গ্যাস্ট্রিক ক্যানসার মানে চলতি কথায় যাকে বলে পেটের ক্যানসার। পেটের কোষগুলি অনিয়ন্ত্রিতভাবে বৃদ্ধি পেতে শুরু করলে কর্কট রোগের সম্ভাবনা দেখা যায়। ক্যান্সার সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে এবং এর প্রতিরোধ, সনাক্তকরণ এবং চিকিৎসাকে উৎসাহিত করার জন্য প্রতি বছর ৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ক্যানসার দিবস পালিত হয়। আমেরিকান ক্যান্সার সোসাইটি পাকস্থলীর ক্যান্সারের ঝুঁকি এড়াতে লোকেদের স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে।
এই ধরণের ক্যান্সার এড়াতে প্রত্যেকের রোজকার জীবনধারায় কিছু পরিবর্তন আনা প্রয়োজন। ভারতে পাকস্থলীর ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে মাত্র ২০ শতাংশেরও কম প্রাথমিক পর্যায়ে নির্ণয় করা হয়, যেখানে ৫০ শতাংশ ক্ষেত্রে রোগটি একদম অন্তিম পর্যায়ে পৌঁছালে তবে ধরা পড়ে।
পেটের ক্যান্সার ভারতে পুরুষদের মধ্যে সর্বাধিক দেখা যায়। এটি 15 থেকে 44 বছর বয়সী ভারতীয় পুরুষ ও মহিলাদের মধ্যে ক্যান্সারজনিত মৃত্যুর সবচেয়ে সাধারণ কারণ। পেটের ক্যান্সারের প্রাথমিক লক্ষণগুলির মধ্যে কিছু হল গিলতে অসুবিধা(ডিসফ্যাগিয়া), ফুলে যাওয়া বা পূর্ণ বোধ করা, পেটের অস্বস্তি, ক্রমাগত অম্বল বা বদহজম এবং ক্রমাগত বমি বমি ভাব, পেটে ব্যথা, রক্তের সাথে ক্রমাগত বমি হওয়া, কোষ্ঠকাঠিন্য বা ফোলাভাব।
এই রোগের কিছু কারণ আছে যা আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে পারি না যেমন জেনেটিক্স এবং পারিবারিক ইতিহাস। কিন্তু তার মধ্যে কিছু আছে যা আমরা অবশ্যই পরিবর্তন করতে পারি। পাকস্থলীর ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে এমন খাবার এড়িয়ে চলা প্রতিরোধের প্রথম পদক্ষেপ। তা হল
১.রেড মিট: গরুর মাংস, ভেড়ার মাংস এবং শুয়োরের মাংসকে গ্রুপ ২ এ কার্সিনোজেন হিসাবে শ্রেণীবদ্ধ করা হয়েছে যার অর্থ এটি ক্যান্সারের কারণ। রেড মিট বেশি পরিমাণে খাওয়া গ্যাস্ট্রিক ক্যান্সারের ঝুঁকি ৪৫ শতাংশ বৃদ্ধির করে।
২.স্যাচুরেটেড ফ্যাট: স্যাচুরেটেড ফ্যাট বা ট্রান্স ফ্যাটযুক্ত খাবার যেমন কেক, পেস্ট্রি, ভাজা খাবার, রেড মিট, পুডিং, প্রক্রিয়াজাত মাংস, ঘি, মাখন এবং মার্জারিন সীমিতভাবে খাওয়া উচিত।
৩.অ্যালকোহল: এটি কোষে কার্সিনোজেনের অনুপ্রবেশ বাড়ায়। অ্যালকোহল কোষের অ্যাপোপটোসিস সঞ্চালনের ক্ষমতাকেও প্রভাবিত করে যার ফলে ক্যান্সার সৃষ্টির ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। তাই অতিরিক্ত অ্যালকোহল সেবন এবং ধূমপান এড়িয়ে চলুন।
৪. তামাক: ধূমপান পাকস্থলীর ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়, বিশেষ করে খাদ্যনালীর কাছে পাকস্থলীর উপরের অংশের জন্য। যারা ধূমপান করেন তাদের মধ্যে পাকস্থলীর ক্যান্সারের হার প্রায় দ্বিগুণ।