ে যায়, নতুন আমাশার ক্ষেত্রেও টোটকা চিকিৎসায় এটা ব্যবহার করা যেতে পারে।
৫) পুরনো ক্ষতে – যে ক্ষত কিছুতেই ভালো হচ্ছেনা, তেঁতুল পাতা সিদ্ধ জলে সেই জায়গা ধুয়ে দিলে তাড়াতাড়ি শুকিয়ে যাবে।
৬) মুখে ক্ষতে—পাতা-সিদ্ধ জল মুখে বেশ কিছুক্ষণ রেখে ফেলে দিতে হবে। এইভাবে ৫-১০ মিনিট করে সারাদিনে ২-৩ বার করলে উপশম হয় । তবে ক্ষত যদি আভ্যন্তরিন কোন ক্ষত হলে সেখানে অবশ্যই চিকিৎসার দরকার।
৭) হাত -পা জ্বালায় – শরৎ আর গ্রীষ্মকালে অনেক মানুষই হাত পা জ্বালার সমস্যায় ভোগেন , সেইক্ষেত্রে তেঁতুল ভেজানো জলখেলে কমে যায়, কিন্তু যাদের অম্লরোগ আছে তারা এই পদ্ধতি করবেন না।
৮) কিডনির দোষে—কিডনির দোষে হাত -পা বা মুখ ফুলোফুলো মনে হয় , এই সমস্যাতেও একটু পুরনো তেঁতুল ভেজানো জল খেলে উপশম হয়।
৯) লু লাগলে – কাঁচা তেঁতুলকে আগুনে ঝলসে তার মজ্জা দিয়ে শরবৎ বানিয়ে খেলে দারুণ উপকার। সর্দি-গর্মিতে হাত-পা অবশ হয়ে আসতে থাকলে কাঁচা তেঁতুলের বা পুরনো তেঁতুলের শরবৎ ব্যবহার করলে ঐ অসুবিধেটা চলে জায়।এতে লবণ দেবেন না ।
১০) তেঁতুল বীজের খোসা পুঁটলি করে সেঁক দিলে অর্শের যন্ত্রণায় আরাম পাওয়া যায়।
আরও পড়ুনঃ লাউ-এর নানা উপকারিতা